ছুটিতে অনেকেই বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন। অনেকে হয়তো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না কোথায় যাবেন? এখানে জনপ্রিয় কয়েকটি পর্যটন গন্তব্যের কথা তুলে ধরা হলো।
নেপাল
কাছের দেশ নেপাল। নেপাল ভ্রমণে আপনি কাঠমান্ডু ভ্যালীর ৭টি বিশ্ব ঐতিহ্য ঘুরে দেখতে পারেন একদিনেই। এছাড়া কাঠমান্ডু থেকে ২ ঘণ্টার যাত্রায় নাগরকোট গিয়ে স্বচ্ছ আকাশে আপনার হোটেলের জানালা থেকে দেখতে পারেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। কাঠমান্ডু থেকে ৬ ঘণ্টার বাসযাত্রা অথবা ১ ঘণ্টার ফ্লাইটে অপরূপ সুন্দর পোখারা যেতে পারেন। পোখারার সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। পোখারা থেকে হিমালয় পর্বতমালার তুষার-শুভ্র বিভিন্ন উচ্চতার পর্বতমালা সহজেই দেখা যায়। নেপাল ভ্রমণে দুর্লভ প্রাণীদের অভয়ারণ্য চিতওয়ানসহ আরো বেশ কিছু পর্যটন গন্তব্য ঘুরে দেখতে পারেন। বিশেষ আগ্রহ থাকলে গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনিও ঘুরে আসতে পারেন। অবশ্য সবই নির্ভর করছে সময় ও নির্ধারিত ভ্রমণ বাজেটের উপর।
নেপালের অভ্যন্তরের স্পটগুলো মূলত দুর্গম অঞ্চল বা দূরত্ব বিবেচনায় রেখে বিমান বা সড়কপথেই যাতায়াত করতে হয়। নেপালে যেমন র্যাডিসন হোটেল, কাঠমাণ্ডু ম্যারিয়ট, হায়াত রিজেন্সির মতো তারকা মানের হোটেল আছে, তেমনি আছে চমৎকার সব ইকোনমি স্টান্ডার্ড হোটেল। হোটেলের ভাড়াও তুলনামূলকভাবে কম। ফলে আপনি বাজেট অনুযায়ী যে কেনো হোটেল বা গন্তব্য বেছে নিতে পারেন।
ঢাকা থেকে বিমানেই যাওয়া ভালো। ১ থেকে দেড় ঘণ্টার ফ্লাইট। সম্প্রতি শিলিগুড়ি থেকে কাঠমান্ডু বিলাসবহুল বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিয়ে সড়কপথেও কাঠমান্ডু যাওয়া যায়।
থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ড বাংলাদেশীদের জন্য দারুণ জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় একটি দেশ। কারণ পর্যটক আকর্ষণে থাইল্যান্ডে আয়োজনের অভাব নেই। খাবারেও রয়েছে বৈচিত্র্য। থাইল্যান্ড ভ্রমণে যেতে পারেন ব্যাংকক ও পাতায়ার চমৎকার সব গন্তব্যে। অথবা যেতে পারেন দূরের সমুদ্র সৈকত ফুকেটে। ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়ার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এছাড়া করোনার ডাবল ভ্যাক্সিন থাকলেই হলো। ঢাকা থেকে থাই এয়ারওয়েজ ছাড়াও বিভিন্ন বিমান সংস্থার ফ্লাইট যাচ্ছে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে।
ব্যাংককে বিভিন্ন মানের হোটেলের মধ্যে জনপ্রিয় কয়েকটি হচ্ছে: চ্যাট্রিয়াম হোটেল রিভার সাইড, রয়েল অর্কিড শেরাটন হোটেল অ্যান্ড টাওয়ার, হলিডে ইন ব্যাংকক, কার্লটন হোটেল ব্যাংকক ইত্যাদি।
পাতায়ার হোটেলের মধ্যে হলিডে ইন পাতায়া, বে ব্রিজ হোটেল, বে ভিউ পাতায়া, হিলটন পাতায়াসহ বহু হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। ফুকেট ম্যারিয়ট রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, হলিডে ইন ফুকেট, দ্য উড ন্যাচারাল হোটেলসহ বিভিন্ন বাজেটের হোটেল রয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা নিতে হয়।
মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়াতে আপনি কুয়ালালামপুর ছাড়াও গেন্টিং, পেনাং, লংকাভিসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার ট্যুর প্লান করতে পারেন। কুয়ালালামপুরে গ্রান্ড মিলেনিয়াম হোটেল, সানওয়ে পুত্রা হোটেল, হোটেল সিক্স সিজনসহ বহু জনপ্রিয় হোটেল আপনার বাজেটের মধ্যেই পেয়ে যাবেন। ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, বাংলাদেশ বিমানসহ বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা করিয়ে নিন।
সিঙ্গাপুর
এশিয়ার মধ্যে আধুনিক একটি নগররাষ্ট্র সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরে সান্তোসা আইল্যান্ড, ইউনিভার্সেল স্টুডিও, জুরং বার্ড পার্ক, নাইট সাফারিসহ বহু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। হিলটন গার্ডেন ইন সিঙ্গাপুর, গ্রান্ড ক্র্যাপথন ওয়াটার ফ্রন্ট, হলিডে ইন এক্সপ্রেসসহ বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে।
ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সসহ বিভিন্ন বিমান সংস্থা নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা সাপোর্ট নিতে পারবেন।
বালি
ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন আকর্ষণীয় বালিদ্বীপ ভ্রমণে বাংলাদেশীদের জন্য সবচেয়ে বড়ো সুবিধা হলো অন এরাইভাল ভিসা সুবিধা। বালিতে বিভিন্ন ৫ তারকা থেকে ইকোনমি বিভিন্ন বাজেটের বহু হোটেল, রিসোর্ট রয়েছে। ভাড়াও তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর আকষর্ণীয় প্যাকেজ অফার করে থাকে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে বালি যেতে পারেন।
দুবাই
মধ্যপ্রাচ্যের সবচাইতে আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য দুবাইতে ঈদের ছুটি কাটাতে যেতে পারেন। এমিরেটস, এয়ার এরাবিয়া বা ফ্লাই দুবাইয়ের টিকিট ক্রয় করলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করা যায়। এছাড়া অথরাইজড ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ভিসা করিয়ে নিতে পারেন। দুবাইতে পৃথিবীর বিখ্যাত প্রায় সকল চেইন হোটেলগুলো ছাড়াও বিভিন্ন বাজেটের হোটেল রয়েছে। ভিসা, টিকেট এবং লোকাল প্যাকেজের জন্য আপনি ভালো কোনো ট্যুর অপারেটরে মাধ্যমে দুবাই ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন।