এক ছুটিতে সিলেটের সব জায়গা ঘোরা শেষ করা সম্ভব নয়। ফলে বেছে নিতে হবে এ জেলার দর্শনীয় জায়গাগুলো। পুরো জেলার অন্যতম আকর্ষণ চা-বাগান। এই জেলার উত্তরাঞ্চলে ২০ কিলোমিটারজুড়ে পুরোটাই চা-বাগান। সাদা পাথর ও স্বচ্ছ পানির জন্য বেশ জনপ্রিয় জাফলং। এর পাশেই আছে পাংথুমাই। একই রকমের দৃশ্য দেখতে পাবেন ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরে। তালিকায় আরও আছে বিছনাকান্দি, বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট বা জলাবন রাতারগুল। সিলেট থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরে লালাখাল।
যেহেতু এক ছুটিতে সব ঘুরে দেখা সম্ভব নয়, তাই বাজেট অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন গন্তব্যের স্থান। ঢাকাসহ দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সিলেটে যাওয়া যায় বাস, ট্রেন বা বিমানে। এখানে সব ধরনের বাজেটে থাকার জায়গা রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল
একটি কুঁড়ি, দুটি পাতার দেশ শ্রীমঙ্গল। এটি মৌলভীবাজার জেলার একটি উপজেলা। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গলে যাওয়া যায়। চা-বাগান, হ্রদ, ঝরনা বা জঙ্গল—সব পাবেন সেখানে। আর সবকিছু প্রায় কাছাকাছি। এসব বাদ দিলেও টিলাবেষ্টিত এলাকার কটেজগুলোয় কাটিয়ে দিতে পারেন পুরো ছুটি। সেখানে বসে রাতে ঝিঁঝি পোকার সঙ্গে ঝিরি বেয়ে নেমে যাওয়া পানির শব্দ আপনার মনে স্বর্গীয় আবেশ তৈরি করবে।
শ্রীমঙ্গলের দর্শনীয় জায়গাগুলোর মধ্যে আছে বাইক্কা বিল, চা-কন্যার ভাস্কর্য, রমেশ রাম গৌড়ের আবিষ্কৃত সাত রঙের চা, বধ্যভূমি ৭১, বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র, রাবারবাগান, খাসিয়াপুঞ্জি ইত্যাদি। শ্রীমঙ্গলের পাশের উপজেলা কমলগঞ্জে আছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর লেক। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে যেতে হবে বাসে বা ট্রেনে। আর সেখানে আপনার বাজেট অনুযায়ী হোটেল বা কটেজ পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজার। এর সঙ্গে এখন বাজেটের দিকেও নজর দিতে হয়। তবে সমুদ্র যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের কাছে এসব দূরের বিষয়। সমুদ্রের তীরে সারি সারি ঝাউবন, ভোরের সূর্যোদয়, সন্ধ্যায় ঢেউয়ের মাঝে বিলীন হয়ে যাওয়া গোধূলির রং—এসবের মায়ায় পড়তে চাইলে কক্সবাজারের বিকল্প নেই। কক্সবাজার ভ্রমণ তালিকায় রয়েছে কলাতলী, লাবণী ও ইনানী বিচ, মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি, সোনাদিয়া দ্বীপ, রামু, মহেশখালী দ্বীপ, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইত্যাদি। কক্সবাজার শহরে আছে দেশের সবচেয়ে বড় অ্যাকুয়ারিয়াম। সেখানে সামুদ্রিক প্রাণী দেখার সুযোগ আছে।
খুব কম খরচে ঘুরে আসা যায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত থেকে। নৈসর্গিক দৃশ্যের সঙ্গে সমুদ্র ও কর্ণফুলী নদীর মিলন আপনাকে মুগ্ধ করবে। এর সঙ্গে সাগরপাড়ের বালুকারাশি, বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ মনকে নিমেষে প্রশান্ত করে দেবে। এর সৈকতজুড়ে আছে চার কোণাবিশিষ্ট কংক্রিটের ব্লক। এগুলো পতেঙ্গাকে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। প্রতিদিন বিকেলে হাজারো পর্যটকের ভিড় থাকে এখানে। সৈকতের পাশে ও ঝাউবনে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান। যাঁরা অল্প খরচে বা হাতে অল্প সময় নিয়ে সমুদ্রে খানিকটা সময় কাটিয়ে আসতে চান, তাঁদের জন্য পতেঙ্গা আদর্শ।