1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে ‌’হালাল হলিডে’

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪

বিশ্বে এখন পর্যটন কেন্দ্রের অভাব নেই। পাশাপাশি স্থানীয় মজাদার খাবারের পসরা তো থাকেই। এরমধ্যে মুসলিম ধর্মের অনুসারীদের জন্য খাবারে অনেক দিক-নির্দেশনা থাকে। যে কারণে তারা সব খাবার খেতে পারেন না। শুধু হালাল খাবারই খেতে পারেন মুসলিমরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই মুসলিম পর্যটনদের হালাল খাবার বেছে নিতে সমস্যায় পড়তে হয়। এ কারণে তারা কোথাও যাওয়ার আগে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী হালালের দিকে সতর্ক থাকেন।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনফ্লুয়েন্সার জেহরা রোজ বলেন, আমার রোদে যেতে ভালো লাগে। আমার ভিটামিন ডি পছন্দ এবং আমি বছরজুড়ে তামাটে রঙ ধরে রাখতে চাই। এ কারণে আমি সত্যিই ঠিক সেসব জায়গায় যেতে চাই যেখানে গোপনীয়তা কিংবা ছুটি কাটানোর মতো ব্যবস্থা রয়েছে।

জেহরা রোজ ইনফ্লুয়েন্সার হলেও তিনি যেমন মুসলিম ধর্মবিশ্বাসের প্রতি আনুগত্য চান, তেমনই আবার সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতে চান। এ পর্যন্ত ৩০টির বেশি দেশে ‘হালাল হলিডে’ বা হালাল ছুটিতে গেছেন তিনি।

আরবি হালাল শব্দের মানে হচ্ছে ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী ধর্মে যেসব বিষয়কে গ্রহণ করা হয়েছে। আর হালাল হলিডে হচ্ছে এমন জায়গায় ছুটিতে যাওয়া যেখানে মুসলিমরা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং চর্চার সঙ্গে কোনো আপস ছাড়াই ছুটি কাটাতে পারেন। তবে হালাল হলিডের জন্য ধর্ম পালনকারী মুসলিমদের কিছু ক্ষেত্রে আলাদা করে বিবেচনায় নিতে হয়। সেসব যেখানে পূরণ হবে সেখানেই হয়তো যান বা ভবিষ্যতেও যাবেন।

গোপনীয়তা : গোপনীয়তা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় অনুসারীর সংখ্যা বিবেচনা করলে খ্রিস্টানদের পরই অবস্থান হচ্ছে মুসলমানদের। অনেক মুসলিম দেশেই এখন মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা বাড়ছে। পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের মুসলিমদের ক্ষেত্রে তাদের মা-বাবার তুলনায় আয়ের পরিমাণ বেশি। এ কারণে তারা ছুটির দিন বা অবসর কাটানোর জন্য অর্থ ব্যয় করতে চায়। ফলে হালাল পর্যটনের চাহিদা বেড়েই চলছে।

জেহরা রোজ বলেন, আমার কাছে সাধারণ ছুটির দিন আর হালাল ছুটির দিনের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে গোপনীয়তা রক্ষার ব্যবস্থা। হালাল হলিডেতে মুসলিম নারীদের সুইমিং পুলে নামার সময় প্রচলিত বিকিনির পরিবর্তে বুরকিনি পরে পাবলিক সুইমিং পুলে নেমে থাকেন।

বুরকিনি হচ্ছে মুসলিম নারীদের জন্য তৈরি সাঁতারের পোশাক। এই পোশাকে সারা শরীর ঢেকে থাকে এবং শুধু মুখ ও পায়ের পাতা দেখা যায়।

জেহরা রোজ জানান―ঘুরতে গিয়ে সহজেই হালাল খাবার পাওয়ার সুযোগ চান তিনি। বলেন, অধিকাংশ মুসলিম পর্যটকরা অন্য যেকোনো বিষয়ের থেকে খাবার নিয়ে বেশি সচেতন থাকেন। ইসলাম ধর্মে শুকরের মাংস ও অ্যালকোহল নিষেধ করা আছে।

হালাল খাবার : ইস্তাম্বুলের বাসিন্দা হেসার সুকুগলু এডিগুজেল (৩৬)। তিন সন্তানের এ জননীর তুরস্কের ভেতর হালাল ছুটি কাটাতে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু যখন কোনো অমুসলিম দেশে তারা ঘুরতে যাওয়ার কথা চিন্তা করেন তখন অনেক বেশি গবেষণা ও পরিকল্পনা করতে হয় তাদের।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা মেসিডোনিয়ায় গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা সকালের নাস্তা হোটেলে করেছি। আর দুপুরের খাবারের জন্য সেখানকার ঐতিহ্যবাহী দোকানগুলোয় গিয়েছি। যেখানে অ্যালকোহল ছাড়া খাবার পরিবেশন করা হয়।

হেসার সুকুগলু প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন এবং ইসলামী মূল্যবোধ পালনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকেন। নামাজের ব্যাপারে বলেন, হালাল হোটেলগুলোয় নামাজের জন্য জায়নামাজ সরবরাহ করা হয়। আর সাধারণ হোটেলে থাকলে আমাকে জায়নামাজ সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়।

ইস্তাম্বুলের এ নারী বলেন, আমি হোটেলে স্বল্প পোশাক পরিহিত মানুষ দেখতে চাই না। যারা আমাদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতি অনুসরণ করে, তাদের সঙ্গে আমি আমার সন্তানদের রাখতে চাই। আর সৈকতে যেখানে মানুষ নগ্ন হয়ে সূর্যস্নান করে সেখানে সন্তানদের নিয়ে যাই না।

বড় বাজার : বিশ্ব মুসলিম পর্যটন সূচক বা গ্লোবাল মুসলিম ট্রাভেল ইনডেক্স বলছে, ২০২২ সালে হালাল পর্যটনের বাজার ছিল ২২০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের। এই হালাল পর্যটন নিয়ে অনেক কোম্পানিই এখন বিশেষভাবে কাজ করছে। আবার অনেকে এটাকে বিকল্প হিসেবে দেখছে।

এদিকে পশ্চিমা ভোক্তাদের লক্ষ্য করে বিশেষ ধরনের হোটেল গড়ে তোলার জন্য বেশ পরিচিত দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ। দেশটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হালাল পর্যটক আসা শুরু করেছে। দেশটির পর্যটনমন্ত্রী ড. আব্দুল্লা মাসুম বলেন, মালদ্বীপ একটি মুসলিম দেশ। এ কারণে শুরু থেকে আমাদের এখানে মুসলিম পর্যটন ব্যবস্থা রয়েছে। খাতটি খুবই দ্রুত বাড়ছে।

ড. আব্দুল্লা বলেন, স্থানীয় পর্যটকদের জন্য এখন এক চতুর্থাংশ হোটেলের বিছানা আলাদা করে রাখা হয়। আইন অনুযায়ী সব হোটেলে কর্মীদের নামাজের জন্য মসজিদ থাকা বাধ্যতামূলক। আর পর্যটকরা এখন আরও বেশি এই মসজিদ ব্যবহার করেন। আবার অনেক রিসোর্টে কক্ষ বরাদ্দ, কক্ষের নকশা ও খাবার রান্নার ক্ষেত্রে মুসলিমবান্ধব পরিবেশ রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com