1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

ব্যাংকক ট্যুর স্পট; কোথায় যাবেন কি দেখবেন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২০ জুন, ২০২৪

যারা ইতিমধ্যে থাইল্যান্ডের রাজধানী শহর ব্যাংকক ট্যুর করেছেন, তারা জানেন কতটা ব্যস্ত এই শহর। কয়েকদিন কাটালে আপনার কাছে মনে হতেই পারে যেন, এখানকার মানুষ বিশ্রাম নেয়ার সময় পায় না।

চাও ফ্রায়া নদীর তীরে গড়ে ওঠা শহরটিতে রয়েছে কয়েকশ বছরের ইতিহাস আর ঐতিহ্য। এখানে রয়েছে অসংখ্য স্মৃতিবিজড়িত যাদুঘর, স্থাপত্য, দৃষ্টিনন্দন আর্ট গ্যালারি; যা দেখতে ভিড় করে বিশ্বের নানা দেশ থেকে আসা অসংখ্য দর্শণার্থী।

যাতায়াত ব্যবস্থাও বেশ সুবিধাজনক। স্কাই ট্রেন, পাতাল ট্রেন, বাস, স্পিড বোট, প্যাডেল বোট, ট্যাক্সি সবই পেয়ে যাবেন ঘোরাঘুরির জন্য। আর বিনোদন? দিনরাত ব্যস্ততম এ শহরে থাকে কোলাহল আর উৎসবের আমেজ। বলতে গেলে ২৪ ঘণ্টাই বিনোদন।

আবহাওয়া
থাইল্যান্ডে মূলত উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ তিন ধরনের অঞ্চল অনুযায়ী আবহাওয়া পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বছরের একই সময়ে তিন ধরনের অঞ্চলে তিন রকম আবহাওয়া বিরাজ করে। ব্যাংককের অবস্থান মধ্যাঞ্চলে। ব্যাংককে মোটামুটি সারা বছরই উষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়া বিরাজ করে।

তবে ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মাঝে মাঝে মার্চের শুরুর দিক পর্যন্ত আবহাওয়া কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। মাথায় রাখবেন, এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যকার সময় ব্যাংককে গেলে প্রচণ্ড গরম ও বাতাসের আদ্রতা অনেক বেশি থাকে। অনেকে বাধ্য হয়েই ছুটিছাটা ম্যানেজ করতে না পেরে এই সিজনেই যান। এতে খরচও কিছুটা কম হয়।

ব্যাংকক ট্যুর করতে গেলে যে যে জায়গায় অবশ্যই যাওয়ার চেষ্টা করবেন-

মাদাম তুসো যাদুঘর 
বিশ্বের খ্যাতিসম্পন্ন সব ব্যক্তিদের সরাসরি দেখার সৌভাগ্য না হলেও তাদের অনুরূপ প্রতিকৃতি দেখার সুযোগ আছে এই যাদুঘরে। মোমের তৈরি মূর্তিগুলো এতোটাই নিখুঁত যে, প্রথম দর্শনে যে কেউই হতভম্ব হয়ে যেতে পারেন। বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন থেকে শুরু করে রানী এলিজাবেথ, বিশ্বখ্যাত অভিনেতা টম ক্রুজ ছাড়াও বিভিন্ন জনপ্রিয় তারকাদের প্রতিকৃতির সাথে নিশ্চিন্তে যেকোনো পোজে ক্যামেরবন্দি করতে পারবেন নিজেকে।

ফ্লোটিং মার্কেট 
আর কোথাও না গেলেও ফ্লোটিং বা ভাসমান মার্কেটে একবার হলেও যাবেন। বেশ কয়েকটি নামকরা ফ্লোটিং মার্কেট পাবেন এখানে। ডিঙি নৌকায় চড়ে তাজা ফল সবজি থেকে শুরু করে হাতের কাজের নজরকাড়া বস্তু সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসে বিক্রেতারা। প্রাকৃতিক পরিবেশে নৌকায় ভাসতে ভাসতে কেনাকাটা করার অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। শুধু তাই নয় বিকেলের দিকে এখানে হাতি কিংবা কুমির নিয়ে খেলা, ঐতিহ্যবাহী নাচ, তলোয়ার যুদ্ধ এমনকি কিক ফাইটিং দেখানো হয়ে থাকে।

ওয়াত ফো 
যারা প্রথমবারের মতো ব্যাংকক যাবেন তারা প্রাচীন এই বৌদ্ধ মন্দির না ঘুরে আসবেন না। বুদ্ধার ছবির সর্বোচ্চ সংগ্রহশালা হলো এই মন্দির। এখানে দেখা মিলবে গৌতম বুদ্ধের ১৫০ ফুট লম্বা আর ৪০ ফুট উঁচু সোনার পাতে মোড়ানো এবং পা জোড়া মুক্তা দিয়ে তৈরি একটি শায়িত মূর্তি।

গ্র্যান্ড প্যালেস 
এই আকর্ষণীয় রাজপ্রাসাদটির পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করার শ্রেষ্ঠ উপায় হলো চাও ফ্রায়া নদীর পাশ ঘেষে ওয়াটার ট্যাক্সি বা নৌকায় চড়ে। গ্র্যান্ড প্যালেসেরই অংশবিশেষ ওয়াত ফ্রা কায়েও (Wat Phra Kaeo) বা এমেরাল্ড বৌদ্ধ মন্দির (Emerald Buddha); যা ব্যাংককের অন্যতম পবিত্র স্থান। এখানে দুই ফুট উচ্চতার সবুজ রঙের বুদ্ধের মূর্তি আছে। একটি বিষয় না বললেই নয়, সেটা হলো এই মূর্তিটিকে শীতকালে বিশেষ একটি শাল, গ্রীষ্মকালে মুকুট ও বিশেষ রত্ন এবং বর্ষাকালে স্বর্ণমণ্ডিত পোশাক ও পাগড়ি দিয়ে সাজানো হয়। এই জায়গায় দেখার মতো বেশ কয়েকটি প্যাগোডাও রয়েছে।

ওয়াত অরুন
যদিও এই মন্দিরটি ভোরের মন্দির হিসেবে পরিচিত, তবে এর আসল সৌন্দর্য সূর্যোদ্বয় এবং সূর্যাস্ত দুই সময়ই ফুটে ওঠে। এর আশপাশের পরিবেশ বেশ শান্ত, কোলাহলমুক্ত। বিশেষ করে থোনবুড়ি নদীর সামনে থেকে এর দৃশ্য তুলনাহীন।

সাফারি ওয়ার্ল্ড
দুটি অংশে বিভক্ত এটি। একটি সাফারি পার্ক, যেখানে দেখা মিলবে বিরল প্রজাতির অনেক প্রাণীর। পশুপাখি ভালোবাসলে কিংবা তাদের লাইভ কর্মকাণ্ড দেখতে চাইলে সাফারি পার্কে বেড়াতে যাবেন। আরেকটি অংশ হলো মেরিন পার্ক। সমুদ্র তলদেশের অজানা প্রাণীদের সম্পর্কে জানতে পারবেন। হাতে সময় থাকলে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে পারেন সাফারি ওয়ার্ল্ডে।

ড্রিম ওয়ার্ল্ড
এই বিনোদন পার্ক অনেকটা ডিজনি ল্যান্ডের মতো। কিছুটা কাল্পনিক কিংবা ফেইরি টেলের থিমে গড়ে তোলা হয়েছে এখানকার দালানগুলো। এই থিম পার্কের রাইডগুলোতে কিছুটা সাহস করেই চড়তে হয়। দুঃসাহসিক রোলার কোস্টার, বাম্পার কারের মতো আরো মজার সব রাইডে চড়তে পারবেন। যেমন, ওয়াটার রাইড, হন্টেড হাউজ ইত্যাদি। বাচ্চাদের জন্যও আলাদা রাইড ও বিভিন্ন ডিজনির কালেকশন আছে।

ব্যাংকক ট্যুর; যে বিষয়গুলো জেনে রাখা ভালো:

১। যেকোনো কিছু কেনাকাটার ক্ষেত্রে দর কষাকষি করবেন। পর্যটক দেখলে দোকানিরা এমনিতেই চড়া দাম হাকায়।
২। ট্যাক্সি বা টুকটুক কোথাও থামানো অবস্থায় থাকলে সেগুলোর পরিবর্তে চলমান ট্যাক্সি থামিয়ে ভাড়া করবেন। আর ভুলেও জিজ্ঞেস করবেন না ভাড়া কত। আগে থেকেই বিশ্বস্ত কোনো গাইড বা হোটেলের কারো কাছ থেকে জেনে যাবেন।
৩। ড্রাইভার তার ট্যাক্সি বা টুকটুক আপনাকে নিয়ে কোথাও পার্ক করতে চাইলে রাজি হবেন না।
৪। স্কাইট্রেনে যাতায়াতে খরচটা কিছুটা কমাতে পারবেন। এছাড়া বোটে যাতায়াতের অভিজ্ঞতার সাথে খরচটাও কম পড়বে। আর বাইকে ঘুরলে খরচ সব থেকে কম।
৫। ব্যাংকক ট্যুর করতে যাবেন আর স্ট্রিটফুড খাবেন না, তা কি হয়? অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের স্ট্রিটফুড চেখে দেখবেন।
৬। বারগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত নিচ তলায় বসার চেষ্টা করুন। দোতলা বা ওপরের তলায় আপনাকে কেউ নিতে চাইলেও সুন্দর করে বুঝিয়ে তাকে না করে দিন। খারাপ ব্যবহার করতে যাবেন না।
৭। হাতে হিসেবের চেয়ে বাড়তি কিছু টাকা/থাই বাথ রাখুন। ডলার সেখানেই ভাঙাতে পারবেন। এতে কিছুটা লাভবানও হবেন।
৮। পিক সিজন হলে অবশ্যই কয়েক মাস আগে থেকে হোটেল বুকিং দিয়ে রাখবেন। আজকাল অবশ্য সব সিজনেই লোকজন ঘুরে বেড়ায় তাই অফ সিজনে গেলেও আগে থেকে বুকিং দেয়া ভালো। অফ সিজনে অবশ্য খরচ মোটামুটি কমে আসবে।
৯। ইংরেজি বলার অভ্যাস না থাকলে ভ্রমণের আগেই কিছু প্রচলিত বাক্য ও শব্দ নোট করে নিন; যেগুলো দেশের বাইরে কথোপকথনে প্রয়োজন হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com