প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নৈসর্গিক আকর্ষণের অনন্য জনপদ মৌলভীবাজার। প্রতিবছর শীত মৌসুমে পর্যটকদের ঢল নামে চায়ের রাজধানীতে। কয়েক মাস ব্যবসায় মন্দাভাব থাকলেও, এবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সজাগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।
উঁচু-নিচু পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজ গালিচায় মোড়ানো দুটি পাতা একটি কুঁড়ি। একই সঙ্গে পাহাড়ি ঝর্ণার কলতান। আবার লাউয়াছড়ার প্রাণ প্রকৃতি আর হাওড়ের অথৈ জল। এ নিয়েই পর্যটন জেলা মৌলভীবাজার।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নৈসর্গিক আকর্ষণের অনন্য এই জনপদ ভ্রমণপিয়াসী আর সৌন্দর্যপিপাসুদের অন্তরকে শীতল করতে বাধ্য। একেক ঋতুতে একেক রকম রূপ-লাবণ্যের সাজ-সজ্জায় সজ্জিত হলেও শীতের আবেশ আর শিশিরের জলকণা অন্যরকম মুগ্ধতা ছড়ায় হৃদমাঝারে।
পর্যটকরা জানান, প্রকৃতি সুন্দর, বিশাল চা বাগান ভীষণ মুগ্ধ করছে। পরিবার নিয়ে প্রকৃতির মাঝে কাটানো এ সময়টাই আনন্দের। নানান ঝামেলা থেকে বের হয়ে শান্ত সময় পার করছেন তারা। প্রকৃতির গন্ধ যখন হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়, তখন সেটা মানসিক শান্তি বয়ে আনে।
বছরজুড়ে পর্যটকের আসা-যাওয়া থাকলেও শীতে প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর থাকে সব স্পট। গত কয়েক মাস পর্যটন খরায় ভুগেছে চায়ের এই রাজধানী। তবে এবার পর্যটন মৌসুমে প্রত্যাশার পালে প্রাপ্তির হাওয়া লাগবে, আশা স্থানীয়দের। আর মন্দাভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন বুনছেন ব্যবসায়ীরাও।
হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের আমেজটা যেহেতু বেড়েছে, আশা করা যাচ্ছে পর্যটকরা ভিড় করবে। এতে ব্যবসার মন্দাভাবটা কাটিয়ে তোলা যাবে।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাবেক সভাপতি সেলিম আহমদ বলেন, ‘পর্যটকদের সেবা এবং সুন্দর আপ্যায়নের উদ্যোগ নিতে পারলে পর্যটকরা সন্তুষ্টি পাবে। তিন মাসে আয় রোজগার একটু ভালো হলেও বিগত বছরগুলোর ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা পুরোপুরি সম্ভব হবে না।’
পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
শ্রীমঙ্গল নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, ‘পর্যটক নিরাপত্তায় পর্যটন নগরীতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে পর্যটক নিরাপত্তায় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আশাকরি পর্যটকরা পরিবার নিয়ে সুন্দর সময় কাটাতে পারবেন।’
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারে অর্ধশত পর্যটন কেন্দ্রে বছরে ভ্রমণ করেন প্রায় ১০ লাখ পর্যটক।