1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন

অপূর্ব সবুজের শহর: ট্রাবজোন

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

আয়া সোফিয়া এবং সুমেলা মনেস্টেরির মতো ট্রাবজোন ওয়ালও শহরটিতে টিকে থাকা রোমান স্থাপত্যকলার আরেকটি নিদর্শন। পাথরে বানানো এ দেয়ালের মাধ্যমে ট্রাবজোন শহরকে আপার টাউন, মিডল টাউন এবং লোয়ার টাউন—এ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছিল।

অনেকে অবশ্য দাবি করেন, ট্রাবজোন ওয়াল ছিল প্রকৃতপক্ষে একটি দুর্গ, যার মাধ্যমে শহরটিকে বহিঃশত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা চালানো হতো। বর্তমানে ট্রাবজোন ওয়ালের সামান্য অংশ অবশিষ্ট আছে। এর বিভিন্ন অংশে আজ শোভা পায় বিভিন্ন ধর্মীয় বাণী।

ট্রাবজোনের আয়া সোফিয়া
ট্রাবজোনের আয়া সোফিয়াছবি: লেখক

ট্রাবজোনের বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং জাগনোস ভ্যালি পার্কও অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে বৃষ্টির দিন হওয়ায় আমরা এ দুই জায়গায় আশানুরূপভাবে ঘুরতে পারিনি। ছবি তুলতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা যদি ট্রাবজোনে বেড়াতে যান, অবশ্যই চেষ্টা করবেন বসটেপেতে যাওয়ার জন্য। বসটেপে থেকে পুরো ট্রাবজোন শহরের অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়। কেবল কার বা টেলিফিরিকের প্রতি কারও ঝোঁক থাকলে বসটেপে হতে পারে তাঁর জন্য আদর্শ জায়গা।

তুরস্কের সাধারণ মানুষ যদিও খুব একটা মাছ খেতে পছন্দ করে না, তবে কারাদেনিজ অঞ্চলে হামছি নামক একধরনের খাবার বিশেষভাবে জনপ্রিয়। ছোট কিংবা মাঝারি আকৃতির সামুদ্রিক মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভেজে হামছি তৈরি করা হয়। হামছির সঙ্গে গরম গরম পোলাও পরিবেশন করা হয়।

ট্রাবজোনসহ সমগ্র কারাদেনিজ অঞ্চলের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার হামছি
ট্রাবজোনসহ সমগ্র কারাদেনিজ অঞ্চলের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার হামছিছবি: লেখক

তুর্কিরা পোলাওকে বলে পিলাফ। আমাদের দেশে পোলাও রান্না করা হয় চিনিগুঁড়া চাল দিয়ে। চিনিগুঁড়া চালের নিজস্ব ঘ্রাণ রয়েছে, তাই বাড়িতে পোলাও রান্না করা হলে পুরো ঘর এ সুগন্ধে ছেয়ে যায়। এ ছাড়া পোলাও রান্না করার সময় অনেকে ঘি এবং গুঁড়া দুধের পাশাপাশি গোলাপ ও কেওড়ার জল এবং বিভিন্ন গরম মসলা ব্যবহার করেন। ফলে আমাদের দেশে পোলাও মানে ফ্লেভারফুল একটি খাবার। কিন্তু তুরস্কে যে ধরনের পোলাও রান্না করা হয়, সেটি আমাদের দেশের পোলাওয়ের তুলনায় অনেকাংশে সাদামাটা।

ট্রাবজোনের সিগনেচার ডিশ আকচাবাত কোফতে
ট্রাবজোনের সিগনেচার ডিশ আকচাবাত কোফতেছবি: লেখক

আমাদের বাঙালি জিভে হামছি কিংবা পিলাফ তেমন একটা ভালো লাগবে না। আমরা বরাবর ঝাল ও অতিরিক্ত মসলাদার খাবারে অভ্যস্ত। ট্রাবজোনের স্থানীয় খাবারের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে ট্রাবজোন পিদে কাছে এবং আকচাবাত কোফতে। পিদে হচ্ছে পিৎজার তুর্কি সংস্করণ। তবে সাধারণ পিৎজার মতো পিদে গোলাকার হয় না, কিছুটা মাকু আকৃতির হয়ে থাকে। তুর্কিরা কোফতাকে বলে কোফতে। আকচাবাত কোফতের জনপ্রিয়তা পুরো তুরস্কে। ট্রাবজোনে অবস্থিত আকচাবাত নামক স্থানে প্রথম এ কোফতা তৈরি করা হয়। গরু কিংবা ভেড়ার মাংসের কিমাকে বিশেষ কিছু মসলা দ্বারা ম্যারিনেট করা হয়। এরপর হাতে নিয়ে অনেকটা কয়েনের আকৃতি দেওয়া হয় এবং কাঠ–কয়লায় ঝলসিয়ে এ কোফতা তৈরি করা হয়। আমার জীবনে খাওয়া সেরা মিটবল আইটেমের মধ্যে এ আকচাবাত কোফতে অন্যতম। আকচাবাত কোফতের একটি বিশেষত্ব হচ্ছে এর ঘ্রাণ, যা তুরস্কের অন্যান্য কোফতায় পাওয়া যায় না।

যেহেতু ট্রাবজোন তুরস্কের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোর মধ্যে একটি, তাই ট্রাবজোন থেকে কেউ চাইলে সহজেই সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র জর্জিয়ায় ভ্রমণ করতে পারেন। ট্রাবজোনের সেন্ট্রাল বাসস্টেশন থেকে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসি কিংবা দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বাটুমিতে যাওয়ার জন্য সরাসরি বাস রয়েছে। আপনি চাইলে বিভিন্ন ভ্রমণ পরিচালনাকারী কোম্পানির সহায়তা নিতে পারেন, যারা ট্রাবজোন থেকে জর্জিয়ার বিভিন্ন স্থানে ট্যুর পরিচালনা করে।

ট্রাবজোনে অবস্থিত কারাদেনিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি
ট্রাবজোনে অবস্থিত কারাদেনিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিছবি: লেখক

ট্রাবজোনে অবস্থিত কারাদেনিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিগুলোর একটি। এর মূল ক্যাম্পাস অত্যন্ত সুন্দর, যা সত্যিই উপভোগ করার মতো। বেশ কিছু বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করছেন।

কারাদেনিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বশির উল্লাহ এর সাথে লেখক
কারাদেনিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বশির উল্লাহ এর সাথে লেখকছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে আমার সঙ্গে কারাদেনিজ টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির দুই বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বশির উল্লাহ এবং অভিজিৎ অভির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। এদের দুজনই আমার মতো বৃহত্তর নোয়াখালীর সন্তান। বিদেশের মাটিতে সবচেয়ে ভালো লাগে, যখন নিজ দেশের কাউকে খুঁজে পাই। আরও ভালো লাগে যখন সে ‘দেশি ভাই বা বোন’ সরাসরি নিজের এলাকার হন। এ দুজন মানুষের কাছে আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। কেননা পুরো ট্রাবজোনে তাঁরা ছিলেন আমার সঙ্গী। যেভাবে এ দুজন আমাকে সমাদর করেছেন, তা আমি চিরকাল স্মরণ রাখব তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ। তাঁদের পাশে না পেলে ট্রাবজোনের আনন্দটা অধরাই থেকে যেত।

ট্রাবজোন তুরস্কের সর্ব উত্তরের পূর্বাঞ্চলীয় শহর হওয়ায় তুরস্কের প্রধান শহর, যেমন ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা, ইজমির, আনতালিয়া কিংবা বুরসা থেকে এর অবস্থান অনেক দূরে। অ্যারোপ্লেনে ইস্তাম্বুল থেকে ট্রাবজোনে পৌঁছাতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লেগে যায় এবং বাসে সময় লাগে ১৮ ঘণ্টার মতো। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা থেকে ট্রাবজোন পৌঁছাতে সময় লাগে সাড়ে ১২ ঘণ্টা।

ট্রাবজোনের বার কাউন্সিল ভবন
ট্রাবজোনের বার কাউন্সিল ভবনছবি: লেখক

তুরস্কে আমার বসবাস ছিল কুতাহিয়া নামক ছোট্ট এক শহরে। কুতাহিয়া থেকে ট্রাবজোনের দূরত্ব ৬৫৬ মাইলের মতো। বাসে কুতাহিয়া থেকে ট্রাবজোন পৌঁছাতে আমাকে সে সময় ১৪০ লিরা ভাড়া গুনতে হয়েছিল এবং ৬৫৬ মাইল পথ পাড়ি দিতে প্রায় ১৪ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আগে থেকেই বাঙ্ক বেডের এক হোস্টেলে থাকার জায়গা বুকিং দিয়ে রেখেছিলাম। তিন রাত থাকার জন্য আমার মোট খরচ হয়েছিল ১০৮ লিরার মতো। হোস্টেল কর্তৃপক্ষ সকালের নাশতা ও রাতের খাবার বিনা মূল্যে সরবরাহ করেছিল।

ট্রাবজোনে অবস্থিত জাগনোস ভ্যালি পার্ক
ট্রাবজোনে অবস্থিত জাগনোস ভ্যালি পার্কছবি: লেখক

ট্রাবজোনের যাত্রাপথে আমার এক সুখকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল যখন আমি বাসে উঠি। বাসের চালক আমাকে টিকিট দেখাতে বলেন এবং আমি যথারীতি তাঁকে আমার টিকিট দেখাই। এরপর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমার সঙ্গে পাসপোর্ট আছে কি না। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এশিয়া থেকে ইউরোপে প্রবেশ করতে হলে তুরস্ক হচ্ছে একমাত্র সহজ রাস্তা। ইস্তাম্বুলকে বলা হয় ইউরোপের প্রবেশদ্বার। কারণ, এশিয়া থেকে ইউরোপে কিংবা ইউরোপ থেকে এশিয়ায় প্রবেশের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত রুট হলো ইস্তাম্বুল।

অপূর্ব সবুজের শহর: ট্রাবজোন

তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তুরস্কে হাজারো মানুষের সমাগম হয়। ইস্তাম্বুলের মধ্য দিয়ে গ্রিস কিংবা বুলগেরিয়া হয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে অনুপ্রবেশের জন্য তাঁরা ট্রানজিট হিসেবে তুরস্ককে ব্যবহার করেন। তুরস্কের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়া, ইরাক, ইরান ও লেবাননের সীমান্ত সংযোগ রয়েছে। তাই এসব দেশ থেকে অসংখ্য শরণার্থী তুরস্কে প্রায়ই আশ্রয় নেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা যায়, এখন পর্যন্ত তুরস্কে চল্লিশ লাখের মতো শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন।

সুষ্ঠুভাবে এ দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক চাপ এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সব সময় দেশটিকে আঘাত করে। এ জন্য তুরস্কে রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় সবাইকে কোনো না কোনো আইডি ডকুমেন্ট সঙ্গে রাখতে হয়। হোক সেটা ন্যাশনাল আইডি কার্ড কিংবা হোক সেটা পাসপোর্ট অথবা রেসিডেন্স কার্ডের কপি। যেকোনো সময় পুলিশের চেক হতে পারে। আর এ ক্ষেত্রে কে তুরস্কের নাগরিক, কে বিদেশি নাগরিক এ বিষয় কখনো বিবেচনায় আনে না স্থানীয় পুলিশ। বাস টার্মিনালগুলোয় পুলিশের চেক খুবই সাধারণ ঘটনা। আমার আশ্চর্য লাগে, যখন আমি দেখি ওই বাসচালক আমাকে ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করেন, ‘কুড ইউ প্লিজ শো মি ইওর পাসপোর্ট?’

ট্রাবজোনের সেন্ট্রাল বাস স্টেশনে লেখক ও তুরস্কের বাসড্রাইভার যিনি সতেরো বার বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছেন
ট্রাবজোনের সেন্ট্রাল বাস স্টেশনে লেখক ও তুরস্কের বাসড্রাইভার যিনি সতেরো বার বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছেনছবি: সংগৃহীত

তুর্কিরা ইংরেজিতে তেমন একটা পারদর্শী নন। আসলে তাঁরা ইংরেজিকে তেমন একটা গুরুত্ব দেন না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও অনেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক ইংরেজি বলতে পারেন না। এটা আমার নিজের দেখা ঘটনা। সে জায়গায় একজন বাসচালক এত সুন্দর করে অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলে যাচ্ছেন, বিষয়টি দেখার পর আমার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়।

বাংলাদেশ সম্পর্কে তুরস্কের সাধারণ মানুষের ধারণা খুব একটা লক্ষ করা যায় না। কুতাহিয়া ডুমলুপিনার বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার এক শিক্ষিকা ছিলেন। পদমর্যাদার দিক থেকে তিনি ছিলেন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। তিনি মূলত ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিকস পড়াতেন। ক্লাসের প্রথম দিন যখন তিনি জানতে পারলেন যে আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি, তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান কোথায়? বাংলাদেশ কি এশিয়ার কোনো দেশ, নাকি বাংলাদেশের অবস্থান সেনেগালের আশপাশে কোথাও?

আরও একটা আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, আমার কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট দেখে আমার সঙ্গে বাংলা বলতে আরম্ভ করে দিলেন ওই বাসচালক! আমি আরও আশ্চর্য হয়ে যাই, যে দেশের বেশির ভাগ মানুষ আমাদের দেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না, সেখানে একজন বাসচালক কীভাবে বাংলা বলতে পারেন? আমি তখন আগ্রহী হয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা আরম্ভ করে দিই। তিনি আমাকে জানান যে তিনি অন্ততপক্ষে ১৭ বারের মতো বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছেন। তিনি মূলত ডকইয়ার্ডে কাজ করতেন। সেই সুবাদে তাঁর বাংলাদেশে যাওয়া হতো। কাজের পাশাপাশি তিনি নিয়মিত সার্ফিং করতেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে মনে হলো, তিনি ওয়াটার স্পোর্টসে পারদর্শী ছিলেন। বর্তমানে অবশ্য তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন।

ট্রাবজোনের বোটানিক্যাল গার্ডেন
ট্রাবজোনের বোটানিক্যাল গার্ডেনছবি: লেখক

তিনি বাংলাদেশে যেসব জায়গায় গিয়েছেন, আমি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করার পর ২৩ বছরেও এত জায়গায় যেতে পারিনি। যদিও এর মধ্যে আমার ইউরোপ ও এশিয়া মিলিয়ে ৩০টির বেশি দেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার আর মোংলার মতো অনেক জায়গায় তিনি গিয়েছেন এবং বাংলাদেশের অনেক নদীর নাম তিনি জানেন, যেটা আমি জানি না। ব্যাপারটি আমাকে ভীষণ লজ্জা দিল। আরেকটা জিনিস উল্লেখ না করলেই নয় যে ভালো ইংরেজি জানার পরও এবং প্রায় গোটা পৃথিবী সম্পর্কে ধারণা থাকা সত্ত্বেও কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে তিনি বাসচালক হিসেবে জীবিকা গ্রহণ করছেন। অবসরের পরও বেকার না থেকে তিনি কাজ করছেন। ভদ্রলোক সত্যি আমার জীবনের অনেক ধারণাকে বদলে দিয়েছেন।

তিনি আমার সঙ্গে যতটুকু বাংলা বলেছেন, ততটুকু বাংলা তিনি শুদ্ধভাবে বলার চেষ্টা করেছেন। সেখানে কোনো ধরনের তুর্কি, হিন্দি অথবা উর্দুর সংমিশ্রণ ছিল না। এ ঘটনাও আমাকে লজ্জা দিয়েছে আমাদের ‘হাইব্রিড বাংলা’ বলার কারণে। প্রবাসজীবনে সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাগে, যখন নিজ দেশের প্রশংসা শুনি অন্য কারও কাছে। চালক ভদ্রলোক আমাকে জানালেন যে বাংলাদেশ তাঁর কাছে ভালো লাগার একটি নাম, যা আমাকে সত্যিই আবেগতাড়িত করেছে।

ট্রাবজোন পিদে— পিজ্জার তুর্কি সংস্করণ এটি
ট্রাবজোন পিদে— পিজ্জার তুর্কি সংস্করণ এটিছবি: লেখক

আমি সবাইকে পরামর্শ দেব তুরস্কে বেড়াতে গেলে ট্রাবজোনে ঘুরতে যাওয়ার জন্য। ট্রাবজোনে যাওয়ার পথে সামসুন থেকে শুরু করে অরদু, গিরেসুন এবং রিজে পর্যন্ত পুরো অংশে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের হাতছানি পাওয়া যায়। কৃষ্ণসাগরের তীরের সঙ্গে আশপাশের প্রকৃতির সংমিশ্রণে নয়নাভিরাম এক দৃশ্যপটের সৃষ্টি হয়, যা চিরকাল স্মরণ করার মতো।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com