শীতের হাতছানি শুরু হয়ে গেছে। হালকা কুয়াশার দেখা মিলছে ভোরের দিকে। এই সময়ের আবহাওয়াটা সুন্দর থাকে ভ্রমণের জন্য। শীতের সময় ঘুরতে যাওয়ার মতো অনেক জায়গা রয়েছে। তবে শীত আসার আগে ভাগেই ঘুরে আসতে পারেন অপরূপ কিছু জায়গা থেকে।
শীতের আগে ঘুরে আসার জন্য বাংলাদেশে বেশ কিছু চমৎকার স্থান রয়েছে, যেখানে আপনি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। জেনে নিন কোন ৪টি জায়গায় যাবেন ভোরের নরম কুয়াশার আভা নিতে-
১. সাজেক ভ্যালি (রাঙ্গামাটি): সাজেক ভ্যালি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এর উঁচু পাহাড়, মেঘের মাঝে ভাসমান রাস্তা আর সবুজের সমারোহ এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা এনে দেয়। শীতের আগেই সাজেক ঘুরে আসা বুদ্ধিমানের কাজ, কারণ শীতের সময়ে ঠান্ডা কিছুটা বেশি হতে পারে।
সাজেকে রয়েছে প্রকৃতির অপরূপ মায়াবী সৌন্দর্য। সাজেক আসলে আপনার দেহ, মন, প্রাণ পুলকিত হবে এক বিশুদ্ধ চিন্তা আর অনুভূতিতে। মেঘের রাজ্য সাজেক – এ সাদা তুলোর মত শুভ্র মেঘ আপনাকে মুগ্ধ করবেই। সাজেক এমন একটি স্থান যেখানে একই দিনে কয়েক রকম রূপের দেখা পাবেন।
সাজেকে সূর্যোদয় দেখার সুখানূভূতি তা আপনি কখনো ভূলতে পারবেন না। সূর্যোদয়ের সাথেই শুরু হয় মেঘ পাহাড়ের লুকোচুরি খেলা। প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে রিসোর্টে বসে মেঘের খেলা দেখার আদর্শ জায়গা হল সাজেক ভ্যালী। সাজেক ভ্রমণে প্রধান আকর্ষন গুলো হল, সাপের মত আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে সাজেক আসা যা আপনাকে অন্যরকম রোলার কোষ্টারের অনূভূতি দিবে, সাজেকের সর্বোচ্ছ চূড়া কংলাক পাহাড়, সাজেকের সকাল, মেঘের খেলা, রংধনু ইত্যাদি।
শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছরির মতই সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি সাজেক ভ্যালী। সাজেকের আসলে যা যা দেখবেন, রুইলুই পাড়া, কংলাক পাড়া, হ্যালীপ্যাড, কমলক ঝর্ণা, ষ্টোন গার্ডেন, শিব মন্দির, ঝাড়ভোজ, সূর্য ঘড়ি।
২. সেন্ট মার্টিন দ্বীপ (কক্সবাজার): বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন, তার নীল জলরাশি এবং সাদা বালির সৈকত দিয়ে মনমুগ্ধ করে। শীতের আগেই গেলে আবহাওয়া থাকবে আরামদায়ক, যা সমুদ্র উপভোগের জন্য আদর্শ।
সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সেরা সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। এসময় শীতের আমেজে আবহাওয়া একেবারে অনুকুল থাকে। অন্যদিকে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ-ব্যবস্থা না থাকায় গরমের মৌসুমে ভ্রমণ খুবই কষ্টকর হয়। আর বর্ষা মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টিতে উত্তাল সমুদ্রে নামার কথা ভাবাই যায়না!
তাই শীত আসার আগে নভেম্বরের দিকে গেলে নিরিবিলি সবকিছু উপভোগ করতে পারবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, শীত মৌসুমে হোটেল ও রিসোর্টের চাহিদা বেশি থাকবে, তাই অনেক বেশি ভাড়া গুণতে হবে।
৩. রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট (সিলেট): সিলেটের রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট বাংলাদেশের একমাত্র মিঠা পানির জলাবন। নৌকায় করে জলাভূমির ভিতর দিয়ে ভ্রমণ এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়। শীতের আগে বর্ষার শেষ দিকেই এখানে গেলে পানির স্রোত এবং বনানীর সৌন্দর্য সবচেয়ে ভালো উপভোগ করা যায়।
৪. কুয়াকাটা (পটুয়াখালী): কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত। এটি এমন একটি সৈকত যেখানে আপনি একই সাথে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারেন। শীতের আগে আবহাওয়ার সামঞ্জস্য থাকার কারণে কুয়াকাটা ঘুরতে যাওয়ার আদর্শ সময়।