1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন

সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরে আসুন সাগরকন্যা কুয়াকাটায়

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪

সাগরজলে লালচে রঙের আভা ছড়িয়ে সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্ত, বালুতটে লাল কাঁকড়ার নৃত্য অথবা সাগরের ঢেউয়ের গর্জন করে তীরে আছড়ে পড়ার মতো মনোরম মন ভোলানো দৃশ্যের দেখা মেলে কুয়াকাটায়।

ঈদের এই ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে অথবা প্রিয় মানুষকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সাগরকন্যা কুয়াকাটায়। কুয়াকাটা এখন শুধু সৈকতই নয়, ঘুরে দেখার আরও অনেক জায়গা আছে।

আমি ছুটে গিয়েছিলাম সাগরকন্যা কুয়াকাটায় দিনটি ছিল শুক্রবার। হৃদয়ের কম্পন যেন থামছেই না। সাগরকন্যাখ্যত কুয়াকাটায় যাব। বেলা তিনটায় বাসা থেকে যাত্রা শুরু। বাসে উঠেই যেন মনে হলো বাসের গতির সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব কমছে বহুল প্রতীক্ষিত সেই সাগরকন্যার।

পৌঁছালাম রাত ৯ টায়। প্রথমেই কিছুটা বিশ্রামের জন্য উঠলাম রেস্ট হাউসে। সেখানে বসে যখন আমরা কৃত্রিম বাতাসে ক্লান্তি দূর করছি।তখন হয়তো সমুদ্রে মৃদু ঠান্ডা প্রাকৃতিক বাতাস বইছে আর জানান দিচ্ছে আমাদের আগমনী বার্তা। ওদিকে পেটের মধ্যে যে লেগে গেছে যুদ্ধ, সে খেয়াল নেই।

তাই সমুদ্রস্নানের আগে সে যুদ্ধ থামিয়ে দিলাম খানিকটা ভূরিভোজ করে। এরপর সমুদ্রের দিকে রওনা দিলাম। কিছুক্ষণ হাঁটার পর সমুদ্রের দর্শন পেতেই যেন নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল সমুদ্রের বিশালতার সামনে।

ঢেউয়ের মাথায় সাদা ফেনা আর ঘোলাটে পানি যেন দুহাত তুলে ডাকছিল। ছুটে যেতে ইচ্ছে করছিল সেই প্রান্তে, যেখানে নীল আকাশ আর সমুদ্র এক হয়ে গেছে। তবে যাওয়ার তো সুযোগ নেই। তাই কিনারে থেকেই অনুভব করলাম সমুদ্রের গভীরে।

jagonews24

দীর্ঘক্ষণ কাটানোর পর আমি উঠতে চাইলেও সমুদ্র যেন আমাকে উঠতে দিচ্ছে না। সমুদ্রস্নানের ইতি টেনে মধ্যাহ্নভোজ সেরে বেরিয়ে পড়লাম সৌন্দর্যের লীলাভূমির সৌন্দর্য দেখতে।

একে একে বৌদ্ধ মন্দির, রাখাইনপল্লী, হাজার বছরের পুরোনো নৌকা, লেবুরচর, শুঁটকিপল্লী, বিখ্যাত কুয়া, যার নামানুসারে আজকের কুয়াকাটা। সন্ধ্যায় যখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল।

তখন যেন চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। এতটা অদ্ভুত সুন্দর প্রকৃতি কী করে হয়। রাতে যখন সমুদ্রের পাড়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। তখন অদূরের বিভিন্ন মাছ ও কাঁকড়া দ্বারা তৈরি মসলাযুক্ত খাবারের ঘ্রাণ নাকে এসে তীব্রভাবে লাগছিল। সমুদ্রের তীর ঘেষে লাল কাঁকড়া ও ঝিনুকের ছড়াছড়ি।

jagonews24

ফেরার পথে সারি সারি সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়ার দোকান। কুয়াকাটায় এসেছি, কাঁকড়া খাব না, তা কি করে হয়। কেউ টুনা মাছ, কেউ কাঁকড়া ফ্রাই। রাত আটটা। কেনাকাটায় ব্যস্ত সবাই। কেউ আচার, কেউ উপহারসামগ্রী। পরদিন সকালে নাশতা করে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।

যেভাবে যাবেন কুয়াকাটা

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরাসরি বাসযোগে পটুয়াখালী ও বরিশাল মহাসড়ক দিয়ে কুয়াকাটায় যাওয়া যায়। স্থানভেদে বাসের মান অনুসারে ভাড়া নির্ধারিত রয়েছে। ঢাকার গাবতলী থেকে বাস পাওয়া যায়।

কুয়াকাটার কাছেই দেশের অন্যতম সমুদ্রবন্দর ‘পায়রা’ অবস্থিত হওয়ায় সেখানকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। এছাড়া ৩টি সেতু হওয়াতে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে কুয়াকাটা। সঙ্গে বিলাসবহুল লঞ্চে করেও বরিশাল-পটুয়াখালী গিয়ে স্থানীয় বাসে করে কুয়াকাটা যেতে পারবেন।

https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/6-20230419133846.jpg

কোথায় থাকবেন?

থাকার হোটেল, খাবার হোটেল আর দর্শনীয় স্থানগুলো প্রায় একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে অবস্থিত। ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ১০ হাজার টাকা মানের অনেক থাকার হোটেল আছে কুয়াকাটা সাগর সৈকতের একদম কাছে। আর খাবার হোটেলগুলোর প্রায় সবগুলোই সৈকত থেকে মাত্র ২-৩ মিনিটের হাঁটা পথ।

পার্শ্ববর্তী দর্শনীয় স্থান

কুয়াকাটার গঙ্গামতির চরে সূর্যোদয়

বিকেলে বাহনযোগে লেবুর বনের পাশে তিন নদীর মোহনায় সূর্যাস্ত দেখা। ‘আন্ধার মানিক’, ‘পায়রা’ আর ‘শিব বাড়িয়া’ এই তিন নদীর মোহনায় যেতে অসংখ্য সাদা ঝিনুকের ‘ঝিনুক বিচ’, রাখাইন লেম্বুনের নামানুসারে ‘লেম্বুন ঠোটা’ থেকে লেবুর বন দেখে নিতে পারবেন।

jagonews24

কুয়াকাটা সৈকতে লাল কাঁকড়ার বাসা

পাশেই আছে ২-৩টি বৌদ্ধ মন্দির আর কিছু দূরে রাখাইন পল্লী। মোটরসাইকেলে করে ওইসব এলাকা ঘোরাটাও একটা বিশেষ অভিজ্ঞতা। প্রায় ৫৫০ জনের মতো মোটরসাইকেল চালিত গাইড আর দুই শতাধিক হলুদ পোশাকধারী ফটোগ্রাফার আছে কুয়াকাটাতে।

৫০০-১০০০ টাকার মধ্যে একটি মোটরসাইকেলে করে কুয়াকাটার সব স্পট ঘুরে আসা সম্ভব। তবে সকালে সূর্যোদয়ের সময়ে ২৫০-৩০০ টাকা আলাদা খরচ করতে হয়। একটু দরদাম করেই থাকেন পর্যটকরা।

কুয়াকাটার রাখাইন পল্লী

কুয়াকাটার রাখাইন পল্লীতে রাখাইনদের তাঁত ও বস্ত্রসামগ্রী। আর কুয়াকাটা শহরের একদম মাঝেই রয়েছে কুয়াকাটার সেই কুয়া, যার নামে এলাকার নামকরণ। মূলত সেটি একটি বৌদ্ধ বিহারের মধ্যে অবস্থিত।

টিকেটের বিনিময়ে সেখানে প্রবেশ করে ছবি/সেলফি তুলে কিছুটা উঁচু সিড়ি বেয়ে বৌদ্ধ মন্দির ঘুরে দেখতে বেশ লাগবে। এই বৌদ্ধ বিহারেই অবস্থিত কুয়াকাটার সেই ‘কুয়া’।

কুয়া আর বিহারের পাশেই রয়েছে অনেকগুলো মার্কেট, সৈকতের কোল ঘেঁষা মার্কেট ছাড়াও সেখানে পাবেন পোশাক-আশাক, ঝিনুক পণ্য, আচারের নানা দোকান।

তবে শুটকি মাছ কিনতে পর্যটকদের অবশ্যই যেতে হবে সৈকতের পাশের শুকটি মার্কেটে নয়তো কিছুটা দূরে শুটকি পল্লীতে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com