থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে দ্বীপ-শহর ফুকেট পৌঁছেছিলাম এক শুক্রবার। গাড়ি-ফ্লাইট-মিনিবাস পেরিয়ে পৌঁছাতে বেশ রাত হয়ে গিয়েছিলো।
একা একা ট্রাভেলের বহু ঝামেলার মধ্যে একটা ঝামেলা হল, ঘুম থেকে ডাকার কেউ নেই। আগের ভ্রমণগুলোতে তো বন্ধুরা সাথে থাকায় ডাকার জন্য কাউকে না কাউকে পাওয়া গিয়েছে। ব্যাংককের ট্রেনিং প্রোগ্রাম থেকে ফুকেটে ঘুরতে চলে আসার মত কাউকে পাইনি। কিন্তু একটা দেশে আসলাম, সেটার সুন্দর একটা জায়গা ঘুরে দেখবো না, এটা ভাবতেই আমার মন খচখচ করছিলো। তাই এখানে একাই চলে এসেছি।
সব গুছিয়ে ঘুমাতে বেশ দেরি হয়ে গেছে। এলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম পরের দিন সকাল ৬.৩০ এ। এর মধ্যে আমাকে অন্য একটা হোটেলে উঠতে হবে। সেখানে চেক-ইন করে সাড়ে সাতটায় ট্যুর কোম্পানির গাড়িতে উঠতে হবে। ওরাই সমুদ্রের দিকে নিয়ে যাবে।
ঘুম ভাংলো এর আগেই। উঠে দেখি ৬.২০ বাজে। ভাবলাম, ৬.৩০ তো আর বাজে নাই। এলার্মটা বাজলে একটু পরেই উঠি। এলার্ম বাজলো কিনা কে জানে! কিন্তু বিশ্বাস করেন, পাঁচটা মিনিট বেশি ঘুম দিয়ে উঠে হঠাৎ ঘড়িতে দেখি ৭.২৫ বাজে!! এটা কিভাবে সম্ভব!!
হুড়মুড় করে উঠে দৌড় দিলাম অন্য হোটেলে। ভাবলাম, আজকের ট্যুর মনে হয় মিস হয়েই গেল! ৭.৩৫ এ দেখি গাড়ি দাঁড়ানো আছে। আমাকে খুঁজছে। যাক, গাড়ি ছাড়েনাই।
অবশেষে গাড়িতে উঠলাম। এরপরে বোট জার্নি। বোটে করে একে একে এই জেমস বন্ড আইল্যান্ড সহ তিনটা আইল্যান্ড দেখা হল আন্দামান সাগরের ফাং নাগা উপসাগরের।
এই জেমস বন্ড আইল্যান্ডের সামনেই দাঁড়িয়ে আছি ছবিতে। জেমস বন্ড আইল্যান্ড কেন এটার নাম, এটা যাদের জানতে ইচ্ছা করছে, তাদের জন্য বলি। এতদূর পর্যন্ত যারা পড়েছেন, তাদের জানানো উচিত। এই দ্বীপের আসল নাম “খাও ফিং কাং”। ফাং নাগা উপসাগরের-ই দ্বীপ। ১৯৭৪ সালে জেমস বন্ডের “দ্য ম্যান উইদ দ্য গোল্ডেন গান” চলচ্চিত্রের শ্যুটিং হয় এই দ্বীপে। সেই থেকে এটা বেশ বিখ্যাত। নামও হয়ে গেছে জেমস বন্ডের নামেই।
দেখতে আশেপাশের দ্বীপগুলোর মতনই সুন্দর। কিন্তু জেমস বন্ডের নামকে সামনে রেখে এই দ্বীপের জন্য পর্যটন কোম্পানিগুলো বেশ টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। প্রচুর পর্যটক আসেন এখানে প্রতিদিন।