বুর্জ আল খলিফা: বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন। একইসাথে সাত তারকা হোটেল, মসজিদ, বিনোদন কেন্দ্র, নাইট ক্লাব, অ্যাপার্টমেন্ট, অফিস এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্যবেক্ষণ ডেক হিসেবে বিখ্যাত। জুমেইরা সৈকত থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বুর্জ আল খলিফা ‘দুবাই টাওয়ার’ নামেও পরিচিত। ১৬০ তলাবিশিষ্ট ‘বুর্জ আল খলিফা’র মোট উচ্চতা ২,৭১৭ ফুট। এর অবকাঠামো রকেটের মতো। ভবনে ঘণ্টায় ৪০ মাইল গতিবেগে চলে এমন ৫৪টি এলিভেটর আছে। ভবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা ১২৪ তলার উপরে প্রকৃতি দর্শনের পর্যবেক্ষণ ডেক। যেখান থেকে আরবের একটি বৃহৎ অংশ পর্যবেক্ষণ করা যায়। এখানকার মানুষ ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে পান। তাই বুর্জ আল খলিফা ভ্রমণের ক্ষেত্রে সূর্যোদয়ের সময়টি বেছে নিতে ভুলবেন না।
বুর্জ আল আরব: বিশ্বের একমাত্র বিলাসবহুল সাত তারকা হোটেল বুর্জ আল আরব। ৩২১ মিটার লম্বা এই ভবনের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে অনেকটা পালতোলা জাহাজ বা তিমি মাছের মতো। যা জুমেরিয়া সৈকতের পাশে সমুদ্রের মাঝে একটি কৃত্রিম দ্বীপের উপর তৈরি করা হয়েছে। উচ্চতার দিক থেকে আকাশচুম্বি এই হোটেল বিশ্বের চতুর্থ সুউচ্চ ভবন। হোটেলের কক্ষে রয়েছে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের আইপ্যাড। এর মাধ্যমে সহজেই হোটেল এবং রেস্তোরাঁর নানা তথ্য জানতে পারবেন। হোটেলে প্রতিরাতের খরচ ৪,৫০০ দিরহাম।
দ্য ফাউন্টেন: রঙিন পানির নৃত্য দেখতে যেতে পারেন দ্য ফাউন্টেনে। বিশাল কৃত্রিম ওয়াটার ডান্স প্রায় সাড়ে ছয় হাজার সংগীতের সাথে তাল মিলিয়ে ৩-৬ মিনিট ব্যাপী হয়ে থাকে। সন্ধ্যায় এই ফাউন্টেনে যুক্ত হয় ৬,৬০০টি সুপার লাইট এবং ২৫টি রঙের প্রজেক্টর। যা পানির ধারাকে বহুরূপে প্রকাশ করে। এমনকি রঙিন আলোকরশ্মির ঝলমলে সেই আলো ২০ মাইলেরও বেশি দূর থেকে দেখা যায়। প্রত্যেক ১৫-২০ মিনিট পরপর এই ওয়াটার ডান্স দেখা যায়।
আটলান্টিস দ্য পাম: আটলান্টিস দ্য পাম হচ্ছে রিসোর্ট। যা দুবাইয়ের পাম জুমাইরাতে অবস্থিত। কৃত্রিম দ্বীপের ওপর তৈরি এটিই বিশ্বের প্রথম রিসোর্ট। দ্য পামে প্রবেশ করার পর মুহূর্ত থেকেই এর বিলাসিতা ও চোখ ধাঁধানো জৌলুস আপনার মন কেড়ে নেবে। অবসরে ছুটি কাটানোর জন্য এই রিসোর্ট খুবই জনপ্রিয়। হলিউডের অনেক তারকাই এখানে আসেন তাদের অবসর কাটাতে। খুব কাছ থেকে সেসব তারকাদের মুখোমুখি হতে পারেন আপনিও।
পাম আইল্যান্ড: পাম আইল্যান্ড বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় জায়গা। মানুষের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপগুলোর মধ্যে বেশি আলোড়ন সৃষ্টিকারী। পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সাগরের বুকে তৈরি করা হয়েছে তিনটি দ্বীপ। সমুদ্রের ওপর বালি দিয়ে তৈরি তিনটি দ্বীপ এমনভাবে বসানো হয়েছে, যা উপর থেকে দেখতে একটি পাম গাছের মতো মনে হয়। এখানে রয়েছে সারি সারি বিলাসবহুল সব হোটেল আর রিসোর্ট। রয়েছে নিজস্ব আবাসিক সৈকত, অ্যাপার্টমেন্ট, সুইমিং পুল, থিম পার্ক, রেস্তোরাঁ, শপিংমল, হাসপাতাল এবং খেলাধুলার সুবিধা।
স্কি দুবাই: স্কি দুবাই ২২,৫০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত। এটি মূলত একটি ইনডোর স্কি লাউঞ্জ। যেখানে পাওয়া যাবে পৃথিবীর সর্বপ্রথম ৪০০ মিটার দীর্ঘ ব্ল্যাক রান। লাউঞ্জের ভেতরে কিছু সময়ের জন্য পেতে পারেন অ্যান্টার্কটিকা ভ্রমণের অনুভূতি। স্কি দুবাইয়ের প্রধান আকর্ষণ জেনেটু পেঙ্গুইন, কিং পেঙ্গুইন। এখানে পেঙ্গুইনদের সাথে সাঁতার কাটাসহ কাচের বিশাল প্রাচীরের মাধ্যমে পেঙ্গুইনের মুখোমুখি হওয়া সত্যি অতুলনীয়। শূন্যের নিচে মাইনাস ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় বসেও আপনি মজা করে আইসক্রিম বা মগভর্তি গরম কফি খেতে পারেন। সে জন্য আপনাকে অবশ্যই বিশেষ এক ধরনের পোশাক পরতে হবে।
দুবাই ম্যারিনা: সংযুক্ত আরব আমিরাতের আরেক সুউচ্চ ভবন এটি। যেখানে আকাশছোঁয়া ভবন, বিলাসবহুল প্যাঁচানো ‘ক্যানন টাওয়ার’, সমুদ্র সৈকত। যা ট্যুরিস্টদের মন কেড়ে নেয় এক নিমিষেই। সুন্দর আবহাওয়ার একটি দিন বেছে ঘুরে আসতে পারেন দুবাই ম্যারিনা থেকে। এখানে ওয়াটার ট্যাক্সি নিয়ে ঘুরতে পারেন ম্যারিনার অন্যতম ক্রুজে। প্রিয়জনদের সাথে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে অসাধারণ একটি ডিনারও করে নিতে পারেন।