1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ অপরাহ্ন

লাক্ষাদ্বীপ যেন আরেক ‘মালদ্বীপ’

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

দ্বীপপুঞ্জটি দেখতে ছবির মতো। আচ্ছাদিত আদিম সৌন্দর্য, ফিরোজা-নীলাভ জল আর অদূষিত সমুদ্র সৈকত—সবমিলিয়ে লাক্ষাদ্বীপকে বলা হয় আরেক মালদ্বীপ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মালদ্বীপকেও ছাড়িয়েছে লাক্ষাদ্বীপ!

আরব সাগরের এই দ্বীপটি মূলত ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। বেশিরভাগ মানুষের কাছে অচেনা বলে অনেকে একে ‘ভার্জিনদ্বীপ’ বলে থাকেন। কেরালা থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে লাক্ষাদ্বীপের অবস্থান।

৩২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটি ভারতের সবচেয়ে ছোট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। লাক্ষাদ্বীপের রাজধানীর নাম কাভারাট্টি। সমগ্র অঞ্চলটি একটি জেলা ও ১০টি মহকুমায় বিভক্ত। কাভারত্তি, কাডমট, কিলত্তন, কালপেনি, আগত্তি, আমিনি, আন্দ্রোত, চেট্টলাট, মিনিকয় এবং বিত্রা—দ্বীপগুলো নিয়েই লাক্ষাদ্বীপ গঠিত।

সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী

সপ্তম শতকে এই অঞ্চলে মুসলমানদের আগমন ঘটে এবং এখানে ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে লাক্ষাদ্বীপের দশটি দ্বীপে মানুষ বসবাস করেন। লাক্ষাদ্বীপের ৯৬ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মুসলিম। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে অঞ্চলটির জনসংখ্যা ৬৫ হাজারের মতো, তবে এখন সেই সংখ্যা ৭০ হাজারে ছাড়িয়েছে। এছাড়া হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মাবলম্বীদের বাসও রয়েছে।

লাক্ষাদ্বীপে বেশ গুরুত্ব দিয়ে রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করা হয়। এখানকার মানুষ অতি সহজ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত। মুসলিমরা দ্বীপটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও অন্যদের সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করেন এবং দ্বীপের উন্নতির জন্য একযোগে কাজ করেন।

মালায়লাম স্থানীয় ভাষা হিসাবে ব্যাপকভাবে প্রচলিত। তবে এখন ইংরেজি ও হিন্দির প্রচলন ঘটছে। দ্বীপটিতে স্বাক্ষরতার হার ৯২.২৮ শতাংশ। সেখানকার পাঠ্যক্রমে কেরালা রাজ্যকে অনুসরণ করা হয়। শিক্ষার ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে।

কৃষি কাজ, মাছ ধরা ও নারকেলের চাষ এখানকার অধিবাসীদের জীবিকা অর্জনের প্রধান মাধ্যম। তাছাড়া নারকেল সম্পর্কিত অনেক শিল্প এখানে গড়ে উঠেছে। পর্যটন শিল্পও তাদের আর্থিক উপার্জনের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে।

পর্যটনে এগিয়ে

ফিরোজা-নীলাভ জল এবং অদূষিত সমুদ্র সৈকত, প্রবাল প্রাচীর, সমুদ্রের রহস্যময় জগৎ আর জীব-বৈচিত্র যদি আপনাকে আকৃষ্ট করে তাহলে লাক্ষাদ্বীপ যেতে পারেন। শহুরে কলরব থেকে বহুদূরে অবস্থিত এই লাক্ষাদ্বীপে আপনি শুধু সমুদ্র সৈকতে আছড়ে পড়া তীব্র জল-তরঙ্গ এবং শঙ্খচিলের আর্তনাদের আওয়াজই শুনতে পাবেন।

দ্বীপপুঞ্জটিতে কিছু বিশেষ সুবিধাও রয়েছে; যেমন- স্কুবা ডাইভিং, স্নোরকেলিং, কায়াকিং, ক্যানোয়িং, উইন্ড সার্ফিং এবং ইয়াচটিং। এছাড়াও এই উপহ্রদগুলোতে নিরলসভাবে সময় কাটানো, বিভিন্ন পাখিদের পর্যবেক্ষণ এবং বাতাসের সুরে নারকেল গাছের দোল উপভোগ করার জন্য আদর্শ স্থান। এছাড়া ফিরোজা-নীলাভ জল আপনার বীচ ফটোগ্রাফিতে সাহায্য করবে।

দ্বীপে সামুদ্রিক মাছ খুব সস্তা। অন্যান্য ফলের মধ্যে তরমুজ পাওয়া যায় সারা বছর। লাক্ষাদীপের তরমুজ সাইজে খুব ছোট এবং গোলাকার। এসব তরমুজের বাহিরের রঙ ঘন সবুজ আর ভেতরের অংশ পিংক হয়ে থাকে।

বাংলাদেশিরা যেতে পারবেন?

ভারতের ভিসা থাকলেই কিন্তু এই দ্বীপপুঞ্জে যাওয়া যায় না। কেরালার রাজধানী কচি থেকে বিশেষ অনুমতিপত্র নিতে হয়, যার জন্য অন্তত দুই দিন সময় লাগে। তাই লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণে আপনি কোথায় ঘুরবেন, থাকবেন এবং খাবেন—তার সঠিক পরিকল্পনা নিশ্চিত করুন।

লাক্ষাদ্বীপে যেতে হলে আপনাকে জাহাজে বা বিমানে যেতে হবে। যাদের সমুদ্রে নানা সমস্যা হয় তাদের জন্য বিমানই ভালো। কেরালার রাজধানী কোচি (কোচিন্) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ এটি প্রায় ভারতের সব প্রধান শহরের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে।

বেশ কিছু যাত্রীবাহী জাহাজ কোচি (কোচিন্) থেকে লাক্ষাদ্বীপ পর্যন্ত চলাচল করে। এই দূরত্ব যেতে প্রায় ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা ভ্রমণ করতে হতে পারে। এই জাহাজগুলোতে বেশ আয়েশিভাবে থাকার ব্যবস্থা ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তবে বর্ষাকালে জাহাজগুলো বন্ধ থাকে।

দ্বীপপুঞ্জের বঙ্গারাম দ্বীপে বেশ কিছু উন্নতমানের রিসোর্ট ও হোটেল রয়েছে। এখানে আপনি প্রাকৃতিক উপকরণে নির্মিত এবং পরিবেশ-বান্ধব অনেক সুন্দর কটেজ দেখতে পাবেন। এছাড়াও আপনি কাভারত্তি ও অন্যান্য জায়গায় থাকার জন্য হোটেলও নিতে পারেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com