জঙ্গলে বাস, ক্যামপিং, কটেজ বা শহর থেকে দূরে প্রকৃতির মাঝে কিছুদিন/কিছু সময় কাটানোর কি ফায়দা !!!
“তোমার যখন কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস না থাকে তখন তুমি বেশি করে জীবনের অনেক ছোট ছোট জিনিষকে উপভোগ করতে পারো”
হাঁ, কি ফায়দা আনতে পারে বা কি উপকার হতে পারে, বা কেন আপনি যাবেন ধুলাবালি, মাঝেমধ্যে মশার কামড় অথবা কাদামাটির মধ্যে কিছুদিন কাটাতে ? এই বিষয়ে অনেক লেখা, অনেক কথা বা অনেক গবেষণা আছে। আজকে আর অত জটিল ব্যাপার নয়, শোনা যাক আমাদের ছোটমণিদের কাছ থেকে একেবারে Uncut . তারা কেউ কেউ ক্যামেরার সামনে আসতে ইতস্তত বোধ করে তাই সেটিকে সম্মান করে আমি শুধু তাদের কথাগুলি ধারণ করেছি, আলো বন্ধ করে। সবার একটা কমন কথা ছিল যে তারা স্বাচ্ছন্দে কোনো ধরণের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ছাড়া ভালোভাবে সময় কতটা পারে।
ভিডিও ক্লিপগুলি ধারণ করা হয়েছে আমাদের গত সপ্তাহের ক্যাম্পিংয়ের সময়। আমাদের প্রতিবার ক্যাম্পিংয়ের সময় অন্যতম একটি আকর্ষণ হলো রাতে ক্যাম্পফায়ারের পাশে বসে ম্যাশমেলো পোড়ানো এবং তার পর তাদের ক্যাম্পিংয়ের পছন্দ, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাদের আগামী দিনের পরিকল্পনা, তাদের বাবামায়ের ২/৩ টি ভালো দিক; তাদের চোখে, তাদের নিজেদের কিছু ত্রুটি, নিজেদের কিছু দক্ষতা, তাদের ধর্মীয় এবং মানবিক বিশ্বাস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা। গত সপ্তাহের ক্যাম্পিংয়ের সেই আলোচনার একটি প্রশ্নের উত্তরের কিছু অংশ এখানে দেওয়া। শুনতে বোরিং অথবা ইন্টারেস্টিং মনে না হলেও আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না যে ওদের কনসেপ্ট কত সুন্দর এবং আপনি নিজেও অনেক কিছু শিখবেন। সময় যে কখন চলে যাবে বুঝতেই পারবেন না। এখানে থাকে না কোনো গীবত, কোনো সমালোচনা, কোনো ফালতু তর্ক জাজমেন্ট বা কাউকে ছোট করা। তারা খেলাধুলা এবং এনজয়মেন্ট এর মাধমে অনেক কিছু শিখে, যেমন ডিসিপ্লিন, সলিডারিট, পরিষ্কারপরিচন্নতা ইত্যাদি। ওখানে থাকা অবস্থায় আমাকে তাদের একটা জিনিস ২ বার বলতে হয় না, এটি আমার কাছে অনেক বড়ো পাওয়া।
চেষ্টা করছি তাদের কথাগুলির সারাংশ বাংলায় লেখার, যাদের ওদের কথা বা অ্যাকসেন্ট বুঝতে একটু কষ্ট হয় তাদের জন্য।
রাজ :
নূতন নূতন আইডিয়া পাওয়া যায় ওয়াইল্ড পরিবেশে কিভাবে নিজে টিকে থাকা যায়, এটা তোমার টিকে থাকার দক্ষতাকে বুস্ট আপ করে,
তুমি তোমার বন্ধু বা অন্যদের সাথে সাথে সোশালাইজ হতে বাধ্য হও এবং একে ওপরের সাথে বেশি করে এনগেজ হতে পারো, কোনো ধরণের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ছাড়া, যেমন ফোন, ট্যাবলেট।
তোমার যখন কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস না থাকে তখন তুমি বেশি করে জীবনের অনেক ছোট ছোট জিনিষকে উপভোগ করতে পারো যেমন ক্যাম্পফায়ার, প্রাকৃতিক দৃশ্য, শাররীক এক্টিভিটিস, এমনকি খাওয়াটাও তুমি বাসার থেকে বেশি এনজয় করতে পারো।
নেহলা:
প্রথমত বন্ধুবান্ধব এবং নিজের পরিবারের সাথে সময় কাটানোর মাধ্যমে একে অপরের সাথে ভালো বন্ডিং তৈরী হয়, একে অপরকে ভালো করে জানা যায়, বেশি কাছাকাছি বা যায়. ফোন, বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের নোটিফিকেশন দ্বারা ডিস্ট্রাক্ট বা অন্য মনস্ক হওয়ার সুযোগ থাকে না, তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে মুক্তমনে খেলা করতে পারো, বাইকিং করতে পারো যা কিনা তোমার ভালো শারীরিক এক্টিভিটিস।
তাজোয়ার:
তুমি প্রকৃতিতে সময় কাটাতে পারো। তুমি অনেক একটিভ থাকতে পারো, বাসার মতো ঘরের মধ্যে বসে থাকতে হয় না। বিভিন্ন ধরণের লাইফ স্কিলস শিখতে পারো, ভালো লাইফ স্টাইল উপভোগ করতে পারো, সোশালাইজে হতে পারো।
তাহ্সিন:
তুমি প্রকৃতিতে থাকতে পারো, প্রকৃতির আসল সৌন্দ্যর্য উপভোগ করতে পারো যেমন লেক, জঙ্গল, গাছপালা, রাতের তারাভরা আকাশ এবং এগুলি যারা শহরে থাকে তাদের জন্য বিশেষ অভিজ্ঞতা। এটা বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে থেকে দূরে থাকার ভালো উপায় ইত্যাদি।
এদের মধ্যে একজন খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছে, সেটা হলো “তোমার যখন কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস না থাকে তখন তুমি বেশি করে জীবনের অনেক ছোট ছোট জিনিষকে উপভোগ করতে পারো”
আমরা সব সময় উল্লেখযোগ্য বা বড়োসরো কোনো অর্জন না হলে পাত্তা দেই না এবং সেটি সবসময় সম্ভবও না, তাই প্রায়ই একটা হা হুতাশের মধ্যে থাকতে হয়, কিন্তু যদি ছোট ছোট জিনিস বা ছোট ছোট অর্জনকে উপভোগ করতে শেখা যায় তাহলে জীবনের হাহুতাশ অনেক কমে যায়। আমি হ্যাপি যে ওরা সেই শিক্ষাটা অর্জন করছে। এখন আপনারা দোয়া করবেন যাতে ওরা ওদের এই শিক্ষা যেন বড়ো হয়ে ধরে রাখতে পারে।
ঘুরতে বা বেড়াতে যেয়ে এগুলি ওদের জন্য বোনাস, সাথে সাথে আমাদেরও।
আপনারাও চাইলে ওদের কথাগুলি অনুসরণ করে দেখতে পারেন, অনেক কাজে লাগবে।