1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন

কক্সবাজার যেতে বাড়তি আনন্দ ট্রেন ভ্রমণ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৪

বছরে একবার হলেও পর্যটন নগরী কক্সবাজার যান না এমন ভ্রমণপিপাসু কম আছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে প্রতিনিয়ত ছুটে যাচ্ছেন পর্যটকেরা। সমুদ্রের ডেউয়ের গর্জনের সঙ্গে বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে ট্রেন ভ্রমণ। আগে ভ্রমণের উপায় ছিল সড়ক, নৌ ও আকাশ। এখন নতুন মাত্রা রেলপথ। সড়ক পথে ক্লান্তি নিয়ে যাতায়াত না করে এখন সবাই ছুটছেন ট্রেনযোগে। চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন যাওয়ার পথে ট্রেন থেকে দুপাশের সবুজ শ্যামল অপরূপ প্রকৃতি দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেন। দুপাশের মানুষ দাঁড়িয়ে ট্রেন দেখছেন। দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা কক্সবাজার এলাকার মানুষের স্বপ্নের আরেক নাম এই রেললাইন।

জীবনে কক্সবাজার অসংখ্যবার যাওয়া হলেও অনেকে ট্রেনে এই প্রথম। এ যেন বাড়তি আনন্দ, বাড়তি উন্মাদনা। অনেকের প্রথম ট্রেনযোগে কক্সবাজার যাওয়া। ট্রেনে প্রতিদিন যাত্রী হয়েছেন হাজারের বেশি মানুষ। এমন আনন্দঘন মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে অভিভূত সবাই। তারা বলছেন, এটি এক অন্যরকম অনুভূতি। যা ভাষায় প্রকাশ করে বোঝানো যায় না।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পৌঁছানো পর্যন্ত ট্রেনে অনেক আনন্দ করেছেন সবাই। কক্সবাজার স্টেশনে নেমে ছবি তুলতে কেউ ভুল করেননি। অনেক সুন্দর নবনির্মিত এই আইকনিক রেলস্টেশন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সৈকত ভ্রমণে আসেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজিম। আইকনিক রেলস্টেশন দেখে তিনি বলেন, ‘এত সুন্দর রেলস্টেশন দেশের কোথাও নেই। ট্রেনে ঢাকা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণ নিরাপদ এবং আরামদায়ক মনে হয়েছে।’

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়ায় ২৯ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে ঝিনুক আকৃতির দৃষ্টিনন্দন ছয় তলাবিশিষ্ট আইকনিক রেলস্টেশন। ট্রেন চালুর সুফল তুলে ধরে ট্রেনের যাত্রী তোফায়েল আহম্মদ রানা বলেন, ‘কক্সবাজারে ট্রেন চালু ও দৃষ্টিনন্দন রেলস্টেশন নির্মাণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। প্রথমবার চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ট্রেনে কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ পেয়ে গর্বিত। বাসে দীর্ঘ ভ্রমণ ও যানজটের কারণে অনেক সময় নষ্ট হয়। ফলে পর্যটকেরা কক্সবাজারের অনেক স্থান ঘুরে দেখতে পারেন না। এখন আর সেসব সমস্যা থাকবে না।’

যাত্রী ফিরোজ মাহমুদ বলেন, ‘ট্রেন চালুর মাধ্যমে কক্সবাজারে পর্যটক আগের চেয়ে অনেক বাড়বে। এ ছাড়া নতুন আইকনিক রেলস্টেশনও একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে।’ আলী আকবর বলেন, ‘নতুন রেলপথ, নতুন রেলস্টেশন, নতুন ট্রেন। স্টেশন ছাড়ার পর ফাঁকা মাঠ, এরপর পাহাড়ের মধ্য দিয়ে ট্রেন ছুটে যাওয়া। এ দৃশ্য নিজের চোখে দেখাই অন্যরকম এক অনুভূতি।’

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়। চট্টগ্রাম পৌঁছাবে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে। ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি দিয়ে রাত ৪টায় কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। কক্সবাজার পৌঁছাবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ রাজধানী থেকে পর্যটন নগরীতে যেতে সময় লাগবে মাত্র ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিট। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে যাত্রীবাহী ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।

কক্সবাজার অস্টার ইকো হোটেলের কর্মকর্তা মো. সোহেল বলেন, ‘কক্সবাজারে ট্রেন চালু হওয়ায় পর্যটক বেড়ে গেছে। এমনিতে বছরের এই সময়ে পর্যটকের চাপ থাকে। তবে এ বছর ট্রেনের কারণে বেশি পর্যটক আসছেন।’

জানা গেছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা। এসি সিটের ভাড়া ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ভাড়া ২ হাজার ৩৮০ টাকা।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া ৬৯৬ টাকা। ঢাকা থেকে রাতের ট্রেন ধরে সকালে কক্সবাজার নেমে সারাদিন সমুদ্রসৈকত বা দর্শনীয় স্থান ঘুরে রাতের ট্রেনে আবার ঢাকায় ফেরার সুযোগ রাখা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। রেলস্টেশনে আছে তারকা মানের হোটেল, শপিং মল, রেস্তোরাঁ, শিশুযত্ন কেন্দ্র, লাগেজ রাখার লকার, ডাকঘর, কনভেনশন সেন্টার, তথ্যকেন্দ্র, এটিএম বুথ, প্রার্থনার স্থানসহ অত্যাধুনিক সুবিধা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com