বিভিন্ন দেশের দর্শনীয় জায়গা ঘুরে চমৎকার সব ভিডিও করেন ট্রাভেল ভ্লগার মুহাম্মদ রবিন। ডাকনাম রোহান। অল্প কদিনেই সেসব ভিডিও মানুষের মন জয় করেছে। পেশাদার ট্রাভেল ভ্লগার তিনি। স্ত্রী, সন্তান, মা, বাবাসহ থাকেন কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে।
শুরুর গল্প
এক বন্ধু একবার ক্যামেরা তাক করে বলেছিল, কিছু একটা বল। ‘হ্যালো গাইস কেমন আছেন? ইটস মি, রোহান’। মজার ছলে এমনই বলেছিলেন রোহান। বলার ধরনটা বন্ধুর খুব পছন্দ হয়েছিল বলে তাঁকে ভ্লগ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। কিছুটা কৌতূহল নিয়ে ওই দিনই রোহান একটি ভ্লগ তৈরি করেন। এভাবেই তাঁর শুরু। আর এখন তো পেশাদার ট্রাভেল ভ্লগার হয়ে গেছেন তিনি। এ পর্যন্ত রোহান ৩০টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। আর ভ্লগ বানিয়েছেন ২৫টি দেশে গিয়ে। দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, জর্জিয়া, উজবেকিস্তান, আজারবাইজান উল্লেখযোগ্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
রোহানের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলের নাম রোহান ভ্লগ। ফেসবুকে ৫ লাখ ২০ হাজারের বেশি অনুসারী রয়েছে তাঁর। আর ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার আছে প্রায় ৩৪ হাজার। প্রতি মাসে তাঁর ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে ৩০ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়। ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে মাসে তাঁর আয় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার ডলার। অনেক সময় তা ৫ হাজার ডলারও ছাড়িয়ে যায়।
শিখেছেন যেভাবে
ভ্লগ করতে করতেই এর কলাকৌশল শিখেছেন রোহান। বলা যায়, ভুল থেকে শিখেছেন তিনি। কখনো গুগল, কখনোবা ইউটিউবের সাহায্য নিয়েছেন। অনেকে ভিডিও দেখে ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। পরে সেগুলো শুধরে নিয়েছেন তিনি। সাধারণ বাচনভঙ্গি এবং যেকোনো বিষয় সম্পর্কে সরল কথাবার্তাই তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সেরা তিন
রোহানের ভাইরাল হওয়া তিনটি ভিডিও হলো, উজবেকিস্তানের চেরিবাগান, ইন্দোনেশিয়ার গ্রাম এবং উজবেকিস্তানের এক বন্ধুর সঙ্গে যৌথ ভ্লগ। রোহানের তৈরি রিলস দেখে উজবেকিস্তানের সেই তরুণী যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে। পরে তাঁদের দেখা হয় ইন্দোনেশিয়ায়। দেশের বাইরে রোহানের পছন্দের তিনটি দেশ হলো উজবেকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও আজারবাইজান।
ভাষা কোনো সমস্যা নয়
অনেকে রোহানের ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে অনেক তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। তবে এসব একদমই পাত্তা দেন না তিনি। রোহান বলেন, ‘আমি বিদেশে ঘুরে একটি বিষয় খেয়াল করলাম, তা হলো গরিব দেশগুলোতে ইংরেজি চর্চা বেশি। উন্নত দেশগুলোতে ইংরেজি নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই। তারা নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি বেশ সংবেদনশীল।’
বাংলাদেশ হোক পর্যটনবান্ধব
দেশের পর্যটনশিল্পের কথা বলতে গিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন রোহান। নিজের দেখা বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেন আমাদের সঙ্গে। তিনি জানান, দেশকে পর্যটনবান্ধব করতে প্রথম দরকার দেশে বিদেশি পর্যটকদের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা। তারপর নিজেদের মানসিকতা এবং রুচির উন্নতি করা প্রয়োজন। বিদেশি পর্যটকদের নিরাপদ পরিবেশ উপহার দিতে হবে। এর সঙ্গে কমাতে হবে বিভিন্ন ধরনের চার্জ।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান