1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন

জুয়ার দেশ ম্যাকাও ভ্রমণ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪

macau সিটি আর taipa আইল্যান্ড,এই দুটি ছোট্ট শহর নিয়ে গঠিত এশিয়ার লাস ভেগাস নামে পরিচিত ম্যাকাও এর। ম্যাকাও এর মোট আয়তন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বৃহত্তর মিরপুরের চেয়েও কম হবে।সবমিলিয়ে এদেশের আয়তন মাত্র ৩৩ বর্গকিলোমিটার এর মত হবে,তার মধ্যে অর্ধেকটাই আবার জলসীমান্ত।তবে ছোট্ট এই দেশটির জনসংখ্যা ততটা কমও নয় কিন্ত,ম্যাকাও এ বর্তমানে প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস করে।অর্থনৈতিক দিক থেকে অধিক সমৃদ্ধ এই অঞ্চলটি মূলত ক্যাসিনোর জন্য খুবই বিখ্যাত।ক্যাসিনোর জন্য বিখ্যাত হলেও আমি কিন্তু গিয়েছিলাম দালানকোঠা আর সি ব্রিজ দেখার জন্য!তবে এর জন্য আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় ৫ সপ্তাহের মতন!দেশের বাইরে থাকা সত্ত্বেও ম্যাকাও এবং হংকং এর ভিসা ম্যানেজ করতে আমাকে প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে।

অনেকটা শুনেছিলাম আর বহু ব্লগেও পড়েছিলাম ম্যাকাও নাকি খুবই এক্সপেন্সিভ শহর,জুয়ার শহর তাই এক্সপেন্সিভ হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবীক ব্যাপার ও বটে।তবে আমার এই ট্যুরে খরচ হয়েছিল মাত্র ৩০ ডলার।আসলেও সত্যি বলছি,মাত্র ৩০ ডলার খরচ করেই প্রায় সম্পূর্ণ ম্যাকাও শহরের এর স্বাদ নিয়ে ফেলেছি আমি।আমি অবশ্য ছিলামই একদিন,কারন হাতে খুব কম সময় নিয়ে এসেছিলাম।ম্যাকাও থেকে আমার আবার হংকং যাওয়ার ও প্লান ছিল।হাতে সময় খুব কম থাকার পরেও ম্যাকাও শহরের অলিগলি ঘুরে বেড়িয়েছি নিজের মনমতো,হাটতে হাটতে যেখানে ইচ্ছে হয়েছে সেখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছি।

অবজার্ভ করার চেষ্টা করেছি এই ছোট্ট দেশের মানুষদের চাল-চলন,কথা-বার্তা।হাটতে যদি খুব একটা সমস্যা না হয় তাহলে সম্পূর্ণ ম্যাকাও হেটে হেটেই উপভোগ করা যাবে,যেটা আমি নিজেও করেছি।তবে এত হাটতে হাটতে যে পায়ের রফাদফা ছুটে যাবে তা সকলেরই জানা!আমি ম্যাকাও সিটির “আ-মা টেম্পল” থেকে হাটা শুরু করে চক্রাবৃত্তি কেটে আবার “আ-মা টেম্পলে এসে হাটা বন্ধ করেছিলাম!এই চক্করটি কাটতে আমার সময় লেগেছিল প্রায় ১২ ঘণ্টার মত।নরমালি আমি বাজেট ট্রাভেলার হলেও এত টাকা বাচানো আসলে আমার মূল উদ্দেশ্য ছিলনা,বেশকিছু ব্লগে পড়েছিলাম ম্যাকাও এর সকল টুরিস্ট স্পট ওয়াকিং ডিস্টেন্সে আর আমি শুধুমাত্র এই এডভান্টেজটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিলাম মাত্র।

আরেকটা কথা হচ্ছে আমার হাতে সময় ছিল কম,তাই কোথাও যেতে বাসে চড়ার জন্য রুট খুঁজতে যেয়ে সময় নষ্ট করতে চাইনি।এরমধ্যে আবার শুনলাম যে ওদের বাসে চড়লে নাকি নির্দিষ্ট ভাড়াই দিতে হয়,ভাঙ্গতি না থাকলে তা নাকি ফেরত পাবার আশা করা যায় না।এখানে আসলে দালানকোঠা ছাড়া দেখার মতন তেমন আর কিছুই নেই!ম্যাকাও এর দালানকোঠা অনেকটা মাল্টি কালচারাল। এখানে আমাদের পুড়ান ঢাকার চিপাচাপা গল্লি,ঘিঞ্জি বাড়িঘর,ইউরোপিয়ান স্টাইলের চার্চ,প্রাচীন স্থাপনা,লাস ভেগাসের মত পাঁচতারকা হোটেল আর ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন স্টাইলের দালানকোঠা দেখতে পাবেন আপনি।সে যাজ্ঞে আগে ম্যাকাও এর ব্যাপারটা ক্লিয়ার করে ফেলি।

ম্যাকাও আসলে কোন স্বাধীন রাষ্ট্র নয়,এটা চায়নার একটি শায়ত্বশাসিত অঞ্চল মাত্র।তবে চায়নার অন্যান্য শায়ত্বশাসিত অঞ্চল যেমন হংকং/তাইওয়ানের মত ম্যাকাও ও এক দেশ দুই নিতীতে চলে।তবে আক্ষরিক অর্থে ম্যাকাও কে যদি দেশ হিসেবে পরিচিতি দেয়া যায় খুব একটা ভুল হবেনা।ম্যাকাও এর ইতিহাস আবার খুবই পুরানো আর বেশ জটিল।বহু ক্ষমতাশীল হাত বদলের পর শেষপর্যন্ত পর্তুগিজদের কাছ থেকে চায়নার শায়ত্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে ম্যাকাও প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে।পর্তুগিজরা ম্যাকাও শাসন করেছিল প্রায় ৪০০ বছরের মতন।তবে পর্তুগিজরা চলে গেলেও এখানে এখনো পর্তুগিজদের ছাপ পাওয়া যায়এদের প্রতিটা জায়গায় ক্যান্টনিজ ভাষার পাশাপাশি এখনো পর্তুগিজ ভাষার নির্দেশনা বিদ্যমান!

আর এখানে অবস্থিত প্রায় অনেক দালানকোঠাই সেই প্রাচীন আমলে পরতুগিজদের হাতে তৈরী করা।আমি ম্যাকাও ঘুরেছি গুগল ম্যাপ দেখে দেখে,হেটেছি আর গুগল ম্যাপ বড় করে দেখেছি আশেপাশে কোন ক্যামেরার চিন্হ পাওয়া যায় কিনা,এটা গুগলের বেশ দারুণ একটা ফিচার।এদের বেশীর ভাগ ট্যুরিষ্ট স্পটে প্রবেশ করতে পয়সা খরচ করতে হয়না।তবে বাসে চড়লে ডাইরেক্ট ভাড়াই দিতে হবে,প্রতি রাইডের ভাড়া ২-৬ পাতাকা পরে!কিন্তু হোটেলে থাকা একটু এক্সপেন্সিভ,একটু বলতে খুবই এক্সপেন্সিভ।কিন্তু আমিতো আর হোটেলে থাকিনি,তাই সেই খরচটা আমার পকেট থেকে বের হয়নি।আমার ঐ ৩০ ডলার খরচ হয়েছিল শুধু খাবারের পিছনে,আর কিছু টাকা খরচ হয়েছিল বাসের পিছনে।

ম্যাকাও এর সব জায়গায় ম্যাকডোনাল্ড আর 7 eleven দেখতে পাবেন,তাই খাবার-দাবার নিয়ে অহেতুক চিন্তা করা লাগবেনা।তবে আমি সামনে যা পেয়েছি তাই খেয়েছি আমার খাবারে ঠিক তেমন একটা সমস্যা হয়না,তবে হ্যা হালাল-হারাম বেছে খাওয়ার চেষ্টা করি সবসময়।কোরিয়া থেকে আসার সময় ইন্টারনেটের হিসেব করে দেখেছিলাম আমার রোমিং এর খরচ ম্যাকাও এ সিম কেনার চেয়ে কম হবে তাই সেখানে আর সিমকার্ড কেনা হয়নি!তবে আপনি ম্যাকাওর বিভিন্ন স্থানে ফ্রি ওয়াইফাই পাবেন,তাই আমার মতে ইন্টারনেটের পিছনে বাড়তি টাকা খরচ না করাই ভাল।ম্যাকাও-হংকং এর এই পাঁচদিনের ট্যুরে আমি ২ জিবি ডাটা ইউজ করেছিলাম মাত্র!

ম্যাকাও এ সবচেয়ে বাজে ব্যাপার লেগেছে যে এরা টুরিস্ট স্পটগুলিতে ওপেনপ্লেসে স্মোকিং জোন বানিয়ে রেখেছে!এছাড়া পুরো শহর মোটামুটি ভালই পয়-পরিষ্কার ছিল।সে যাইহোক সারাদিন হেটেহেটে ঘুরে বেরানোর পর রাত ১১টার দিকে ম্যাকাও থেকে বাসে চড়ে হংকং এ চলে যাই।

ম্যাকাও এ গেলে কোন-কোন ট্যুরিষ্ট স্পটগুলি আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন তার ছোট্ট একটা বিবরণ নিচে দেয়ার চেষ্টা করেছি,আমি এসকল স্থানগুলি ঘুরে বেড়িয়েছিলাম ম্যাকাও শহরে:

1.MACAU TOWER

৬৩ তলা বিশিষ্ট এই বিল্ডিংটি ম্যাকাও এর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং যা কিনা ম্যাকাও টাওয়ার নামে পরিচিত।ম্যাকাও এর প্রায় অনেক জায়গা থেকে এই টাওয়ারটি দেখা যায়।টাওয়ারটি টেলি কমিউনিকেশন এবং ব্রডকাস্টিং এর জন্য ব্যবহৃত হলেও।দর্শনার্থীদের জন্য এর অবজারভেশন ডেক খোলা আছে।ডেক থেকে ম্যাকাও এর ভিউ দেখা ছাড়াও বাঞ্জি জাম্পিং,স্কাই ওয়াক এর অভিজ্ঞতাও নেয়া যাবে।বলে রাখা ভাল যে ম্যাকাও টাওয়ারের এই বাঞ্জি জাম্পিং পৃথিবীর দ্বিতীয় উঁচু বাঞ্জি জাম্পিং স্পট।যার উচ্চতা ৭৬৪ ফিট,আর এর খরচের পরিমাণ ও টাওয়ার এর সমান উঁচু।

খরচ:শপিং সেন্টার আর সিনেমহ আর রেস্টুরেন্টের জন্য কোন খরচ নেই!লঞ্চ এবং ডেকে প্রবেশের জন্য খরচ হবে ১৪৫ পাতাকা।অন্যান্য খরচের জন্য ছবিটি দেখুন:

ওয়েবসাইট:https://www.macautower.com.mo/tower-adventure/tower-adventure/bungy-jump/

কন্টাক্ট নাম্বার:(853) 8988 8656বাঞ্জি জাম্প/স্কাই জাম্পি এর জন্য অগ্রিম বুকিং করে যাওয়া ভাল।

ঠিকানা:ছোট্ট দেশ,তাই ঠিকানা লাগবেনা।ম্যাকাও টাওয়ার লিখে গুগলে সার্চ করে হাটা শুরু করবেন!

যেভাবে যাবেন ম্যাকাও টাওয়ার:যেকোন স্থান থেকে 9A,18,21,23,32,26 নাম্বার বাসে চড়লে আপনাকে টাওয়ারের নিচে নামিয়ে দিবে(উল্টো পাশে উইঠেন না আবার)

2.SENADO SQUARE

ম্যাকাও এর প্রধান ট্যুরিষ্ট স্পটগুলির একটি হচ্ছে এই সেনাদো চত্তর।এই চত্তরের ইতিহাস অনেকটাই পুরানো,আর এখানে বিদ্যমান প্রায় ভবনাদির বয়ষ ও অনেক।বাহারি রঙ্গের আদী যুগের এইসকল ভবনাদি দেখার জন্যই বিশ্বের সকল প্রান্ত থেকে মানুষজন এখানে এসে থাকে।ভবনের আশপাশে চিপা-চাপা গলি,রঙ-বেরঙ্গের ভবন,গাছপালা আর একটু পর পর চার্চের দেখা পাওয়া মনে হবে যেন আপনি ইউরোপের কোন শহরে হেটে বেড়াচ্ছেন।ও আচ্ছা এখানে কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্ট্রিট মাকেট বসে,চাইলে হালকা কেনাকাটাও সেরে নিতে পারেন।সেনিদা স্কয়ারের আশেপাশে বেশকিছু চার্চ পাবেন,যদি পুরাতন বিল্ডিং এর প্রতি মোহ থাকে তাহলে দেখে আসতে ভুইলেন না।খরচ:খরচ বলতে খাবার-দাবার আর কেনাকাটায় যা হবে তাই,চত্তর বা আশেপাশের কোন বিল্ডিং এ প্রবেশের জন্য আপনাকে পয়সা খরচ করতে হবেনা।

সময়সূচী:চত্তর তো ২৪ ঘণ্টাই খোলা পাবেন,আর রাতের বেলাতেও আলো পাবেন।তবে সকল দোকান-পাট রাত ৯ টার আগেই বন্ধ করে ফেলে।

যাতায়াত ব্যবস্থা:3, 3X, 4,6A,8A,18A,19,26A,33 or N1A তে চড়ে Almeida Ribeiro স্টপেজে নামার পর ১ মিনিট হাটতে হবে।

3. ST. PAUL’S CHURCH RUINS

সেনিদা স্কয়ার থেকে হাটতে হাটতে আশপাশের বিল্ডিং দেখবেন আর পৌছে যাবেন এইখানে।ম্যাকাও ট্যুরিষ্ট স্পট দিয়ে গুগলে সার্চ করলেই এই জায়গাটার ভুরি ভুরি ছবি পাবেন।এখানে মানুষজন আসেই ইন্সটাগ্রামের ছবি তোলার জন্য।২৬ মিটার লম্বা দরজা আকৃতির বর্তমান এই দেয়ালটি ১৬০০ শতাব্দীর দিকে তৈরী করা চার্চের অবশিষ্টাংশ,এটি পুনরায় সংস্কার করা হয় ১৯৯৫ সালে।বাই দ্যা ওয়ে এই স্থানটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের একটি অংশ।এর আশেপাশের সকল ভবনাদিও মাল্টি কালচারাল।

যাতায়াত:senado square থেকে হেটে হেটে চলে আসবেন এখানে।

4. MONTE FORTRESS

প্রাগঐতিহাসীক এই ফরট্রেসটি বর্তমানে এই ম্যাকাও মিউজিয়াম এর অর্ন্তভুক্ত।এর আগে এই স্থানটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হত,এর ও অনেক আগে এই স্থানটি মিলিটারি জোন হিসেবে সংরক্ষিত ছিল।CHURCH RUINS থেকে মাথা উঁচু করলেই এই ফরট্রেসটি দেখতে পাওয়া যায়।মাত্র ৫২ মিটার উঁচু এই ফরট্রেসটি থেকে ব্যস্ত ম্যাকাও শহরের বহু রুপ একসঙ্গে দেখা যায়।

যাতায়াত:church ruins এর পাশেই ফরট্রেসে ওঠার জন্য সিঁড়ি পাবেন।

সময়সূচী:প্রতিদিন সকাল ৭ থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।আর হ্যা ফরট্রেসে প্রবেশ মূল্য সম্পূর্ণ ফ্রি।

5. MACAU MUSEUM

মোন্টে ফরট্রেসের ছাদেই ছোট্ট মিউজিয়াম টির অবস্থান।মাত্র ১৫ পাতাকা প্রবেশ ফি দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত এখানে ঢোকা যাবে।6. MACAU GONDOLA RIDEVenetian Hotel এর ঠিক মধ্যেই রয়েছে একটি কৃত্তিম নীলাভ পুল রয়েছে,যেখানে নৌকায় চড়ে বিলাসবহুল হোটেলের কারুকলা দেখতে পারবেন।অনেকটা ইতালির ভেনিস শহরের আদলে তৈরী করা হয়েছে সম্পূর্ণ জায়গাটি।এই রাইডের জন্য আপনাকে দিতে হবে ২৯-১১৯ পাতাকা।আমি অবশ্য নৌকায় চড়িনি।সময়সূচী:সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টার আগে গেলেই এই নৌকায় চড়তে পারবেন।

অফিসিয়াল ওয়েবসাইট:https://www.venetianmacao.com/hotel/amenities/gondola-rides.html

7. MACAU EIFFEL TOWER

ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারের সাদৃশ্য এই টাওয়ারটি রাতের বেলা বাহারী রঙ্গের আলোতে চারপাশের এলাকা আলোকিত করে রাখে।সম্পূর্ণ এড়িয়াটাই রঙচঙ্গা বিলাসবহুল হোটেল,স্কাইস্কিপার বিল্ডিং আর ক্যাসিনো হোটেল দিয়ে পরিপূর্ণ।আমি এখানে গিয়েছিলাম সন্ধ্যের সময়।রাস্তার চারপাশে সারিবদ্ধ পাম গাছ,কৃত্তিম পাণির ফোয়ারা সম্পূর্ণ এড়িয়াটাকে অনন্য এক রুপে সাজিয়ে দিয়েছে।

8.A-ma tample

১৪ শতাব্দিতে তৈরীকৃত এই মন্দিরটি ম্যাকাও এর সবচেয়ে পুরাতন মন্দির।এখানে আসলে দেখার মত তেমন কিছুই নেই,তবে ইতিহাস যদি পছন্দের বিষয় হয় তাহলে এখান থেকে ঘুরে যেতে পারেন।এখানে প্রবেশের জন্য কোন টাকা-পয়সা লাগেনা।মন্দিরের উপরে ছোট্ট একটা টিলা আছে যেখানে বেশকিছু ছোট্ট-ছোট্ট গুহায় দেব-দেবীর মূর্তী দেখতে পাবেন!মন্দিরের নিচে বড় বড় ঝাক দেয়া কিছু গাছ দেখতে পাবেন,গাছগুলির সামনে দিয়ে একমুখী একটা ছোট গলি আছে সেই গলি দিয়ে ৫ মিনিট হেটে গেলেই বেশকিছু পুরাতন চার্চ পাবেন।সময় হলে চার্চগুলি ঘুরে যেতে পারেন।

9.এছাড়া আশেপাশে museu maritimo নামে ছোট্ট একটা মিউজিয়াম আছে চাইলে সেখান থেকেও একটু ঢু মেরে যেতে পারেন।মিউজিয়ামটি মূলত নৌকার যেখানে চায়নিজ,পরতুগিজ সহ বিভিন্ন সম্রাজ্ঞের ব্যবহৃত নৌকা আর নৌযান সম্পর্কিত যাবতীয় সকল কিছুর তথ্য,মডেল সংরক্ষিত রয়েছে।

প্রবেশ ফি ১০ পাতাকা।

যাতায়াত:6,8, 9 or 28 B নাম্বারের যেকোন একটি বাসে চড়ার পর ড্রাইভার বললেই A-ma টেম্পলের সামনে নামিয়ে দিবে।

10.Grand Lisboa

ম্যাকাও ট্যুরিষ্ট স্পট লিখে গুগলে সার্চ করলে grand lisboa এর ছবিটাও প্রথম সাড়িতেই পাবেন।গোল্ডেন কালারের এই বিল্ডিংটি একটি ক্যাসিনো হোটেল,তবে হোটেলটির বাইরের কারুকাজ এতটাই আকর্শনীয় যে,ঘুরতে যাওয়া সকলেই এই বিল্ডিংটির সামনে গিয়ে একটা হলেও ছবি তুলে আসে।

11.dca dos pescadores

ম্যাকাও ফেরি টার্মিনালের পাশেই এই স্থানটির অবস্থান,আমি হাটতে হাটতে যখন এখানে পৌছাই তখন বৃষ্টি হচ্ছিল।তবুও বৃষ্টিতে ভিজেই আশপাশটা ভালই ঘুরে দেখেছি।জায়গাটিতে তেমন কিছুই নেই তবে আকা-বাকা এই দেয়ালটিতে রাজকীয় একটা ভাব-সাব আছে।

১২.MACAU SHOWS

সন্ধ্যার পরে আপনি ম্যাকাও এর বড় বড় হোটেলে প্রবেশ করলেই ফ্রিতে অথবা সামান্য কিছু ফি দিয়ে ম্যাকাও সো উপভোগ করতে পারবেন।এই সো গুলি মূলত সার্কাস খেলার মত।ক্যাসিনো খেলতে আসা কাস্টমারদের বিনোদন দেয়ার জন্য মূলত এই সোগুলির ব্যবস্থা রাখে হোটেল কতৃপক্ষ।তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় সো হচ্ছেThe House of Dancing Water।এই সোটি গোলাকার একটি হলরুমে হয়ে থাকে যার মদ্ধ্যেখানে রয়েছে পানী,আর এই পাণির উপরে দর্শকদের জন্য সার্কাস দেখায় সার্কাস শিল্পীরা।তবে এই হোটেলের সো একটু এক্সপেন্সিভ।প্রায় ৪৮০-১৫০০ পাতাকা খরচ হবে এই সো দেখতে চাইলে।বিস্তারিত জানার জন্য ওদের অফিসিয়াল

ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন:https://www.thehouseofdancingwater.com/en/the-show

১৩.TAIPA VILLAGE

বাহারী রঙ্গের ট্রেডিশনাল ম্যাকাওনিজ ঘড়-বাড়ি,স্ট্রিট সপ আর আদি যুগের তৈরী বেশকিছু চার্চ,টেম্পল নিয়েই তাইপা ভিলেজের অবস্থান।ট্রেডিশনাল ঘর-বাড়ি হলেও সবকিছুই নতুন করে সাজানো।অনেকটা ইউরোপিয়ান স্টাইলের মত দেখায়,আগেও বলেছিলাম সম্পূর্ণ ম্যাকাও মাল্টিকালচারাল একট দেশ তবে পরতুগিজদের রেখে যাওয়া কালচার এখনো এদের মদ্ধ্যে খুব বেশী দেখা যায়।আর একটা কথা বেশীরভাগ খাবারের দোকানে আপনি ইতালিয়ান মেন্যু পাবেন।আমি ঢুকে চেক করেছিলাম,খাইনি কিছুই।আশা করি আমার এই অভিজ্ঞতা আপনার ম্যাকাও ভ্রমণকে একটু হলেও সহজ করে দিবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com