কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পর ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পারকি সৈকত। চট্টগ্রাম শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত এ সৈকত ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। স্থানীয়রা সৈকতের চেয়ে একে বেশি চেনে ঝাউবাগান হিসেবে; অর্থাৎ এখানে সৈকত তো আছেই, আছে বিশাল ঝাউবাগান। সঙ্গে আছে সমুদ্রের বিস্তৃত জলরাশি।
পারকি সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার পথে দেখা মিলবে ছোট ছোট পাহাড়ের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা পথ আর কেইপিজেডের বিশাল সব কারখানার। সৈকতে ঢোকার পথে সরু রাস্তার দুই পাশে আছে সারি সারি গাছ, সবুজ প্রান্তর আর মাছের ঘের। ঝাউবন ঘেঁষে উত্তর দিক বরাবর হেঁটে গেলে দেখা যাবে বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর মোহনা। সৈকতে পর্যটকদের জন্য নির্মিত হচ্ছে সরকারি পর্যটন কমপ্লেক্স।
সমুদ্রসৈকতের সঙ্গে ঝাউবনের ছায়াতলে গড়ে উঠেছে খাবারেরসহ অনেক দোকানপাট। সঙ্গে জোরদার করা হয়েছে কর্ণফুলী থানা-পুলিশের নিরাপত্তাব্যবস্থা।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল কিংবা হজরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে কর্ণফুলী নদী পেরোলেই পারকি। চট্টগ্রাম শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র এক ঘণ্টার।
দর্শনীয় জায়গা
সৈকত ছাড়াও পারকির আশপাশে আছে হজরত শাহ মোহছেন আউলিয়া (রহ.), হজরত আলী রজা প্রকাশ কানু শাহ (রহ.), মিয়া হাজি দৌলত (রহ.)-এর মাজারসহ বেশ কয়েকটি মাজার। আছে চট্টগ্রামের সুন্দরবনখ্যাত গহিরা প্যারাবন, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, দেয়াং পাহাড়; আছে আকবরি, ছুরুত বিবি, ধলা বিবি ও মনু মিয়ার মসজিদ, মনু মিয়া ও চাঁদ সওদাগরের দিঘি। এ ছাড়া আছে যোগেশ চন্দ্র রায়, প্রসন্ন কুমার ও পরৈকোড়া ও বড় উঠান জমিদারবাড়ি, মেন্না গার্ডেন, সাঙ্গু নদীর মোহনা, রাবার ড্যাম, বন্দর বধ্যভূমি কমপ্লেক্স, আখতারুজ্জামান চৌধুরী স্মৃতি পার্ক, পুরোনো আবহাওয়া অফিস, বিমানবাহিনীর রাডার স্টেশন, বাতিঘর, ভূতের বাড়ি হিলটপ পার্ক, জমিদারবাড়ি, জুলধা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু পার্ক, বড় উঠান এলিফ্যান্ট পার্ক, চর পাথরঘাটা। এ ছাড়া আছে বেশ কিছু রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল এবং ভারী কারখানা।
কীভাবে যাবেন
চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো টার্মিনাল থেকে বাসে অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পারকি বিচে যাওয়া যায়।
আবাসনের সুবিধা
পর্যটকদের জন্য পারকিতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠেছে মোটেল। সেগুলোতে রাতে থাকার ব্যবস্থা আছে।
খাওয়াদাওয়া
ছোট-বড় অনেক রেস্টুরেন্ট আছে সমুদ্রসৈকত লাগোয়া। সেখানে আছে সামুদ্রিক মাছসহ নানা ধরনের খাবারের সুব্যবস্থা। রাতে বারবিকিউ করার ব্যবস্থাও আছে। তবে খাবার কিনতে হবে দরদাম করে।
বোট ভ্রমণ
এখানে বোটে জনপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা ভাড়ায় ভ্রমণ করা যায়। ঝাউবন ঘেঁষে উত্তর দিকে বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর মোহনা। এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখা যায়।
সতর্কতা