অভিজাত এবং প্রাচীন স্থাপনার পাশাপাশি আধুনিকতার মিশেলের অন্যতম ধারাবাহী ব্রিটেনের রাজধানী শহর লন্ডন। প্রায় ২,০০০ বছরের পুরানো এই সৌন্দর্যকে কাছ থেকে দেখতে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশী ভ্রমণপিপাসুরাও ভিড় জমান পাশ্চাত্যের এই প্রাণকেন্দ্রে। গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে একা একাই ঘুরতে পারবেন ঐতিহ্যবাহী লন্ডন শহর।
ওয়েস্টার কার্ড কিনে তাতে টাকা ভরে নিলেই ইচ্ছেমত ব্যবহার করা যাবে বাস কিংবা ট্রেন। এছাড়া লন্ডনের আবহাওয়া একেবারেই অনুমান করা যায় না। এই রোদ এই বৃষ্টির শহরে প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের সাথে রাখা উচিত ছাতাও।
এখানকার ট্রেন ব্যবস্থা খুব ভাল এবং গুগল ম্যাপ ব্যবহার করেই জানা যাবে বাস বা ট্রেন কতক্ষণ পরে ছেড়ে যাবে কিংবা কতটুকু পথ হাঁটতে হবে। এছাড়া শহরটিতে রয়েছে সাইকেলে করে যাতায়াত ব্যবস্থা। তাই কাঙ্ক্ষিত ট্রেন স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে ট্যাক্সি কিংবা গাড়ি ছাড়াই সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসা যায় দর্শনীয় স্থানগুলো। লন্ডন ভ্রমণে বাকেট লিস্টে রাখার মত কিছু দর্শনীয় জায়গা নিয়ে জানানো হল এই লেখায়-
ব্রিটিশ মিউজিয়াম :
ব্রিটিশ মিউজিয়াম ১৭৫৩ সালে স্থাপিত হলেও জনগণের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৭৫৯ সালে। বিভিন্ন যুদ্ধে জিতে আনা লুণ্ঠিত শিল্প সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়েছে এই জাদুঘর তাই এর অন্য নাম ‘মিউজিয়াম অব স্টোলেন মাস্টারপিসেস’ ও ‘মিউজিক অব অল সিভিলাইজেশনস’। তবে বিভিন্ন দেশের এই অমূল্য নিদর্শনের কারণে এই মিউজিয়াম দর্শন হতে পারে অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা।
বাকিংহাম প্যালেস :
পাতাল ট্রেন থেকে নামতে হবে ভিক্টোরিয়া মেট্রো স্টেশনে। এখান থেকেই সোজা রাস্তায় অবস্থিত বাকিংহাম প্যালেস যা তৈরি হয়েছিল রাজপরিবারের রাজকীয় অনুষ্ঠান এবং অবসরে বিনোদনের জন্য। ১৮৩৭ সালে রানি ভিক্টোরিয়ার সিংহাসনে অভিষেকের সময় রাজকীয় কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল এই প্রাসাদ।
নানারকমের শ্বেতপাথরের মূর্তি এবং নজরকাড়া সব ভাস্কর্য দ্বারা সু-সজ্জিত এই প্রাসাদ কিন্তু দেখতে হবে বাইরে থেকেই। বাইরের সৌন্দর্যেই মুগ্ধ হবে যে কেউ।
মাদাম তুসো মিউজিয়াম :
লন্ডনে অবস্থিত মাদাম তুসো মিউজিয়াম সম্পর্কে কম বেশি সকলেরই জানা আছে। লন্ডন ভ্রমণে ঘুরে দেখা যেতে পারে বিভিন্ন বিখ্যাত মানুষের মোমের মূর্তির এই সংগ্রহশালা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে এই মিউজিয়ামের শাখা থাকলেও মূল মিউজিয়াম দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ পাড়ি জমান লন্ডনে যা অবস্থিত বেকার স্ট্রিটের পশ্চিম পার্শ্বে এবং ডোরসেট স্ট্রিট ও কিং স্ট্রিটের মধ্যবর্তী এলাকায়।
ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবে :
১৫৩৬ সালে ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবে প্রতিষ্ঠিত হয় যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের সমাধিক্ষেত্র হিসেবে। পরবর্তীতে অষ্টম হেনরির শাসনামলে ১৫৩৮ সালে ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবের অদূরে নির্মাণ করেন হাইড পার্ক নামে একটি স্থায়ী উদ্যান যা মুক্তাঙ্গন নামে পরিচিত। এখানে পৃথিবীর যে কোন নাগরিক তাদের মনের কথা প্রকাশ করতে পারেন।
এছাড়া ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবে এখন ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের রাজ্যাভিষেক এবং রাজপরিবারের শেষকৃত্যের স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হয়। লন্ডন ভ্রমণে লিস্টে রাখতেই পারেন অনিন্দ্য সুন্দর এই হাইড পার্ক এবং ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবে।
বিগ বেন :
পূর্বে এর নাম ছিল ক্লক টাওয়ার। ২০১২ সালে এর নতুন নামকরণ হয় এলিজাবেথ টাওয়ার। লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টারে অবস্থিত এই টাওয়ারের সবচেয়ে বড় ঘণ্টাই হচ্ছে বিগ বেন। ৩১৫ ফুট উঁচু এই টাওয়ারে বিগ বেন উদ্বোধন করা হয় ১৮৫৯ সালে।
পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পাঁচটি সেলফি স্পটের মধ্যে অন্যতম এই টাওয়ার। তাই লন্ডন ভ্রমণ স্মরণীয় করে রাখতে একটা সেলফি থাকতেই পারে ঐতিহাসিক বিগ বেন সম্বলিত এই টাওয়ারে।
জোহরা মহসীন