1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৫ অপরাহ্ন

থামেলের দিনরাত্রি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

ঘড়ির কাঁটায় বাংলাদেশ সময় দুপুর একটা বেজে পনেরো মিনিট আর নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর একটায় আমরা নেপালের কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আছি। সকাল বেলা বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৭০৭ চেপে হিমালয়ার কন্যার কাছে এসেছি। আসার অবশ্য কারণও আছে।

আমরা এসেছি নেপাল

বাংলাদেশ ইয়ুথ কনক্লেভ-এর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমরা নেপাল এসেছি। দেশটির এয়ারপোর্টে আমাদের নেপালের ঐতিহ্যবাহী টুপি আর উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেন। উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়ক অভিনব দাদা। এই আয়োজনে অংশ নিতে আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে আরও অনেকেই এসেছেন।

শুরুতেই আমরা একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হলাম। এরপর এয়ারপোর্ট থেকেই মোবাইলের সিম কিনলাম। অনুসাঙ্গিক সব কাজ শেষ করে আমরা চার চাকার বাহনে উঠলাম। উষ্ণ অভ্যর্থনা আমাদের বেশ ভালোই লেগেছিল। নেপাল আসার পূর্বে আমরা ভেবেছিলাম নেপালে হয়তো খুব ঠাণ্ডা পরে। তবে এতটা ঠাণ্ডা অনুভূত হলো না। আমরা এগিয়ে চললাম হোটেলের দিকে। চলতি পথে আমাদের দেশের মতো রাস্তায় যানজটের দেখা পেলাম। ধীর গতিতে চলছিল আমাদের বাহনটি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা চলে এলাম থামেলের প্রান্তে। থামেল জায়গাটি আমাদের শাঁখারী বাজার বা লক্ষ্মী বাজারের মতোই।

বলা যায় যেকোনো পুরোনো জেলা শহরের বড় বাজার এলাকাটি যেমন, তেমনই। কিন্তু অনেক কালারফুল। পথে পথে পর্যটকে ঠাসা। অধিকাংশকে দেখে মনে হলো তারা পশ্চিমা পর্যটক। সেখানে ছোট ছোট দোকান ঘর এবং হরেক রকম পসরা সাজানো রয়েছে। আমি এক দৃষ্টিতে গাড়ির বাইরে দিকে তাকিয়ে ছিলাম আর অনুভব করছিলাম থামেল শহরের স্পন্দন। সেখানকার অধিকাংশ দোকানে রয়েছে হস্তশিল্পের জিনিস। রয়েছে পিতলের, তামার জিনিস। পাথর, মাটি, শোলা ও কাঠসহ বিভিন্ন সহজলভ্য উপাদানেরই তৈরি এসব জিনিস। হাতের নিখুঁত কারুকাজ, রঙের ছটা, তুলির আঁচড়, ঢালাইয়ের পেটা কাজ প্রভৃতি বিভিন্নভাবে শিল্প সৃষ্টি হয়েছে।

হঠাৎ অভিনব দা ঘোষণা দিলেন আমরা হোটেলের কাছে চলে এসেছি। এখন গাড়ি থেকে নেমে সামান্য একটু পথ পায়ে হেঁটে যেতে হবে। আমরা গাড়ি থেকে নেমে গলির পথে এগিয়ে চললাম। গলির ভেতরে ছোট ছোট দোকান রয়েছে, যার অধিকাংশই নারীরা পরিচালনা করছেন। আমরা প্রবেশ করলাম সাতকার হোটেল এন্ড স্পাতে। প্রবেশের পর আমাদের মাঝে ওয়েলকাম ড্রিংক পরিবেশন করা হলো। মনে হলো আসল তরমুজের স্বাদ।

এরপর আমাদের প্রত্যেককে কক্ষের চাবি বুঝিয়ে দেয়া হলো। এরপর অস্থায়ী ডেরায় প্রবেশ করলাম। এটি বেশ ছিমছাম গোছানো ছিল। দ্রুত রিফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবারের জন্য বের হয়ে পড়লাম। নেপালে স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটার সময় নেপালি এক খাবার হোটেলে এসে বসলাম। যার যেমন পছন্দ তেমনি মেন্যু অর্ডার করলেন। আমরা নেপালি ভেজ থালি অর্ডার করলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের মাঝে খাবার পরিবেশন করা হলো। এক থালার মধ্যে সবকিছু অল্প অল্প করে সাজানো–শাঁক, আলু ভর্তা, ডাল, বরবটি আলু দিয়ে তরকারি, বাদামের তরকারি, আঁচার, দই ও খাঁটি ঘি। ক্ষুধায় পেট জ্বালাপোড়া করছিল, সেই সকালে দানাপানি পড়েছিল। তাই আর ভদ্রতা না করে খাওয়া শুরু করে দিলাম। খাবার যেন নয় অমৃত খাচ্ছি।

নেপালিদের অথেনটিক খাবারের রেস্টুরেন্ট এটি। নেপালিরা ফ্রেশ রান্না করে। তারা বাসি খাবার রাখে না, উচ্ছিষ্ট খায় না একদমই। বেঁচে যাওয়া খাবার ডিশে থেকে গেলে বা হাতের স্পর্শ ছাড়া বেড়ে নেওয়া হলে তা-ও উচ্ছিষ্ট বলে ধরে নেন তারা। এজন্য খাবার আসতে সবখানেই সময় লাগে একটু বেশি।

এই অবকাশে নানা রকম গল্পগুজবে সময় কাটলো আমাদের। একদল পরিকল্পনা করল নাগরকোট যাবে, আবার কেউ যাবে আবার চন্দ্রা গিরি হিল। দুপুরের খাবারের শেষ করে আমারা বের হয়ে পড়লাম থামেলের পথে প্রান্তরে। তখন সূর্যাস্তের সময়। পাহাড়ের উপত্যকার শহর। রাত নামে দ্রুত, শহর ঘুমিয়ে পড়ে আগে আগে; তখন জেগে ওঠে অন্যরকম আরেকটি শহর। আমরা পায়ে হেঁটে এগিয়ে চলছি। থামেলের পথে প্রান্তরে বিভিন্ন ধরনের দোকানের দেখা পাওয়া যায়। এসব দোকানগুলোতে শীতের জামা, পিতলের সামগ্রী, হিমালয় ট্র্যাকিং করার সামগ্রী ও বিভিন্ন ধরনের চা বিক্রি হয়।

পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য সব কিছুই পাওয়া যায় এই থামেলে। আমরা একটি দোকানে প্রবেশ করলাম। এটিতে বড় আকৃতির গৃহসজ্জা সামগ্রী বিক্রি হয়, সবই পিতলের। কিছু নিকেল করা। আমাদের দেশের এলিফ্যান্ট রোডের পিতলের দোকানগুলোর মতোই। অসাধারণ কারুকাজ দেখলেই যে কারও কিনতে ইচ্ছে হবে। এরপর ভালো কিছু পাওয়ার আশায় অন্য দোকানের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম, এবার একটি মেডিটেশন বোল দেখে চোখ আটকে গেলো। মেডিটেশন বোল-এর শব্দ আপনাকে নিয়ে যাবে এক অনন্য ভুবনে। দামাদামি করে কিনে নিলাম।

রাতের গভীরতা বাড়ছে পাহাড়ের উপত্যকার শহরে। রাতের গভীরতা বারার সাথে সাথে দিনের থামেলের চিত্র পরিবর্তিত হতে লাগল। তখন সে এক অন্য থামেল। বিদেশিদের আনাগোনা বাড়ছে। পাব ও নাইট ক্লাব খুলে গেছে। ক্লাবগুলোর বাইরে মানুষের ভিড়। মিউজিকের উত্তাল তরঙ্গে যে কাউকেই ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। থামেল শহরের পুরোনো অংশ। ঘরবাড়ি অধিকাংশই পুরোনো। আমাদের দেশের জমিদার বাড়িগুলোর মতো। ভবনগুলোর প্রধান দরজা কাঠের, নকশা করা। মনে হয় একেকটি রাজবাড়ির প্রবেশদ্বার। এরই রেপ্লিকা (প্রায় অবিকল নকল) স্বর্গের দরজা নামে এখানকার দোকানে বিক্রি হয়। স্থানে স্থানে সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের রঙিন কাগজ বা পলিমার দড়িতে ঝুলিয়ে টানানো।

এরপর সবাই ছবি বিক্রির দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। বেশির ভাগ ছবিই হিমালয়, হিমালয়ের পাদদেশে জনজীবন, বুদ্ধদেব ও বুদ্ধচক্রের। হিমালয়ে সূর্যোদয়, পাহাড়ে চমরি গাইয়ের দল, পাহাড়ি পরিশ্রমী মানুষের সরল চেহারা, তাদের জীবিকার সুকঠিন সংগ্রামের ছবি…। একটি ছবি দেখে গা ছমছম করে। জনমানবহীন পাহাড়ে একজন মানুষ গবাদিপশু নিয়ে একটি সাঁকো পার হচ্ছেন। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে চলেছেন। নিচে গভীর খাঁড়ি (উপসাগর বা মোহনার সংকীর্ণ অংশ)। পাহাড়ের দুই অংশ যুক্ত আছে একটি মোটা গাছকে শুইয়ে দিয়ে। একহারা গাছের, খুব পরিচিত গাছ হয়তো হবে না, পাহাড়ি জঙ্গলের গাছের গুঁড়ি, আবলুস গাছের মতোই অনেকটা, সেটাই সাঁকো। সূর্য অস্ত যাচ্ছে। সূর্যাস্তে হলদে, কমলা ও সিঁদুর রঙের ব্যবহার ছবিতে আলাদা ঔজ্জ্বল্য যোগ করেছে। তবে এই ছবিগুলোর দাম একটু বেশিই মনে হলো। দাম দিয়ে কিনলেও আপনি ঠকবেন না কারণ একটি চিত্রকর্মের সঙ্গে অন্যটির তফাৎ দৃশ্যমান।

আমরা একটি বুদ্ধচক্র কিনলাম। কাপড়ের ওপর অঙ্কিত। দোকানি বোর্ডের শক্ত রোলের মধ্যে ছবিটি ঢুকিয়ে সুন্দর প্যাকেট করলেন। একজন শিল্পী পাশে কাজ করছিলেন। ক্যানভাসে তিনি আঠা ব্রাশ করে তাতে একটি ২০-৩০ ইঞ্চি মাপের পাতলা টিস্যুর মতো কাগজ পেস্ট করে শুকিয়ে একটি রাফ টেকচার তৈরি করেছেন আগেই। সেটার ওপরে মাউন্টেইন ট্র্যাকিংয়ের ছবি আঁকছেন। আমরা এগিয়ে চললাম এবার অ্যারোমার দোকানে ঢুঁ মারলাম। হাঁতে তৈরি অনেক ধরনের সাবানের দেখা পেলাম। গন্ধও খুব ভালো, তবে দাম একটু বেশি মনে হলো; পর্যটক এলাকা বলে হয়তো দাম একটু বেশিই। গোট মিল্কের সাবান কিনালাম। গোট মিল্কের সাবানে মেঘের মতো অতিমোহনীয় পেলব ফেনা হয় অল্পতেই।

পাশের দোকান থেকে সানন্দা তার বন্ধুদের জন্য হাতির দাঁতের তৈরি চাবির রিং কিনতে লাগলো। দামে সস্তা দেখে বেশ কয়েকটি  চাবির রিং কিনলো সানান্দা। কারণ নেপালে আসার আগেই সবাই আবদার করেছে তাদের জন্য গিফট আনতে হবেই। অনেক সময় ধরে পথে পথে আছি। এবার পেটে কিছু দেয়ার প্রয়োজন। ঢুঁকে পড়লাম একটি কফি সপে। চলতি পথে একজন কফিশপের নাম সাজেস্ট করেছিলেন, খুঁজে পেতে একটু বেগ পেতে হলো। বাংলাদেশের টাকার চেয়ে নেপালি রুপির বিনিময় মূল্য কিছুটা কম। তাই অনেক কিছু কেনাকাটায় খুব কষ্ট মনে হয় না। নেপালি কফি, রেগুলারভাবে তৈরি করা। নেসক্যাফের মতো এত মিহি না, তলানিতেও থেকে যায়, সম্পূর্ণটা দ্রবীভূত হয় না। আমার কফি শেষ করে বের হলাম আবার।

এবারে আমরা একটি চায়ের দোকানে প্রবেশ করলাম। দোকানদার আমাদের কে বিভিন্ন ধরনের চায়ের সমাহার দেখালেন। লেমন টি, জিঞ্জির টি, গ্রিন টি, ইয়গি টি, হোয়াইট টি, রেগুলার টি… কি সুন্দর ফ্লেভার। আমরা বেশ কয়েক প্যাকেট কিনে  নিলাম। নেপালের পাহাড়ে উৎপন্ন সেরা চা নাকি এটাই।

এরপর আমরা ঘুরতে ঘুরতে আরেকটি দিকে চলে এলাম। এখানে পাব, ডান্সবার, নাইট ক্লাবের ছড়াছড়ি। সাহেব-মেমদের আনাগোনা বেশি বেশি। নানা ভাষার মানুষের উচ্ছ্বাস ভরা আলোচনার টুকরো কানে আসে। জার্মান, সুইডিশ, নরওয়েজিয়ান ভাষাভাষী অনেক বেশি। এই এলাকাটি অনেক বেশি আলোকোজ্জ্বল, গানের জোর আওয়াজ ভেসে আসে বাইরেও। নেই কোনো বিশৃঙ্খলা যে যার মতো আনন্দ ফুর্তিতে মেতে আছে। দারিদ্র্য ও অবকাঠামোগতভাবে আমাদের চেয়ে পিছিয়ে পড়া একটি দেশ হলেও নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গীতে আমাদের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে তারা।

এই শহরে পর্যটকের অভাব নেই। বিশেষ করে থামেলে তো বিদেশিই বেশি। সেই বিদেশি পর্যটকের মধ্যে তরুণী, বৃদ্ধা, সুন্দরী, অসুন্দরী সব রকম নারীই আছেন। পোশাকও তাদের বিচিত্র রকম। শর্টস, স্লিভলেসও পরছেন তারা দেদার। কিন্তু শিশু, কিশোর, তরুণ, প্রবীণ কোনো বয়সের কোনো অবস্থানের নেপালি পুরুষই তাদের প্রতি কটাক্ষ, ইশারা, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, মুগ্ধতা কিছুই প্রকাশ করছে না। তারা নির্বিকার। আমি শুধু ভাবছিলাম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতবিক্ষত একটি দেশ অথচ সেই দেশের রাজধানীতে নারীরা কত স্বাধীন, কর্মচঞ্চল। রাতের গভীরতা বাড়ছে আর প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে পাচ্ছে রাতের থামেল। পরের দিন নতুন গন্তব্য পথে যেতে হবে তাই দেরি না করে আমরা ফিরে গেলাম হোটেল পানে।

কিভাবে যাবেন

বাংলাদেশ থেকে নেপালে বিমানযোগে যাওয়া যায় । যাওয়া আসার খরচ টিকেট নিয়ে ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকার মতো পরবে। আগে ভাগে টিকেট কাটতে পারলে ১৭ হাজার টাকার মতো পরবে। বাই রোডে নেপাল যেতে হলে খরচ কমে যাবে অনেকটা। সেক্ষেত্রে ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হবে যেখানে পোর্টের নাম দিতে হবে চ্যাংরাবান্ধা বা রানীগঞ্জ। এখানে বা বিমানে কোনোটাতেই নেপালের ইমিগ্রেশনে কোনো ভিসা ফি-এর দরকার নেই। যদিনা আপনি একই বছরে দু‘বার ভ্রমণ করতে চান। এস আর পরিবহন সরাসরি বাই রোডে নেপালের বাসের সেবা দিচ্ছে। চাইলে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ভারতের বর্ডার পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে নেপালের কাঁকড়ভিটা পর্যন্ত যেতে পারেন। এতে খরচ পরবে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকার মতো।

কোথায় থাকবেন

নেপালে থাকতে হলে থামেলের চেয়ে উপযুক্ত স্থান আর দ্বিতীয়টি নেই। কারণ পুরো থামেলের গলি ঘুপচিতে অসংখ্য হোটেল/ ব্যাকপ্যাকার হোস্টেল রয়েছে। ১০০০ থেকে ১৮০০ রুপির মধ্যে ভালো ডাবল রুমের বাজেট হোটেল এখানে পাওয়া সম্ভব। ৪০০ রুপিতে সিঙ্গেল রুমের হোটেলও এখানে রয়েছে। বাজেট ৩০০০ রুপি বা তার বেশি হলে ডিলাক্স রুমের খাবারসহ অনেক ভালো হোটেল পাওয়া যায়। তবে থামেলের হোটেল এবং তাদের দরদাম ও চেহারা এতো বেশি বৈচিত্র্যময় যে আগে থেকে বুকিং না দিয়ে বরং পায়ে হেঁটে ঘুরে কয়েকটি হোটেল ঘুরে যাচাই বাছাই করলে সস্তায় ভালো হোটেল পাওয়া সম্ভব।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com