বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ার জন্য গুনতে হয় বেশ বড় অংকের টাকা। বাংলাদেশি মুদ্রার সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার পার্থক্য দেখে অনেকেই ভ্রমণে যেতে সংকোচবোধ করেন। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের আশপাশেই এমন কিছু দেশ আছে, যেখানে একটু বুদ্ধি করে পরিকল্পনা করলেই কম খরচে ঘুরে আসা যায়।
ঠিক সময় বিমানের টিকিট কিনে রাখতে পারলে বাজেটের মধ্যেই বিদেশ ঘুরে আসতে পারবেন। জেনে নিন কম খরচেই কোন কোন দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন-
নেপাল
কম খরচে নেপাল ঘুরতে চাইলে বিমান নয়, শিলিগুড়ি থেকে বাসে কাঠমাণ্ডু চলে যান। একটু বেশি সময় লাগবে এই যা। এছাড়া প্রাইভেট গাড়িও পাওয়া যায়। পৌঁছাতে সময় লাগবে ঘণ্টা তিনেক। অফ সিজনে এলেও গাড়ি, হোটেল ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
আর বেশ কিছুদিন আগে থেকে হোটেল করে রাখলেও খানিকটা সাশ্রয় হয়। ঘোরার জায়গার তো শেষ নেই। হাতে সময় থাকলে বোধি স্তূপ, নারায়ণহিতি প্যালেস, সংগ্রহশালা, কৈসর মহল, নীলকণ্ঠ মন্দির ঘুরে আসতে পারেন।
ভুটান
শান্ত, নিরিবিলি, পাহাড় ও জঙ্গলে ঘেরা ভুটানের সরল জীবনযাত্রাই পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। তবে ফেব্রুয়ারি-মার্চে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। তাই খরচ কমাতে চাইলে ওই সময় বাদে অফটাইম বেছে নিন।
বৌদ্ধমঠ ও মন্দিরে ঘেরা ভুটানের সব জায়গায় কিন্তু গাড়ি পৌঁছায় না। তাই হেঁটে হেঁটে ঘুরতে পারলে তবেই যান ভুটান। তার মধ্যে দেখার মতো বৌদ্ধমঠ হল দ্রামেতসে গোয়েম্বা, চোরতেন কোরা, ত্রাশিগাং জং, মংগার জং।
প্রাচীন একটি অভয়ারণ্য গোম্ফু কোরা। যদিও বৌদ্ধমঠগুলো দেখতে একই রকম তাই সবগুলোতে যেতে না পারলেও সমস্যা নেই।
শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার মতো। পাহাড়, সমুদ্র ও সবুজ চা বাগানে ভরা শ্রীলঙ্কা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। কিছুটা কম খরচে বিমানের টিকিট কেটে রাখতে পারলে খরচ কমবে ভ্রমণে।
থাকার হোটেল রয়েছে বিভিন্ন দামের। হাতে খুব বেশি সময় না থাকলে ক্যান্ডি, নুয়েরাএলিয়া, সীতাএলিয়া, গ্রেগরি লেক ঘুরে দেখতে পারেন। কাছেই আছে পিনাওয়ালা এলিফেন্ট অরফ্যানেজ।
সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৫০-৬০টি হাতির বাস। শ্রীলঙ্কা কিন্তু বিখ্যাত দারুচিনির জন্য। তাই মাড়ু নদীর ধারে দারুচিনি দ্বীপ থেকে ঘুরে আসতে ভুলবেন না। ফিরতি পথে রাজধানী শহর কলম্বো ঘুরে দেখে নিতে পারেন।
ভিয়েতনাম
কলকাতা থেকে সরাসরি বিমানে চেপে ভিয়েতনাম পৌঁছনো যায়। সেখানকার ইতিহাস জানতে গেলে ঘুরে দেখতে হবে সংগ্রহশালা। গ্র্যান্ড নটার ডাম ক্যাথিড্রাল, ফরাসি উপনিবেশকালে বেশ কিছু স্থাপত্য আছে এখানে।
এছাড়া যাওয়া যেতে পারে ইতিহাসের স্মৃতিবিজড়িত হুই শহরে। এখানকার পারফিউম নদীতে নৌকাবিহারের স্মৃতি ভুলতে পারা কঠিন। এছাড়া আছে একাধিক প্যাগোডা।
হাতে সময় থাকলে ঘুরে দেখে নিতে পারেন হ্যানয়, মি সান, হোই অ্যান শহরগুলো। থাকা, খাওয়া বাদ দিলে ঘুরতে খুব বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়। যদি আগে থেকে বুকিং সেরে রাখা যায়।
মিশর
নীলনদের তীরে অবস্থিত মিশরের পিরামিড পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে একটি। কলকাতা থেকে যেতে গেলে দিল্লি বা মুম্বই থেকে রাজধানী কায়রোতে যেতে হয়। এক ঝলকে দেখলে অনেকটা রাজস্থানের মতো মনে হবে।
মিশরের ইতিহাস ও এই দেশ এতই বিশাল যে একবার এসে পুরোটা আত্মস্থ করা প্রায় অসম্ভব। তাই যে কোনো একটি দিক থেকে শুরু করাই ভালো।
তবে সেখানে খাবার ও পানির দাম একটু বেশি। তবে যাতায়াতের খরচ ও হোটেলের ভাড়া কমাতে না পারলে খরচ বেশ ভালোই হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া