1. admin@cholojaai.com : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. b_f_haque70@yahoo.com : admin2024 :
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

পর্যটকের চোখে জাফলংয়ের সৌন্দর্য

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫

ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরামধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, অরণ্য বেষ্টিত উঁচু উঁচু টিলা, সারি সারি পর্বতমালা, ঝুলন্ত ডাউকি সেতু, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ নির্মল পানি, পাহাড়ের সঙ্গে লেগে থাকা বিশাল পাথরখণ্ড, নদীর পানিতে পড়ে থাকা পাথরের স্তুপ- পর্যটকের মনে ভাব-আবেগের এক তরঙ্গজোয়ার সৃষ্টি করে। কিছু শব্দ, বর্ণে তা বোঝানো সম্ভব নয়। যেমন কাগজের ফুলে গাছের ফুলের অনুভূতি প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশের পাহাড় থেকে দেখা যায় ভারতের পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা দৃষ্টিনন্দন ঘর-বাড়ি। ভারতের পাহাড়ে উঁচু-নিচু জায়গায় অদ্ভুতভাবে দাঁড়িয়ে আছে বাড়িগুলো। এই দৃশ্য হৃদয়ে অন্যরকম এক দোলা দিয়ে যায়। প্রকৃতি কন্যা, সৌন্দর্যের রাণী, পিকনিকস্পট, বিউটিস্পট এসব নামে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করা জাফলং দর্শণার্থীদের কাছে কল্পণার চোখে দেখা কোনো জগৎ।

জাফলং সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার অন্তর্গত পর্যটনস্থল। ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়ার জৈন্তা পাহাড়ের তলদেশে এর অবস্থান।

ঐতিহাসিকদের বর্ণনা মতে হাজার হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল এক নির্জন বনভূমি। খাসিয়ার জৈন্তা রাজারা সেখানে রাজত্ব করতো। ১৯৫৪ সালে জমিদারী প্রথার বিলুপ্তি ঘটলে তাদের এ রাজ্যের অবসান ঘটে। তারপর কয়েক বছর জাফলাং বিরান পড়েছিল। পরবর্তীতে নদীপথে পাথরব্যবসায়ীরা এখানে আসতে শুরু করে। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে নতুন জনবসতি। আশির দশকের দিকে সিলেটের সঙ্গে জাফলং এর ৫৫ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে জাফলংয়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের কথা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জাফলং ভিন্ন ভিন্ন রূপে সাজে। শীত, বর্ষার মওসুমে জাফলং নিজ সৌন্দর্য ফুটয়ে তোলে। বর্ষায় জাফলংয়ের রূপ লাবণ্য ফুটে ওঠে ভিন্ন মাত্রায়। ধূলি ধূসরিত পরিবেশ হয়ে উঠে স্বচ্ছ, নির্মল। খাসিয়া পাহাড়ের সবুজাভ চূড়ায় তুলার মতো থাকে মেঘরাজির বিচরণ। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার ফুট উপর থেকে নেমে সফেদ ঝর্ণাধারার দৃশ্য নয়ন জুড়ায় প্রতিটি সৌন্দর্যপ্রেমীর।

বর্ষায় মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের ফলে ভারত সীমান্তে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর স্রোত বেড়ে যায়। নদী ফিরে পায় প্রাণ, হয়ে ওঠে আরও মনোমুগ্ধকর। পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষকে ঘিরে জাফলং-এ আয়োজিত হয় বৈশাখী মেলা। এই মেলাকে ঘিরে উৎসবে মুখরিত হয়ে উঠে জাফলং এলাকা।

বর্ষায় পিনাইন নদীতে উপচে পড়া পানি থাকলেও শীতে পানি কমে আসে পুরোপুরি। হেঁটে পার হওয়া যায় নদীর এপার থেকে ওপার। স্বচ্ছ জল আর পাথরের মিতালি দেখতে শীতের সময়ে জাফলংয়ে বেড়াতে আসা ভ্রমণপিপাসুরা নিতে পারেন প্রকৃতির অপরূপ স্বাদ।

প্রকৃতির এমন মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই এখানে ঢল নামে হাজরো পর্যটকের। দেশি-বিদেশী পর্যটকদের পাশাপাশি প্রকৃতিপ্রেমীরাও ভিড় করতে থাকেন জাফলংয়ে। জাফলং এখন দেশের অন্যতম সেরা পর্যটন স্পট।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com