1. [email protected] : Cholo Jaai : Cholo Jaai
  2. [email protected] : admin2024 :
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন

সিকিম যেন স্বপ্নের দেশ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

অনন্য সৌন্দর্যের আঁধার ভারতের পর্যটন রাজ্য সিকিম। স্বপ্নের দেশের মতো সুন্দর এ রাজ্য ঘুরে দেখতে হাজার পর্যটক হানা দেয় এখানে। স্বপ্নরাজ্য সিকিমে আমরা ৬ জনের একটি দল ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার গাড়িতে যাত্রা শুরু করি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। আমাদের পোর্ট ছিল ফুলবাড়ি, যেটা বাংলাদেশের পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা পোর্ট। এই পোর্টে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩০০-৪০০ মানুষ যাতায়াত করে। অতএব ইমিগ্রেশনের ঝামেলা খানিকটা কম।

ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা পোর্ট পর্যন্ত প্রতিদিন মোট তিনটা বাস যায়। হানিফের নন এসি, শ্যামলী পরিবহনের (এসআর) একটা এসি ও শ্যামলী পরিবহনের (এনআর) আরএম২ এসি বাস। এছাড়া পঞ্চগড় পর্যন্ত নাবিল, এনা, হানিফ, হুন্ডাই, স্কানিয়া বিজনেস ক্লাস পাবেন। পঞ্চগড় পর্যন্ত গেলে সেখান থেকে লোকাল বাসে করে বাংলাবান্ধা যেতে সময় লাগবে ২ ঘণ্টা।

বর্ডার ক্রস করে ইন্ডিয়ান বর্ডারে প্রবেশ করার আগে বিজিবির নিকট এন্ট্রি করাতে হয়। কারো ক্যামেরা থাকলে আগে থেকে এন্ট্রি করিয়ে নিতে হবে নতুবা ফেরার সময় ঝামেলা হতে পারে। এরপর ইন্ডিয়ান বিএসেফ টমটম (বাংলাদেশের ব্যাটারি চালিত অটো) করে ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন পর্যন্ত নিয়ে যায়, সেখানে ভাড়া বাবদ জন প্রতি ১৫ টাকা দিতে হয়।

ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে টাকা রুপিতে করে সেখান থেকে টমটমে করে শিলিগুড়ি এসএনটি স্ট্যান্ড পর্যন্ত গিয়েছিলাম। সেখান থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত বুলেরো নিয়েছিলাম। শেয়ার জীপে গেলে একই বুলেরোতে ২৫০ রুপি করে নেয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে এক বুলেরোতে সামনে দুই জন আর পেছনে ৪ জন করে মোট ১০ জন বসিয়ে নেয়। তাই গাড়ি রিজার্ভ করেও নিতে পারেন।

বলে রাখা ভালো ভুলেও সেখানকার কোনো ট্রাভেল এজেন্সির সাথে কোনো রকম কন্ট্রাক্ট বা প্যাকেজে যাবেন না। জীপ ভাড়া নেবেন ড্রাইভারদের সঙ্গে দর কষা-কষি করে। কারণ শিলিগুড়ির ট্রাভেল এজেন্সিরা প্রথমে মিষ্টি কথা বলে পরে জায়গা মতো গিয়ে গলা কাটে। গাড়ি ভাড়া করার সময় বলে নিবেন র‌্যাংপোতে অনুমতির জন্য ৩০ মিনিট থামাতে, যদিও ১৫ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না, তবুও আগে থেকে কথা বলে নিবেন না হলে ওয়েটিং চার্জ কাটবে ইচ্ছেমতো। আমরা একবারে কথা বলে নিয়েছিলাম যত সময় লাগুক সেটা দেখার বিষয় না থামাতে হবে।

র‌্যাংপোতে পারমিশন সিলের সঙ্গে তারা একটা ফর্ম নিজেরাই পূরণ করে দিবে যাতে আপনাদের নাম, পাসপোর্ট নাম্বার ও ভিসা নাম্বার লিখা থাকবে এবং সিকিমে কত দিনের জন্য থাকার অনুমতি আছে সেটাও লিখা থাকবে। এক কথায় একটা অনুমতি পত্র দিবে। এটা নিয়ে কয়েকটা ফটোকপি করিয়ে নেবেন। কেননা সিকিমে এজেন্সি, সাইট সিং ও হোটেল চেকিংয়ের সময় এই অনুমতি পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে। সেখান থেকে সোজা একদম গ্যাংটক স্ট্যান্ড এ নামবেন। শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক স্ট্যান্ড (শিলিগুড়ি স্ট্যান্ডের আরেক নাম) সময় লাগবে ৪-৫ ঘণ্টা। যাত্রা পথে খাওয়ার জন্য ভালো হোটেল পাবেন, আর কিছু স্পট পাবেন সেগুলো দেখে নিবেন।

গ্যাংটক স্ট্যান্ড (শিলিগুড়ি স্ট্যান্ড ও বলে) থেকে ছোট ট্যাক্সি ৪ জনের জন্য সেগুলো হোটেল পর্যন্ত এক রেট করা ১৫০-২০০ এর বেশি না। হোটেলে চেকইন করে সেদিনই রাত ৮-৯ টার আগে ‘MG marg’ এর ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে নিবেন ইয়ামথাং ভ্যালির জন্য। গ্যাংটক টু ইয়ামথাং ভ্যালির জন্য যাওয়া-আসা, মাঝে লাচুং এ এক রাত হোটেলে থাকা, ২ টা লাঞ্চ, ১ টা ডিনার, একটা ব্রেকফাস্টসহ চুক্তি করে নেবেন। ইয়ামথাং ভ্যালি থেকে কাটাও যেতে চাইলে ড্রাইভারকে আরো ২-৩ হাজার টাকা দিলেই ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে। ইয়ামথাং ঘুরে আবার গ্যাংটকে এনে ছেড়ে দিবে, সাঙ্গু স্ট্যান্ড/ ভাজরা ট্যাক্সি স্ট্যান্ড।

সেখান থেকে লোকাল ট্যাক্সিতে করে হোটেলে আসবেন। বলে রাখা ভালো প্রথম দিন গ্যাংটকে যে হোটেলে উঠবেন সে হোটেলে লাগেজ ব্যাগ সব রেখে যেতে হবে, শুধু এক রাতের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যেতে হবে। এর জন্য এক্সট্রা চার্জ কাটে না, আর লাচুং-এ এক রাতে থাকলে প্রথম দিনের হোটেলে বলে দিলেই তারা রুম রিজার্ভ রেখে দিবে কিন্তু এক্সট্রা চার্জ কাটবে না। কারণ ইয়ামথাং এ যাওয়ার রাস্তা খুবই উঁচু-নিচু তাই লাগেজ নেয়া সম্ভব না গাড়ির ছাদে। ছোট ব্যাগ নিয়ে যাবেন। গ্যাংটকের হোটেল গুলোর এটা খুবই ভালো দিক।

ইয়ামথাং থেকে ফিরে এসে হোটেলে চেকইন করবেন, আবার ট্রাভেল এজেন্সিতে গিয়ে সাঙ্গু লেকে ঘুরে আসার জন্য কথা বলে আসবেন। যদিও আমরা যেতে পারিনি আবহাওয়া খারাপ ছিল বলে। চাইলে লোকাল ট্যাক্সি ভাড়া নিয়ে সারাদিনের জন্য (সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৫ টা পর্যন্ত) গ্যাংটক শহর সাইট সিন করতে পারেন। এক ট্যাক্সিতে ৪ জন, ভাড়া পড়বে ১২০০-১৫০০ রুপি।

খরচ

ঢাকা-বাংলাবান্ধা-৬৫০ টাকা। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে ট্রাভেল ট্যাক্স-৫০০ টাকা। পোর্ট খরচ-৫০ টাকা। এক্সট্রা খরচ-১০০ টাকা। কাস্টমস খরচ-১০০ টাকা। ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন পর্যন্ত BSF কে টমটম খরচ-১০০ টাকা। ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশনে-১০০ টাকা। ইমিগ্রেশন থেকে শিলিগুড়ি SNT স্ট্যান্ড টমটমে-৩০০ রুপি (৬জন)। SNT থেকে গ্যাংটক স্ট্যান্ড (বুলেরো জীপ) ২৩০০ রুপি (৬জন) (আরামে ৭-৮ জন বসা যায়, কষ্ট করে সর্বোচ্চ ১০ জন)। গ্যাংটক থেকে হোটেল ১৫০ রুপি লোকাল ট্যাক্সি (৪ জন)।

একদিনের হোটেল ভাড়া ১২০০ রুপি। ৬ জন ছিলাম একসঙ্গে এক রুমে। কারণ ২টা বড় ডাবল বেড ছিল এক একটায় অনায়াসে ৩ জন ঘুমানো যায়। লাচুং থেকে ইয়ামথাংভ্যালি ১৩০০০ রুপি (৬ জনের জন্য)। হোটেল থেকে সাংগু স্ট্যান্ড লোকাল ট্যাক্সি-৩০০ রুপি (৪জন)। এখান থেকেই ইয়ামথাং যাওয়ার গাড়ি ছাড়ে। গ্যাংটক স্ট্যান্ড থেকে শিলিগুড়ি ২৩০০-২৫০০ ভাড়া। শিলিগুড়ি থেকে ফুলবাড়ি বর্ডার টমটমে করে ৩০০ ইমিগ্রেশনে আবার সেই আগের মতো একই খরচ করে দেশে ঢুকে বাসে করে চলে আসবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো ক্যাটাগরি
© All rights reserved © 2024 CholoJaai
Developed By ThemesBazar.Com