বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ট্যুরিস্ট স্পটে পরিণত হয়েছে মালদ্বীপ। করোনার মহামারিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একচেটিয়া পর্যটকদের কাছে টেনেছে দেশটি।
সিএনএন খবরে জানায়, গত বছর পর্যটকদের বেশ সমাগম ছিল মালদ্বীপে। তাই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ট্যুরিস্ট স্পটে পরিণত হয়েছে দেশটি । বিশ্বের বেশীরভাগ পর্যটন স্পট করোনার কারণে বন্ধ থাকলেও গত বছরের জুলাই মাস থেকেই সব দেশের পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হয় মালদ্বীপ। প্রতি বছর মালদ্বীপে প্রায় ২০ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়। করোনার কারণে গেল বছরে সেই সংখ্যা ৫ লাখে নেমে এলেও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পর্যটন স্পটের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে মালদ্বীপের নাম।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির তথ্য মতে, মালদ্বীপের জিডিপিতে ২৮ শতাংশ অবদান রাখে পর্যটন খাত। যা বিশ্বে খুব কম দেশেই দেখা যায়।
করোনার সময়ে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করে বিশ্বের কয়েকটি দেশ। যেখানে ভ্রমণে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ ছিল পর্যটকদের ওপর। থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকায় গেলে সেখানকার হোটেলে দুই সপ্তাহ বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হয়। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে মালদ্বীপ সরকার। পর্যটকদের ওপর কোনও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ না করে শুধুমাত্র করোনার পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট দেখালেই মালদ্বীপ ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছেন পর্যটকরা।
মালদ্বীপের পর্যটন সংস্থা জানায়, বিশেষ ভৌগলিক অবস্থানের কারণে করোনাকালে দেশটির পর্যটন ব্যবসা অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের বিভিন্ন দ্বীপের রিসোর্টে থাকার সুব্যবস্থা করা হয়। এতে সামাজিক দূরত্বের শর্তটাও সহজে বজায় রাখা গেছে। অনেক রিসোর্টে প্রাইভেট বোট বা প্লেনের ব্যবস্থা ছিল। এতে করে পর্যটকদের ভিড়ের সম্মুখীন হতে হয়নি।
মালদ্বীপের পর্যটন সংস্থা আরও জানায়, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষরাও নানা সুবিধার ব্যবস্থা করেছিল। অনেক রিসোর্ট তুলনামূলক কম খরচে মাসব্যাপী পর্যটকদের থাকার সুযোগ করে দেয়। ২৮ দিন সেখানে থাকার জন্য ৪ সদস্যের পরিবারের কাছ থেকে খাবার, হাই স্পিড ইন্টারনেট ও বেশকিছু সুবিধাসহ ৪২ হাজার ৬০০ ডলার নেওয়া হতো।
‘দ্য অনন্তারা ভেলি’ রিসোর্টের পক্ষ থেকে দারুণ সুযোগ করে দেয় পর্যটকদের। মাত্র ৩০ হাজার ডলারে সেখানে এক বছরের জন্য থাকার সুযোগ দেওয়া হয়। এমন সুবিধা পেয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মালদ্বীপে ছুটে গেছেন ভ্রমণপ্রেমীরা।
এছাড়াও ওয়ার্ল্ড মিটারের তথ্য মতে, গত বছর শুরু থেকে এ বছর পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মারা গেছে মাত্র ৬৪ জন। আর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজার মানুষ।
সবদিক মিলিয়ে করোনাকালে নিরাপদ পর্যটন স্পট হিসেবে প্রকৃতির উদার সৌন্দর্যে ভরা মালদ্বীপকে বেছে নেন পর্যটকরা।