প্রকৃতির হাঁসফাঁস গরম থেকে মুক্তি পেতে দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন? গরম পড়লেই মনটা কেমন যেন পাহাড় পাহাড় করে! হিমেল স্বাদ উপভোগ করতে অনেকেই দেশের বাইরের দিকে পা বাড়ান। তবে এ বার হাতে সময় কম থাকলেও ঘুরে আসতে পারেন ভারতের হিমাচল প্রদেশের শিমলা থেকে।
ব্রিটিশদের হাতে তৈরি হিমাচল প্রদেশের রাজধানী শিমলার রূপ-রস-গন্ধ আপনাকে মুগ্ধ করবেই। ধুপি, পাইন আর দীর্ঘ টানেলের আলোআধারি পথ, চারদিকে পাহাড়ের স্নিগ্ধ রূপ, কালকা থেকে শিমলার রাস্তায় ট্রয় ট্রেনের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সারা জীবন রয়ে যাবে মনের খাতায়। শিমলা ঘুরতে হলে হাতে দু’ থেকে তিন দিন সময় থাকলেই হবে। দেখে নিন শিমলায় গিয়ে কোন কোন জায়গায় ঢুঁ মারতেই হবে।
সামার হিল: প্রায় ২ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত, সামার হিল হলো শিমলা শহরকে ঘিরে থাকা সাতটি পাহাড়ের মধ্যে একটি অংশ। দেবদারু এবং পাইন গাছে ঘেরা এই পাহাড় পটারস হিল নামেও পরিচিত। মহাত্মা গান্ধী শিমলা সফরের সময় এই শহরতলিতে অবস্থিত রাজকুমারী অমৃত কৌরের বিশাল প্রাসাদে থাকতেন। গ্রীষ্মের মৌসুমে এই অঞ্চলটি ওকস ও সিডারের ঘন এবং সবুজ বনে ঢাকা থাকে।
গ্রীষ্মেও এখানকার হিমেল আবহাওয়া মন কাড়ে পর্ষটকদের। এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়, চ্যাডউইক ঝর্না, তারা দেবী মন্দির, সঙ্কটমোচন মন্দির আর আনানডেল রেসকোর্স দেখতে দেখতে সারা দিন কীভাবে যে কেটে যাবে তা টের পাবেন না।আংলেশিয়ান ক্রাইস্ট চার্চ: শিমলার মূল আকর্ষণ সেখানকার মল। এরই শেষ প্রান্তে আংলেশিয়ান ক্রাইস্ট চার্চ। হলদেরঙা এই গির্জাটি ১৮৪৪-৫৭ সালে তৈরি হয়েছিল, নিয়ো-গথিকশৈলীতে। প্রতি সন্ধ্যায় অপরূপ আলোকমালায় সেজে ওঠে এই গির্জা। ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকেও।
কুফরি: এই মনোরম শৈলশহরটি হাইকিং এবং ট্রেকিংয়ের জন্য জনপ্রিয়। আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তা হলে এক বার এখান থেকে ঘুরে আসতেই পারেন। কুফরি নামটি এসেছে ‘কুফর’ থেকে, যার অর্থ হ্রদ। কুফরি চিড়িয়াখানা হলো বিনোদনের জন্য আর একটি জায়গা।
জাখু পাহাড়: মন্দিরগুলো হিমাচল পর্যটনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। হিমাচলকে ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনি মহাভারত এবং রামায়ণের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। জাখু পাহাড় শিমলার অন্যতম জনপ্রিয় আকর্ষণ এবং এটি হনুমান মন্দিরের জন্য পরিচিত। কথিত আছে সঞ্জীবনী বুটি সংগ্রহের সময় হনুমান এই পাহাড়েই খানিকক্ষণ বিশ্রাম করেছিলেন। হনুমানের সবচেয়ে বড় মূর্তিটি জাখু পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত শৈল শহরেই তৈরি করা হয়েছে।ফাগু: মল রোডের কোলাহল থেকে বিরতি চাইলে আপনার গন্তব্য সবুজ উপত্যকা ফাগু। চা বাগানের মাঝে ব্রিটিশ আমলের এক-দু’টি বাংলো আছে এখানে। আছে এক বৌদ্ধস্তূপ। মাঝ বরাবর বয়ে চলেছে চেল নদী। নদীর ওপর একটি ছোট্ট লোহার ব্রিজ। নদীর পাড়ে বসে টাটকা ভেজ মোমোর স্বাদ নিতে পারবেন। একান্তে সময় কাটানোর আদর্শ ঠিকানা এই উপত্যকা।