আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য টেক্সাস, তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জন্য বেশ বিখ্যাত। ১৮৩৬ সালে মেক্সিকো থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর টেক্সাস প্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, কিন্তু ১৮৪৫ সালে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হয়। তেল শিল্প, পশুপালন, এবং কৃষির জন্য প্রখ্যাত টেক্সাস বহুদিন ধরে আমেরিকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
অঞ্চল ও জনসংখ্যা
টেক্সাসের আয়তন প্রায় ৬৯৫,৬৬২ বর্গকিলোমিটার, যা এটি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। এখানে প্রায় ৩০ মিলিয়ন লোকের বাস। রাজ্যের বৃহত্তম শহর হিউস্টন, তারপর আসে সান অ্যান্তোনিও, ডালাস, অস্টিন এবং ফোর্ট ওয়ার্থ। প্রত্যেক শহরেই রয়েছে ভিন্ন ধরনের জীবনধারা ও সংস্কৃতির ছোঁয়া।
দর্শনীয় স্থান
টেক্সাসে ভ্রমণের সময় অনেক আকর্ষণীয় জায়গা ঘুরে দেখা যায়। যেমন:
টেক্সাসের জীবনযাত্রা
টেক্সাসে জীবন বেশ আরামদায়ক এবং স্থানীয় লোকজন বন্ধুত্বপূর্ণ। বড় শহরগুলোতে যেমন হিউস্টন, ডালাস বা অস্টিনে আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়, তেমনি গ্রামের এলাকাগুলোতে দেখা মেলে ঐতিহ্যবাহী জীবনযাত্রার। রাজ্যের অর্থনীতি প্রধানত তেল, গ্যাস, প্রযুক্তি এবং কৃষির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
বাসস্থান ও আবাসন ব্যবস্থা
টেক্সাসে বাসস্থানের খরচ তুলনামূলকভাবে কম। বড় শহরগুলোতে আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট এবং বাড়ি ভাড়া সহজলভ্য, এবং ছোট শহর বা গ্রামীণ এলাকায় আরও সাশ্রয়ী বাসস্থান পাওয়া যায়। নতুনদের জন্য, বিশেষ করে যারা কাজের জন্য এখানে আসেন, তাদের জন্য টেক্সাস একটি চমৎকার গন্তব্য।
শিক্ষা ব্যবস্থা
টেক্সাসে শিক্ষার মান অত্যন্ত ভালো। হিউস্টন ইউনিভার্সিটি, টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটি, এবং ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়াও অনেক প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি স্কুল রয়েছে যেখানে শিক্ষার গুণমান চমৎকার।
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
টেক্সাসের সংস্কৃতি হলো এক অনন্য মিশ্রণ। মেক্সিকান, দক্ষিণ আমেরিকান এবং ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে টেক্সাসের নিজস্ব রীতি-নীতি ও জীবনধারা। কাউবয় জীবনযাত্রা এবং র্যাঞ্চ সংস্কৃতি এখানকার ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
খাদ্য ও পানীয়
টেক্সাসে খাবারের একটি বিশেষ বৈচিত্র্য দেখা যায়। টেক্স-মেক্স খাবারগুলো এখানে বেশ জনপ্রিয়, যা মেক্সিকান এবং আমেরিকান খাবারের সমন্বয়ে তৈরি। বারবিকিউ, স্টেক, চিলি, এবং ফ্রাইড ফুড টেক্সাসের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে পড়ে। মেক্সিকান টাকো থেকে শুরু করে স্থানীয় বুরিটো সবকিছুই রয়েছে এখানে।
হোটেল ও রেস্টুরেন্ট
টেক্সাসে থাকার জন্য হোটেলের কোনো অভাব নেই। বড় বড় শহরগুলোতে অনেক আন্তর্জাতিক মানের হোটেল এবং রিসোর্ট আছে, যেখানে পর্যটকরা আরামদায়কভাবে থাকতে পারেন। স্থানীয় রেস্টুরেন্টগুলোতে পাবেন চমৎকার খাবার ও পানীয়, বিশেষ করে যারা মেক্সিকান এবং আমেরিকান খাবারের মিশ্রণ পছন্দ করেন তাদের জন্য।
পরিবহন ব্যবস্থা
টেক্সাসে পরিবহন ব্যবস্থা খুবই উন্নত। প্রধান শহরগুলোতে পাবলিক বাস এবং ট্রেন পরিষেবা সহজলভ্য। এছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করা খুবই সাধারণ, কারণ রাজ্যের সড়ক ব্যবস্থা বেশ চমৎকার। হিউস্টন এবং ডালাসের মতো শহরে মেট্রো সিস্টেমও রয়েছে, যা আপনাকে দ্রুত যাতায়াতের সুযোগ করে দেয়।
টেক্সাস তার বিস্তৃত স্থান, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং ঐতিহ্যবাহী জীবনধারার জন্য ভ্রমণপ্রেমীদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য।