1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৭ অপরাহ্ন

বর্ষায় ঘুরে আসুন ৮ দৃষ্টিনন্দন স্থান

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫

বর্ষা শুধু একটি ঋতু নয় বরং এক অভিজ্ঞান। সবুজে ভেজা, কাদায় লেপ্টে থাকা স্মৃতি আর জলের গন্ধে পূর্ণ গল্পের সূচনা। এই গল্প আরও রঙিন হয়ে ধরা দেয়, যদি তা শুরু হয় বর্ষাকালীন ভ্রমণ দিয়ে। বর্ষার জলে নদী ফুলেফেঁপে ওঠে, পাহাড়ি ঝরনা গর্জে ওঠে, সবুজ পাতার ঘ্রাণে মন ভরে যায়। এমন সময় প্রকৃতির অনিন্দ্য সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দেশের কিছু গন্তব্য যেন হয়ে ওঠে আরও মোহনীয়।

চলুন জেনে নিই বর্ষায় ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের আটটি দৃষ্টিনন্দন স্থান সম্পর্কে—

সাজেক ভ্যালি
মেঘের রাজ্য নামে পরিচিত খাগড়াছড়ির সাজেক ভ্যালি বর্ষায় হয়ে ওঠে স্বপ্নীল। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে ওপরে উঠতে উঠতে হঠাৎ মেঘ এসে ছুঁয়ে যাবে। কুয়াশার পর্দা সরিয়ে দেখা যাবে দূরের কোনো গ্রাম। পাইন গাছগুলো বর্ষার জলে সজীব হয়ে ওঠে। রুইলাই নদী নিচে শান্ত ভাবে প্রবাহিত হয়। মেঘ কখনো পাহাড়ের মাথায়, কখনো আমাদের কাঁধে নেমে আসে। যেন প্রকৃতি তার সবচেয়ে আপন রূপে ধরা দেয়।

জাফলং
সিলেটের জাফলং মানেই পাহাড়, নদী ও পাথরের মিলনমেলা। বর্ষায় ভারত থেকে নেমে আসা ঝরনার জল পিয়াইন নদীতে মিশে তৈরি করে অনন্য সৌন্দর্য। চারপাশে কুয়াশা, ঝিরিঝিরি বৃষ্টির শব্দ আর পাথরের বুক চিরে বয়ে চলা নদীর স্রোত যেন মন কেড়ে নেয়।

বিছনাকান্দি
পাহাড়ের কোল ঘেঁষে অবস্থিত সিলেটের এ স্থান বর্ষায় হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। পানি বেড়ে গেলে নদীর নিচে থাকা পাথরগুলো দেখা যায় ধোঁয়াটে নীলাভ রঙে। চারদিকে পাহাড়ি ঝরনা, সবুজ বন আর মেঘে ঢাকা আকাশ। প্রকৃতি যেন বলেই ওঠে, ‘আরও কিছুক্ষণ থেকে যাও’।

রাতারগুল
বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন সিলেটের রাতারগুল বর্ষায় হয়ে ওঠে জলের রাজ্য। গাছের বুক পর্যন্ত পানি উঠে যাওয়ায় নৌকায় চড়ে বনভ্রমণ এক অনন্য অভিজ্ঞতা। নির্জনতা, পাখির ডাক আর মাঝির গান ও বৈঠার শব্দ মিলে যেন সৃষ্টি করে অনবদ্য সংগীত।

লাউয়াছড়া
বর্ষার স্যাঁতসেঁতে মাটির গন্ধ আর ভেজা পাতার ফিসফিসে শব্দ এখানে তৈরি করে মায়াময় পরিবেশ। হেঁটে চলা সবুজ গহীনে, মাঝে মাঝে বৃষ্টির ছাঁট আর অসংখ্য পাখির ডাক প্রকৃতিকে অনুভব করতে চাইলে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মতো জায়গা দ্বিতীয়টি নেই।

হাইল ও টাঙ্গুয়ার হাওর
বর্ষাকালে সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চল পরিণত হয় জলপরী রাজ্যে। পানির বিস্তৃতি মিশে যায় আকাশে। নৌকায় চড়ে গ্রাম পেরিয়ে যাওয়া, থেমে থেমে ছবি তোলা কিংবা জলের ওপর আকাশ দেখার আনন্দ স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকে।

নাফাখুম ঝরনা
দেশের অন্যতম সুন্দর ঝরনাগুলোর একটি বান্দরবানের নাফাখুম বর্ষায় হয়ে ওঠে উত্তাল। পাহাড়ের বুক চিরে জলরাশি গড়িয়ে পড়ে তীব্র শব্দে। ঝরনায় পৌঁছাতে হয় ট্রেকিং করে, যা ভ্রমণপিপাসুদের জন্য রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। ঝরনার জলে পা ডুবিয়ে থাকা এক ধরনের ধ্যানের মতোই প্রশান্তি দেয়। তবে বর্ষায় যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা জরুরি। কারণ বৃষ্টির ফলে নদীতে স্রোত বেড়ে যায়, ট্রেকিং পথ কাদাময় ও পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তাই উপযুক্ত প্রস্তুতি এবং অভিজ্ঞ গাইড সঙ্গে নেওয়া জরুরি। অনেকে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর নাফাখুম ভ্রমণের জন্য বেশি উপযোগী মনে করেন। কারণ তখন ঝরনাটির সৌন্দর্য বজায় থাকে এবং যাতায়াত অপেক্ষাকৃত নিরাপদ হয়।

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত
দেশের সবচেয়ে বড় ঝরনাগুলোর একটি মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ড বর্ষায় হয়ে ওঠে প্রকৃতির এক গর্জনময় প্রদর্শনী। চারপাশে পাহাড়ি বন, পাথর আর ঝরনার জলপ্রবাহ দেখে মনে হয়, প্রকৃতির সামনে আমরা কত ক্ষুদ্র।

ভ্রমণে করণীয়
বর্ষাকালে ভ্রমণে গেলে অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে ছাতা বা রেইন কোট। মোবাইল ও ক্যামেরা বাঁচাতে ব্যবহার করুন পানিরোধী ব্যাগ। পিচ্ছিল পথে চলাচলের জন্য উপযুক্ত লাঠি, রশি, স্যান্ডেল বা ট্রেকিং জুতা ব্যবহার করুন। সঙ্গে রাখুন হালকা শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে ভ্রমণের পরিকল্পনা করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com