তুষারাবৃত পর্বতশৃঙ্গ, চিরহরিৎ বৃক্ষের সমারোহ, খরস্রোতা পাহাড়ি নদী, সুমিষ্ট আবহাওয়া সব মিলিয়ে কাশ্মীর স্বর্গীয় সুখানুভূতি সৃষ্টির করে। প্রকৃতির নানান রূপসজ্জা, রক্ষাকর্মী হিসেবে পার্বত্য অঞ্চলের অবস্থান এই সব কিছু ছাড়া কাশ্মীর এক্কেবারে অসম্পূর্ণ ।
আচ্ছা বলুন তো, আপনি স্বর্গ বলতে কী বোঝেন? চারিদিকে রঙিন ফুলের সমাহার, মনোরম পরিবেশ, পাহাড়ঘেরা কোনও এক স্থানে দেবতাদের রাজত্ব, ইত্যাদি বিষয়বস্তুকেই স্বর্গের তাৎপর্য হিসেবে বোঝানো হয় । তাই তো? কাশ্মীরের ক্ষেত্রেও যথাযথ এই বর্ণনাগুলিই প্রতিফলিত হয়। সুসজ্জিত স্বচ্ছ ডাল লেক, নুব্রা, শায়ক, বেতাব ভ্যালির অবস্থান, রঙিন টিউলিপের সমাহার, চিত্রাকর্ষক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই মূলত কাশ্মীর ভূস্বর্গ এর আখ্যায় পরিচিতি পেয়েছে ।
১. শ্রীনগর –
কাশ্মীরের বিখ্যাত ভ্রমণস্থান গুলির মধ্যে অন্যতম হল শ্রীনগর। কাশ্মীরের সবচেয়ে পরিচিত এবং বৃহত্তম শহরটি হল শ্রীনগর । তবে এই শহরের প্রাণকেন্দ্র হল সবুজ পাহাড়ে ঘেরা স্বচ্ছ এবং সুবৃহৎ ডাল লেক। শিকারায় বোটিং করা থেকে পরিযায়ী পাখির সন্ধান পেতে আপনাকে আসতেই হবে এই শহরে । এছাড়াও কাশ্মীরের বিখ্যাত মুঘল গার্ডেন দর্শন করার জন্য এবং বোট হাউসে রাত্রিবাস করে কাশ্মীরের সংস্কৃতির সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য শ্রীনগর আদৰ্শ স্থান ।
২. সোনমার্গ
৩. গুলমার্গ
৪.পাহেলগাম
শ্রীনগর থেকে ৯৫ কিমি অদূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭৪০ কিমি উচ্চতায় অবস্থিত পাহেলগাম । ঘন সবুজ অরণ্য, প্রবহমান লেক সমৃদ্ধ স্থানের অপর নাম পাহেলগাম । শান্ত সবুজে ভরা এই স্থানটির মধ্যে রয়েছে অপার সিন্গ্ধতা । প্রকৃতির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটিয়ে আপনি মন থেকে নানা ধরণের নেতিবাচকতা থেকে মুক্ত হতে পারেন ।
৫.অনন্তনাগ
পাহাড় ঘেরা বাগান, খরস্রোতা জলধারাই মূলত অনন্তনাগের মূল বৈশিষ্ট্য । এখানে আপনি বাগানগুলিতে বসেই প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারেন । তবে অনন্তনাগ থেকে আপনি ভেরিনাগ এবং ডাকসুম ইত্যাদি স্থান গুলি ভ্রমণ করে আসতে পারেন ।
৬.পুঞ্চ
কাশ্মীরে অন্যতম সুন্দর ভ্রমণ স্থান হল পুঞ্চ । যদিও এই স্থানটি পর্যটকদের কাছে এখন নজরবন্দি হতে পারেনি । তবে সৌন্দর্যের মাপকাঠি দ্বারা বিচার করলে এই স্থানটিকে কখনওই অস্বীকার করা যায় না । এখানে সবুজ পাহাড়ি বৃক্ষ দ্বারা আচ্ছাদিত সমতল অঞ্চল থেকে দূরের তুষারাবৃত শৃঙ্গের একটা রোমাঞ্চকর রূপরেখা প্রত্যক্ষ করা যায় ।পুঞ্চের দর্শনীয় স্থানটি হলো – আঠারো শতকে নির্মিত পুঞ্চ ফোর্ট । এছাড়াও এখান থেকে গিরগান ধকের সাতটি লেক, বাক্স সাহিব এবং গুরুদ্বারা নাঙ্গালী সাহিব দর্শন করে নিতে পারেন ।
এছাড়াও, কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়ে বৈষ্ণব দেবী, জম্মু, পাটনিটপ, আরু ভ্যালি, চশমাশাহী, শালিমার গার্ডেন, ইত্যাদি স্থানগুলি দর্শন করে নিতে পারেন । এমনকি কাশ্মীর থেকে জুলাই – আগস্ট মাসের অমরনাথ যাত্রাতেও অংশগ্রহণ করতে পারেন ।
কাশ্মীরে প্রতিটা স্থানেই হোটেল পরিষেবা উপলব্ধ আছে । হোটেলের জন্য আপনি অনলাইন অ্যাপগুলি থেকে আপনার পছন্দ মতো হোটেল বেছে নিতে পারেন ।
বিমানে – কলকাতা বিমানবন্দর থেকে জম্মু পৌঁছনোর অনেক বিমান উপলব্ধ আছে । বিমানবন্দর থেকে গাড়ি ভাড়া করে কাশ্মীরের প্রসিদ্ধ স্থান গুলি ভ্রমণ করে নিতে পারেন ।
ট্রেনে – হাওড়া থেকে জম্মু -তাওয়াই এক্সপ্রেস চেপে ২১১২.৩ কিমি পথ অতিক্রম করে পৌঁছে যেতে পারেন গন্তব্যে ।