রেলপথটির কাজ সম্পন্ন করতে খরচ পড়বে ২৫০ বিলিয়ন ডলার বা ২৫ হাজার কোটি ডলার। আশা করা হচ্ছে, এই প্রকল্পটিতে ১ হাজার ২০০ মাইলের বেশি দৈর্ঘ্যের রেললাইন তৈরি হবে। আর এটি সংযুক্ত করবে মরুর ছয় দেশকে।
প্রকল্পটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে দ্য গালফ রেলওয়ে নামে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হওয়া প্রকল্পটি গালফ কো–অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) এলাকার যোগাযোগব্যবস্থাকে আমূল বদলে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উচ্চাভিলাষী এই রেলপথ যে ছয়টি উপসাগরীয় দেশের মধ্য দিয়ে যাবে। সেগুলো হলো বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও আরব আমিরাত।
এসব তথ্য জানা যায় যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে।
দ্য গালফ রেলওয়ের কাজ সমাপ্ত হলে এটি ১ হাজার ২০০ মাইলেরও বেশি এলাকায় বিস্তৃত হবে এবং এই উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ স্থাপন করবে। এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং নগর উন্নয়নেও এটি সহায়তা করবে।
এই বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পটি আঞ্চলিক সহযোগিতায় একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি চিহ্নিত করছে এবং জিসিসির জন্য পরিবহনের একটি নতুন যুগের ইঙ্গিত দেয়।
অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত চাহিদাকে মাথায় রেখে উপসাগরীয় অঞ্চলে এই বিশাল মাপের এই রেল প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। গত বছরে তেল থেকে বিপুল রাজস্ব সংগ্রহ এবং শক্তিশালী বাজার এ ধরনের বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থের জোগান দিয়েছে।
উপসাগরীয় এই রেলওয়ের লক্ষ্য শুধু সীমান্তজুড়ে মসৃণ বাণিজ্য ও পরিবহন সহজতর করা নয়। বরং অর্থনৈতিক একীকরণেও অনুঘটক হিসেবে কাজ করা।
এই রেল নেটওয়ার্কটি প্রধান শহর, বন্দর এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থাপনের আশা জাগাচ্ছে। যা সড়ক ভ্রমণের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করার পাশাপাশি পরিবহনের আরও টেকসই ও নিখুঁত পথ দেখাচ্ছে।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সদস্য দেশে প্রকল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ছে। সৌদি আরব ২০২৪ সালের মার্চ মাসে রিয়াদ মেট্রোর প্রথম অংশ উন্মোচন করে। বছরের শেষ নাগাদ সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। একে দেশের বৃহত্তর পরিবহন আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টায় একটি উল্লেখযোগ্য ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতেও রেলের উন্নয়ন গতি পেয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ইউএই রেলওয়ে নেটওয়ার্ক চালু করা হয়। যা অত্যাধুনিক রেল অবকাঠামো তৈরিতে দেশের প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অগ্রগতিগুলো গালফ রেলওয়ে নেটওয়ার্ককে তার অভ্যন্তরীণ সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত করতে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উভয় বাণিজ্য রুটকে উন্নত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গালফ রেলওয়ে ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। আর এতে এটি সমগ্র অঞ্চলজুড়ে পণ্য ও যাত্রী চলাচলের উপায়কে পরিবর্তন করার আশা জাগাচ্ছে।