উত্তর চট্টগ্রামের অন্যতম পর্যটন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে আকিলপুর সমুদ্রসৈকত। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে যাচ্ছে ভ্রমণপিপাসু লোকজন। একবার যাওয়ার পর বারবার যেতে ইচ্ছে করবে অপরূপ এই সাগরপাড়ে। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখানে। তবে এখনো রাস্তা-ঘাট ও অবকাঠামোগত তেমন উন্নয়ন হয়নি।
সাগরের ছোট ছোট ঢেউ- আর কল কল শব্দ; এখানে মিলেমিশে সৃষ্টি করেছে স্বর্গের আবহ। চারপাশের সবুজ আবহে নির্মল প্রশান্তির এক সুন্দর জায়গার নাম আকিলপুর সমুদ্রসৈকত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বেড়িবাঁধ হওয়ার কারণে বিশাল সৈকত গড়ে উঠেছে। দেখতে অনেকটা কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের মত। দক্ষিণে পরিমাণ কম হলেও উত্তরে প্রায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সমুদ্রসৈকত। এখানে বেড়িবাঁধের ব্লকে বসে অনেকে খোশ গল্প করছে, কেউ হাঁটাহাঁটি করছে। কেউ বা গিটারের তালে গান তুলছে। অনেকে সেলফি নিয়ে ব্যস্ত। নানা বয়সের মানুষ এখানে ছুটে এসেছেন। অনেকে সূর্যাস্ত যাওয়ার দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করছেন।
আরেক পর্যটক মাকসুদা আবেদীন বলেন, ‘আকিলপুর সমুদ্রসৈকত অনেক সুন্দর, না আসলে বুঝতাম না। বাচ্চারা অনেক মজা করেছে। আমাদেরও খুব ভালো লেগেছে।’
জামশেদ আলম নামে এক পর্যটক বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে সমুদ্রসৈকতে যাওয়া আসার রাস্তাটির বেহাল দশা। গাড়ি ভাড়াও বেশি। রাস্তাটি সংস্কার জরুরি। এছাড়া সমুদ্র এলাকায় তেমন উন্নয়ন হয়নি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিমতলা গ্রামের পাশে এ সৈকতের অবস্থান। শুক্রবারসহ ছুটির দিনগুলোতে যান্ত্রিকতা ভুলে একটু প্রশান্তির খোঁজে এ সৈকতে ভিড় জমায় মানুষ। একসময় এটি ছিল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস প্রবণ এলাকা। সেখানে বাঁধের সঙ্গে বসানো হয়েছে ব্লক। বাঁধের চার পাশে লাগানো হয়েছে সারি সারি গাছ, যা মানুষকে প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার উত্তরে ও ছোট কুমিরা বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে আকিলপুর সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। আকিলপুর সমুদ্র সৈকত দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে ছোট কুমিরা বাজার। সেখান থেকে রয়েছে অটোরিকশা। অটোরিকশায় সরাসরি যাওয়া যাবে আকিলপুর সমুদ্র সৈকত।
কুমিরা এলাকায় রাত্রিযাপনের জন্য একাধিক মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। হোটেল রয়েছে সীতাকুণ্ড সদরেও। এছাড়া উন্নতমানের হোটেলে থাকতে চাইলে যেতে হবে চট্টগ্রাম শহরের অলংকার কিংবা একেখান এলাকায়। জিইসির মোড়, স্টেশন রোড ও নিউমার্কেট এলাকায়ও একাধিক উন্নতমানের হোটেল রয়েছে।
দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারের জন্য কুমিরাতেই একাধিক মাঝারি মানের খাবারের হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে দু’য়েকটির বেশ সুনাম রয়েছে।