সাজেক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। এটি রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। এর আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যাতায়াতের সুবিধার কারণে পর্যটকরা খাগড়াছড়ি জেলা দিয়েই সাজেকে আসা যাওয়া করেন। খাগড়াছড়ি সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার।
সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা এক হাজার ৮০০ ফুট। এরা লুসাই আদিবাসী। লুসাই ছাড়াও এখানে ত্রিপুরা ও পাঙখোয়াদেরও কিছু বসতি চোখে পড়ে।
সাজেক এর রুইলুই পাড়া থেকে এক থেকে দেড় ঘণ্টার ট্রেকিং করে দেখে আসতে পারেন লুসাই ঝর্ণা। স্থানীয় গাইড লুসাই ঝর্ণা বললেও এটি কংলক ঝর্ণা নামেই বেশি পরিচিত। তবে স্থানীয়দের অনেকের কাছেই এটি পিদাম তৈসা বা সিকাম তৈসা ঝর্ণা নামে পরিচিত।
সাজেক এর শেষ গ্রাম কংলক পাড়া। কংলক পাড়া সাজেকের সবচেয়ে উঁচু পাড়া । এটিও লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত। কংলক পাড়া থেকে ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায় যেখান থেকে কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তি।
চারপাশে যেদিকে তাকানো যায় সীমান্ত বিস্তৃত পাহাড় আর পাহাড়। পাহাড়গুলো ঢেকে আছে তুলোর মতো সাদা মেঘের ভেলা। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উপরে দাঁড়িয়ে মনে হবে যেন আপনি স্বর্গে এসেছেন এবং মেঘের ভেলায় ভেসে যেতে পারবেন যেকোন সময়। সাজেক এমনই আশ্চর্য্যজনক জায়গা যেখানে একই দিনে প্রকৃতির তিন রকম রূপের সান্নিধ্যে আপনি হতে পারেন চমৎকৃত।
কখনো বা খুব গরম অনুভূত হবে তারপর হয়তো হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাবেন কিংবা চোখের পলকেই মেঘের ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাবে আপনার চারপাশ। প্রাকৃতিক নিসর্গ আর তুলোর মত মেঘের পাহাড় থেকে পাহাড়ে উড়াউড়ির খেলা দেখতে সাজেক আদর্শ জায়গা।
সাজেকের রূপের আসলে তুলনা হয় না। সারা বছরই বর্ণিল সাজে সেজে থাকে সাজেক। বছরের যে কোন সময় আপনি সাজেক ভ্রমণ করতে পারেন। তবে বর্ষা, শরৎ ও হেমন্তে সাজেকের চারপাশে মেঘের খেলা দেখা যায় বেশি। তাই এই সময়টাই সাজেক ভ্রমণের জন্যে সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।