কাশ্মীর। নামটা শুনলেই শ্বেত-শুভ্র ছবির মতো সুন্দর-সাজানো একটা জায়গা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। শিল্পীর তুলির ছোঁয়ায় যেন কাশ্মীরের প্রতিটা প্রান্তই রঙিন। একে কেন ভৃস্বর্গ বলে, একবার যিনি এখানে পা রেখেছেন তিনি জানেন। কয়েনের উলটো পিঠে জঙ্গি হামলা, অশান্তি, বিচ্ছিন্নবাদের লড়াই রয়েছে ঠিকই। কিন্তু এর স্নিগ্ধতা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কেড়ে নিতে পারেনি কেউ। শ্রীনগরে এসে ডাল লেক দেখেননি এমন পর্যটক খুঁজে পাওয়াই কঠিন। কিন্তু সেই ডাল লেকের কাছেই যে মন ভাল করে দেওয়া একটি টিউলিপ গার্ডেন আছে, সেখানে কি ঢুঁ মেরেছেন?
রঙিন কার্পেট বিছিয়ে আপনাকে স্বাগত জানায় ড্যাফোডিলস। যতদূর চোখ যায় শুধুই রঙিন ফুলের শোভা। কোলাহলের শহরে টিউলিপদের আশ্রয় কেবলই ফুল মার্কেট কিংবা বাড়ির ফুলদানিতে। সাময়িকভাবে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেই দুদিন পর ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে তারা। সেইসব ড্যাফোডিলস, ব়্যানানকুলাস, টিউলিপদের প্রকৃতির কোলে প্রাণ খুলে নিশ্বাস নিতে দেখতে পাবেন এই বাগিচায়। এ দৃশ্য শুধু তো চোখকেই শান্তি দেয় না, দেয় মনকেও।
কাশ্মীর সফরে টিউলিপ গার্ডেনে যাওয়ার এটাই আদর্শ সময়। ১২ লক্ষেরও বেশি টিউলিপ দেখতে পাবেন এখানে। একরকম নয়, কম করে ৫১ রকমের টিউলিপ জাবারওয়ার উপত্যকার শোভা আরও বাড়িয়ে তোলে এ সময়। মজার বিষয় হল, গাড়ি চেপে এই বাগানের দিকে যতই এগোতে থাকবেন, ততই উপত্যকার দু’পাশে রঙিন টিউলিপ চোখে পড়বে। লাল-হলুদ-গোলাপি ফুলেদের ঘন চাদরে মোড়া পাহাড়ি উপত্যকা চুম্বকের মতোই আকর্ষণ করে পর্যটকদের।
৩০ হেক্টর এলাকা বিস্তৃত এই বাগানটিই এশিয়ার সবচেয়ে বড় টিউলিপ গার্ডেন। যদি মনে করেন কদিন পরে যাবেন, অসুবিধা নেই। কারণ সবেমাত্র ৬০ শতাংশ ফুলই ফুটেছে। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে এ রঙিন চাদর আরও ঘন হবে। ভাবুন তো, কংক্রিটের জঙ্গল ছেড়ে ডাল লেকের কাছেই ছবির মতো সুন্দর টিউলিপ গার্ডেনটি একবার ঘুরে দেখার সময়-সুযোগ যদি পান, তবে ঠিক কতটা প্রশান্তি হবে। এমন দৃশ্য অসুস্থকেও সুস্থ করে তোলার জন্য যথেষ্ট। এসব দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে বাড়ি ফিরেও তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে পারবেন।