পৌষমেলা হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে অনুষ্ঠিত একটি বার্ষিক মেলা ও উৎসব। প্রতি বছর ৭ পৌষ এই মেলা শুরু হয় এবং চলে তিন দিন ধরে। তবে দোকানিরা সারা পৌষ মাস ধরেই মেলাপ্রাঙ্গনে দোকান দিতে পারেন। এই মেলার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এপার বাংলা -ওপার বাংলার লোকসংগীতের (বিশেষত বাউল গান) অনুষ্ঠান।
শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলার এক বর্ণিল ইতিহাস আছে।ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী ১৮৯৫ সালে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শুভ উদ্বোধন করেন, যার প্রথম বছরের বাজেট ছিল সেই সময়ের মূল্যে ১৭৩২ টাকা ১০ আনা।
সময়ের হাত ধরেই ঐতিহ্য পরম্পরায় চলে আসছি এই মেলা। বছরের নির্দিষ্ট দিনেই মেলা চিরাচরিত নির্দিষ্ট নিয়মে চলত। মাঝে বিশেষ কারণেই ২ বছরের জন্য এই মেলা বন্ধ হয়। মূলত দাঙ্গা এবং মন্বন্তরের কারণে। ১৯৪৩ সালে মন্বন্তরের জন্য এবং ১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে পৌষ মেলা বন্ধ রাখা হয়েছিল। মূলত প্রতি বছর ৭ই পৌষ শান্তিনিকেতনে পৌষ উৎসব পালন করা হয়। রবীন্দ্র ঐতিহ্য ও ভাবনা অনুসরণ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা চলেছে বহু বছর ধরে। বাঙালির প্রাণের উৎসব এই পৌষমেলা। পরতে পরতে আভিজাত্যের ছোঁয়া ছিল।
বাঙালির এক আকাশ অহংকার ছিল এই মেলা। ইতিহাসগত ভাবে শান্তিনিকেতনের এই মেলার রূপকার ও প্রকৃত স্রষ্টা কিন্তু মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ৭ই পৌষ দিনটি মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের জীবনে এক অত্যন্ত স্মরণীয় পবিত্রদিন,এই সময় ছিল তাঁর দীক্ষার দিন। ১২৫০ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ অর্থাৎ ২১ ডিসেম্বর ১৮৪৩ দেবেন্দ্রনাথ মাত্র কুড়িজন অনুরাগী নিয়ে রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন। তাঁরই প্রয়াসে দুই বছরে প্রায় পাঁচশ জন ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষাগ্রহণ করেন। আনন্দিত দেবেন্দ্রনাথ পলতার পরপারে তাঁর গোরিটির বাগানে ব্রাহ্ম বন্ধুদের সবাইকে নিমন্ত্রণ করেন।
৮/৯ টি বোটে করে সকলে ওই বাগানে যায়, প্রাত:কালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মের জয়ধ্বনি আরম্ভ করে। এ ভাবেই শুরু হল পৌষমেলার শুভ সূচনা। ধীরে ধীরে শান্তিনিকেতনে ট্রাস্ট তৈরি করে ভুবনডাঙার প্রান্তে কুড়ি বিঘা জমি নেওয়া হয়েছিল। এই জমিতে গড়ে উঠেছিল শান্তিনিকেতন গৃহ এবং তৈরি হয় ব্রাহ্ম মন্দির যা উপাসনা গৃহ বা কাঁচ মন্দির নামে বর্তমানে পরিচিত। ১৮৯১ (বাংলা ১২৯৮) এ ৭ই পৌষ এই উপাসনা গৃহের উদ্বোধন হয়। এরপর ১৮৯৫ সালে ডিসেম্বর মাসে (বাংলা ১৩০২ সালের ৭ই পৌষ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইচ্ছা অনুযায়ী ব্রাহ্মমন্দির সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় মেলা। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ উপস্থিত ছিলেন সেই মেলাতে।
আশ্রমের প্রথম যুগের ছাত্র সুধীরঞ্জন দাস লিখছেন—’সাতই পৌষের দিন তিনেক আগে থাকতেই লোক সমাগম শুরু হল। কতদূর গ্রাম থেকে গোরুর গাড়িতে পসরা বোঝাই করে কত দোকানী পসারী আসতে লাগল। কত রকমের হাঁড়ী কলসী,কোনোটা বা লাল,কোনোটা বা কালো। কতো দরজা-জানালাই না জড়ো হল। দুটো তিনটে নাগরদোলা এবং একাধিক চড়কি ঘোড়দৌড়ের মঞ্চ। এক এক পয়সায় কত পাক খাওয়া যেত সেকালে।
গালার কত রকমারি জিনিস—আম আতা কলা শশা টিয়েপাখি হরিণ হাতি ও বাঁদর। তাছাড়া নানা আকারের কাগজচাপা এবং আরো কতরকম খেলনা ছিল তা বলে শেষ করা যায় না। বাঁশের ছোট বড় ছড়ি, মুখোশ, তালপাতার টুপি ও হাতপাখা তো থাকতই। হরেকরকম খাবারের দোকান, মিঠাই, মণ্ডা ও পাঁপড়ভাজা। বড়ো বড়ো বাক্সের মধ্যে কত রকমের ছবি দেখাত সামনের কাঁচবসানো বড়ো দুটো ফুটো দিয়ে আর ছবির চেয়ে রসালো হত সেই বাক্সওয়ালার সুর করে বলা বর্ণনাগুলি। কত বিক্রি হত সাঁওতালি মেয়েদের রূপোর গহনা — কানের ঝুমকো,গলার হার,খোঁপার ফুল এবং হাতের বাউটি। কত আসত তাঁতের বোনা কাপড়, বেড-কভার, গামছা। কত না থাকত মনোহারী দোকান—সামনে ঝুলত একটা করে প্রকাণ্ড আয়না, দোকানের চেহারা যাতে খোলে, আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থাও ছিল। কবির লড়াই বা যাত্রাগান শুনে শেষ রাত্রে সবাই সেই আসরেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ত। সন্ধ্যার সময় মন্দিরে উপাসনা করলেন গুরুদেব।
রাত্রে খাওয়া দাওয়ার পর ছোট ছোট দল বেঁধে এক একজন মাস্টার মশায়ের তত্ত্বাবধানে ছেলেরা বাজি পোড়ানো দেখতে গেল। তখনকার দিনে বাজি পোড়ানো হত রতনকুঠির উত্তর পুব দিকে। অনেক রাতে প্রাক্ কুটিরে ফিরে এসে হাতমুখ ধুয়ে শুয়ে পড়া গেল।’ (তথ্য—আমাদের শান্তিনিকেতন)
রবীন্দ্রনাথ যে বছর ব্রহ্মবিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন সে বছরও গুরুত্বপূর্ণ ছিল পৌষমেলা। বাউলদের গান ও নাচ সেই বার ভরিয়ে রেখেছিল মেলা প্রাঙ্গণ। তালপাতার টুপি, হাতপাখা, মুখোশ, মণ্ডা, মিঠাই, পাঁপড়ভাজা, সাঁওতালদের নৃত্য, যাত্রার আসর—পৌষমেলার অলংকার ছিল। অনেকসময় সন্ধ্যার উপাসনায় সব কলরোল ছাপিয়ে ভেসে আসত রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠে-“যো দেবোহগ্নৌ মন্ত্র।” রাতের বেলা আশ্রমের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে বাজি পোড়ানো দেখতে যেত রতনকুঠির মাঠে।
বাজির কারিগরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হত। মেলা প্রাঙ্গণে সে এক নতুন উন্মাদনা। ফুল দিয়ে সেজে উঠত উপাসনাগৃহ। বেজে উঠত হরগৌরী রাগিনী। দুপুরবেলা যাত্রাগান শুরু হত। রাত গভীর হলেই বাজির উৎসব। ৮ই পৌষ আশ্রমের প্রাক্তন ছাত্রদের উৎসব হত আর ৯ই পৌষ এক অন্যরকম দিন। আশ্রমের যেসব ছাত্র, অধ্যাপক, আশ্রমিক পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন তাঁদের শ্রদ্ধা জানিয়ে এই দিনটির উৎসব পালন হত স্মরণ উৎসব।
যে মেলার কথা না বললে বাংলার মেলা সম্পূর্ণতা পায় না, তা হল শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা। শুধুমাত্র বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত বলেই নয় বরং সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথের বাইরে সমাজ সংস্কারক রবীন্দ্রনাথের যে পরিচয়, তা এখানে বিশেষভাবে অনুভূত হয়। অনুভূত হয় বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনে মেলার গুরুত্বও।
পৌষ মেলার সূচনা হয় ১৩০২ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ (১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দ)। তবে ওই দিনটির ইতিহাস আরও ৫০ বছরের পুরনো। জানা যায় ১২৫০ সালের ৭ পৌষ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন। সেই দিনটিকে কেন্দ্র করে উৎসব ও মেলার ভাবনা ছিল দেবেন্দ্রনাথের। শান্তিনিকেতনের আশ্রম ডিডেই তার প্রমাণ মেলে। সেখানে ট্রাস্টিগণ ওই জমিতে মেলা বসানোর উদ্যোগ নেবেন বলে লেখা আছে।
এক সময় এ মেলা ভুবনডাঙার মেলা হিসেবে পরিচিত ছিল। মেলার বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান আসর বসে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশের মাঠে। ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেলে বিশ্বভারতীর অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে মেলারও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। ১৯৬১ সালে মেলা উঠে আসে পূর্বপল্লির মাঠে। এখন অবশ্য তাতেও স্থান সংকুলান হয় না, প্রকৃতপক্ষে পৌষ মেলা চলে গোটা শান্তিনিকেতন জুড়েই। ৭ পৌষ সকালে এখানে ব্রহ্মোপাসনার মাধ্যেমে মেলার সূচনা হয়। আশ্রমিকদের কথায় এটা পৌষ উৎসবের সপ্তমী। বক্তৃতা, স্মৃতিতর্পণ যেমন চলে, তেমনই চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আসেন বিভিন্ন রাজ্য ও বাংলাদেশের শিল্পীরা। থাকে বাউল-ফকিরদের গান।
এ মেলার এক বিশেষত্ব তার হস্তশিল্প ও গ্রামীণ কৃষ্টিতে। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে প্রতিটি দ্রব্যই বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ ক্ষেত্রেও বিভিন্ন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরকে আমন্ত্রণ জানানো হয় অংশ গ্রহণের জন্য। থাকে মৃৎশিল্প, ডোকরা শিল্প, বাঁশি, ডুগডুগি, একতারা। বিশ্বভারতী ও শ্রীনিকেতনের স্টলে পাওয়া যায় বই, বস্ত্র ও চর্মজাত সামগ্রী। কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে শ্রীনিকেতনের ভূমিকার নিদর্শন মেলে এই মেলায়।সরকারি ভাবে ৩ দিনের হলেও এ মেলায় বেচাকেনা চলে প্রায় পক্ষকাল ধরে। সংগঠকদের সূত্র অনুযায়ী প্রায় ১০০০-১২০০ দোকান বসে। মাটিতে বসা দোকানের সংখ্যাও প্রায় সমান। বহু ভিনদেশি পর্যটকও মেলা উপলক্ষে শান্তিনিকেতনে অস্থায়ী থাকতেই আসেন।
শেষ কথা
করোনার আবহে এবছরও মেলার আয়োজন সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বভারতী। এটা একটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা উৎসব প্রিয় মানুষের কাছে। এবছরও হবে না শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা। শনিবার একথা জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বভারতীর তরফে। তার পরই গীতবিতান মঞ্চে বিকল্প হস্তশিল্প মেলার কথা ঘোষণা করলেন স্থানীয় বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ২৩ ডিসেম্বর থেকে হবে এই মেলা। গত বছর করোনার জেরে হয়নি পৌষ মেলা। এবছরও মেলার আয়োজন সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বভারতী। মেলা আয়োজনের মতো সামর্থ্য তাদের নেই বলে দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। যার জেরে আঁধারে পৌষ মেলার ভাগ্য।
উলটো দিকে স্থানীয় হস্তশিল্পীদের সুযোগ করে দিতে গীতবিতান মঞ্চে হস্তশিল্প মেলার আয়োজন করবে রাজ্য সরকার। শনিবার মেলা প্রাঙ্গন পরিদর্শন করেন স্থানীয় বিধায়ক। ‘বোলপুরের আসেপাশের হস্তশিল্পীদের সুযোগ করে দিতে এই মেলা। পৌষ মেলা না হওয়ায় এই মেলায় ভালো ভিড় হবে বলে আশা করছে শান্তিনিকেতনের সাধারণমানুষ।’ বেশ কয়েক বছর ধরে পৌষমেলা নিয়ে নানা টানাপোড়েন চলছে। পৌষমেলায় দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে আদালতের নির্দেশে নানা ফেরবদল করতে হয়েছে। তার ওপরে মেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া নিয়ে বিবাদের জেরে শান্তিনিকেতনে উত্তেজনা ছড়ায়।
এবছরও সেই সিদ্ধান্তে অনড় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তবে এ -বার কেন মেলা বন্ধ তার কোনও কারণ বলা হয়নি। সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পৌষমেলা না হলেও, পালিত হবে পৌষ উৎসব। প্রত্যেক বছরের মতো এ -বারও ৭ পৌষ থেকে ৯ পৌষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বৈতালিক এবং উপাসনার মাধ্যমে পালিত হবে পৌষ উৎসব। সেই সঙ্গে ২৫ ডিসেম্বর পালিত হয়েছে খ্রিস্ট উৎসবও। পৌষমেলা না হলেও বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তার আয়োজক বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ। মঞ্চের সদস্যরা জানিয়েছেন,পৌষমেলার মতোই আয়োজন এই মেলায়। সব মিলিয়ে হাজার খানেক স্টল হতে চলেছে।সেইসঙ্গে পালিত হবে শিক্ষাসত্রের সমাবর্তন অনুষ্ঠান। সেই উপলক্ষে ইতিমধ্যেই আম্রকুঞ্জের জহর বেদী সাজানো হয়েছে আল্পনায়।
তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এই উৎসব হবে সীমিত সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে। ডিসেম্বর থেকে শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা হত, সেভাবেই একই দিনে ডাকবাংলো মাঠে মেলা শুরু হল । পাশাপাশি দু’টি মাঠজুড়ে বসেছে মেলা। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৮০০ স্টলটি মেলায়। মঞ্চে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের তরফে প্রায় ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক মেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। মেলায় জল, আলো ও অন্য পরিষেবা দিচ্ছে বোলপুর পৌরসভা। নিরাপত্তার দায়িত্বে বোলপুর ও শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। নজরদারি চালাতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। এই মুহূর্তেই দেশে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশ উদ্বেগজনক। কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও নতুন করে আবার তৈরি হয়েছে ওমিক্রন আতঙ্ক। এই রাজ্যেও এখনও অবধি কয়েক জনের শরীরে মিলেছে ওমিক্রন।
এই সকল পরিস্থিতির কথা বিচার করে শান্তিনিকেতনে এই বছরও হচ্ছে না পৌষমেলা। তবে খুশির খবর যে মেলা বন্ধ থাকলেও বন্ধ থাকছে না পৌষ উৎসব। প্রত্যেক বছরের মতোই ৭ই পৌষ থেকে ৯ই পৌষ বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন বৈতালিক, সানাই, উপাসনার মাধ্যমে পালিত হবে পৌষ উৎসব। এদিকে, ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসায়ী সংগঠন। একজন ব্যবসায়ীর কথায়, প্রতি বছর পৌষমেলায় স্টল দিতাম। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসতাম। খুবই স্বাদের মেলা ছিল আমাদের কাছে। প্রায় তিনবছর হতে চলল মেলা আর হয় না। স্বাভাবিক ভাবে প্রত্যেকেরই মন খারাপ। অন্যদিকে, মন খারাপ সাধারণ মানুষের। একজন বললেন, “আমরা অনেক ছোট থেকে এই মেলা দেখে আসছি। মেলা বন্ধ হওয়ায় কতটা কষ্ট হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। এখন যখন ছোটদের সঙ্গে গল্প করি খারাপ লাগে। পুরোনো স্মৃতি ফুটে ওঠে। তবে এই বছর থেকে নতুন একটি মেলা চালু হয়েছে বোলপুরে। আশা করব সেই মেলা ভালো লাগবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এই উৎসব হবে সীমিত সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে। এর পাশাপাশি রয়েছে নির্দিষ্ট পোশাক বিধি, এবং অনুষ্ঠানের স্বাস্থ্যবিধি।
তথ্যসূত্রঃ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ও আনন্দবাজার পত্রিকার আর্কাইভ