সাদা পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে স্বচ্ছ নীল জল। মনে হবে যেন পানির ওপর ভাসছে না বরং নৌকাটা উড়ছে। সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা ভোলাগঞ্জ এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ভ্রমণস্পট। প্রকৃতির ছোঁয়া খুঁজতে চাইলে ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।
সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ভোলাগঞ্জের অবস্থান। যারা এক দিনের মধ্যে প্রকৃতির কাছে নিজেকে সঁপে দিতে চান, তাঁদের জন্য জায়গাটি আদর্শ। গ্রীষ্মে একটুখানি স্বস্তির খোঁজে যদি প্রকৃতির কোলে হারিয়ে যেতে চান, তবে আর দেরি নয়।
স্বচ্ছ জল, সাদা পাথর আর পাহাড়:
ভোলাগঞ্জ মূলত পাথর উত্তোলনের জন্য পরিচিত। কিন্তু এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চোখ জুড়িয়ে দেয়। ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষে ডাউকি নদীর ধারে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য সাদা পাথর। বর্ষার সময় পানি বাড়লে এই পাথরের মধ্যেই তৈরি হয় ছোট ছোট জলপ্রপাত। তখন ভোলাগঞ্জ হয়ে ওঠে একেবারে নতুন রূপে সজ্জিত।
পর্যটকেরা সাধারণত স্থানীয় নৌকা ভাড়া করে নদীর বুক চিরে ঘুরে বেড়ান। স্বচ্ছ পানির নিচে চোখে পড়ে সাদা পাথরের সারি। কিছু জায়গায় পানি এতটাই পরিষ্কার যে মনে হয়, পাথরগুলো হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে।
যাওয়ার পথ ও দরদাম:
সিলেট শহর থেকে ভোলাগঞ্জ যেতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। যেতে পারেন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বা মাইক্রোবাসে। জনপ্রতি ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ভোলাগঞ্জ পৌঁছে স্থানীয় নৌকা ঘণ্টাপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় ভাড়া পাওয়া যায়। দরদাম করে নেওয়াই ভালো।
সঙ্গে রাখুন যা যা:
> পানির ভেতর হাঁটার জন্য স্যান্ডেল বা জুতা
> মোবাইল বা ক্যামেরার জন্য ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ
> হালকা শুকনো খাবার ও পর্যাপ্ত পানি
স্থানীয় কিছু দোকানে সিলেটি খাবার পাওয়া যায়, তবে পছন্দসই খাবার নিশ্চিত করতে আগে থেকেই সঙ্গে নেওয়াই ভালো।
কিছু সাবধানতা:
ভোলাগঞ্জে পাথর উত্তোলনের কাজ চলে, তাই চলাফেরার সময় সতর্ক থাকা জরুরি। বাচ্চাদের নিয়ে গেলে সব সময় চোখের সামনে রাখতে হবে। আর ভ্রমণের সেরা সময় হলো বর্ষার পর—যখন পানি থাকে, তবে ঝুঁকি কম।