মারিনা বে স্যান্ডস
সিঙ্গাপুর একটি অত্যাধুনিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ শহর। দেশটিতে পর্যটকদের জন্য রয়েছে নানান আকর্ষণীয় গন্তব্য। এর অন্যতম হলো মারিনা বে স্যান্ডস। এটি একটি আকাশচুম্বী হোটেল ও রিসোর্ট কমপ্লেক্স। এর ইনফিনিটি পুল সমৃদ্ধ ছাদ থেকে পুরো শহরের মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। এ ছাড়া রয়েছে একটি শপিং মল, থিয়েটার, গ্যালারি এবং ক্যাসিনো।
গার্ডেন্স বাই ডট বে
১০৫ হেক্টর আয়তনের উদ্যান গার্ডেন্স বাই ডট বে। সেখানে রয়েছে বে সাউথ, বে ইস্ট ও বে সেন্ট্রাল। এর ফ্লাওয়ার ডোম বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাচের গ্রিনহাউস হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া রাতে সুপার ট্রি গ্রোভের আলোকসজ্জা পর্যটকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। প্রকৃতি, প্রযুক্তি ও শিল্পের সমন্বয়ে একটি স্বপ্নময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এখানে। এই উদ্যানে ১৮টি সুপার ট্রি রয়েছে। যার মধ্যে ১২টি একসঙ্গে গ্রোভে অবস্থিত। এই সুপার ট্রিগুলোর উচ্চতা ২৫ থেকে ৫০ মিটার পর্যন্ত। এখানে ২০০টির বেশি প্রজাতির প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার উদ্ভিদ আছে। সুপার ট্রিগুলোর ওপরে স্থাপিত হয়েছে ফটোভোলটাইক কোষ। সেগুলো সূর্যালোক থেকে শক্তি সংগ্রহ করে। সেই শক্তি রাতে আলোকসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। সুপার ট্রি গ্রোভের মধ্যে অবস্থিত একটি ২২ মিটার উঁচু আকাশপথ। এ পথে দর্শকেরা গার্ডেনের ওপর দিয়ে হাঁটার এক দারুণ অভিজ্ঞতা পেয়ে থাকে।
সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার
এটি ১৬৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত একটি বিশাল ফেরিস হুইল। এটি বিশ্বের উচ্চতর পর্যবেক্ষণ চাকা। এর কেবিন সংখ্যা ২৮। প্রতিটি কেবিনে ২৮ জন যাত্রী বসা যায়। সেখানে বসে সিঙ্গাপুর শহরের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। স্পষ্ট আবহাওয়ায় এ হুইল থেকে চেংগি এয়ারপোর্ট, সেন্টোসা দ্বীপ এমনকি মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশও দেখা যায়। এটি সিঙ্গাপুরের মারিনা বে এলাকায় অবস্থিত। এটি শহরের আকাশরেখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় আকর্ষণ।
সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার। ছবি: উইকিপিডিয়া
জুয়েল চেংগি এয়ারপোর্ট
এই এয়ারপোর্ট নেচার থিমযুক্ত এন্টারটেইনমেন্ট ও রিটেইল কমপ্লেক্স। এর কেন্দ্রে রয়েছে বিশ্বের উচ্চতম ইনডোর জলপ্রপাত, রেইন ভর্টেক্স এবং সিসিডো ফরেস্ট ভ্যালি নামে একটি পাঁচতলা উদ্যান। এই উদ্যান ২২ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এতে ১২০ প্রজাতির প্রায় ৩ হাজার গাছ ও ৬০ হাজার গুল্ম রয়েছে। এগুলো পৃথিবীর উচ্চ-অক্ষাংশীয় ট্রপিক্যাল বনাঞ্চল থেকে সংগৃহীত। এদিকে রেইন ভর্টেক্স জলপ্রপাতটি প্রতি মিনিটে প্রায় ৩৭ হাজার ৮৫০ লিটার বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে নিচে একটি পুলে সংরক্ষণ করে।
নাইট সাফারি
এই নাইট সাফারি বিশ্বের প্রথম নিশাচর প্রাণী উদ্যান। এখানে রাতে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী দেখা যায়। এটি দেশটির মানদাই এলাকায় প্রায় ৩৫ হেক্টরজুড়ে বিস্তৃত। এখানে ৯০টির বেশি প্রজাতির প্রায় ৯০০টি প্রাণী আছে। প্রতিবছর প্রায় ১৩ লাখ পর্যটক এখানে আসে। দর্শনার্থীরা ইকো-ফ্রেন্ডলি ট্রামে করে নির্দিষ্ট পথে ঘুরে ঘুরে প্রাণীদের দেখে। কিছু সাফারিতে হেঁটে নির্দিষ্ট ট্রেইল ধরে বন্য প্রাণী দেখা যায়। এখানে প্রাণীদের বিরক্ত না করতে বিশেষ ধরনের নরম আলো ব্যবহার করা হয়।
ক্লার্ক কুয়ে
সিঙ্গাপুরের উজ্জ্বল রিভারফ্রন্ট হাব ক্লার্ক কুয়ে। এটি সিঙ্গাপুর নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক বন্দরভূমি। এখানে আছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, নাইটক্লাব এবং পানশালা। এখানে সিঙ্গাপুর নদীতে নৌকাভ্রমণের সুযোগ আছে। ওয়াটারফ্রন্টে বসে স্থানীয় খাবার খাওয়া যায়। এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী বুম বোটে ৪০ মিনিটের রিভার ক্রুজে মেরলাইনের দৃশ্য উপভোগের সুযোগ রয়েছে। ক্লার্ক কুয়ে সেন্ট্রাল মলে ছোটখাটো বুটিক ও ক্র্যাফট স্টল, আর্ট ইনস্টলেশন এবং ঋতুভিত্তিক বাজার ঘুরে দেখা সম্ভব।
হাজি লেন
কাম্পং গ্লাম এলাকায় অবস্থিত একটি সরু গলির নাম হাজি লেন। ১৮০০ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত এটি হজ যাত্রার যাত্রীদের আবাস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে এই স্থান বুটিক স্টোর, ট্রেন্ডি ক্যাফে এবং রঙিন দেয়ালচিত্রের জন্য পরিচিত। এটি ফটোগ্রাফি এবং শিল্পপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা। আর্টওয়ার্কগুলো ফুল-পাতা, পোর্ট্রেট বা ঐতিহাসিক থিমে তৈরি। এগুলো ইনস্টাগ্রাম ব্যাকড্রপ হিসেবে জনপ্রিয়।
সূত্র: এমএসএন